কবির রচনাশৈলীর বিশিষ্টতা: মৃদুল দাশগুপ্তের কবিতা মূলত বিষয়মুখী। কবি হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন—“কাঠ খােদাই এর সঙ্গে কবিতার তফাত আছে সর্বদাই।” এবং “আঙ্গিক কিছুটা আকাশ থেকেই নেমে আসে।”
স্তবকের গঠন : ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটিতে চারটি স্তবক আছে। প্রতি স্তবকে রয়েছে চারটি পঙক্তি, দ্বিতীয় আর চতুর্থ পক্তিতে রয়েছে। অন্ত্যমিল। শােষণ আর রক্তাক্ততা কবির মধ্যে যে আবেগের জন্ম দিয়েছে, অন্ত্যমিলের নমনীয়তায় তাই আন্তরিকভাবে তুলে ধরতে চেয়েছেন কবি।
কবিতার জবানি : সমগ্র কবিতাটি উত্তমপুরুষের জবানিতে লেখা। অশান্ত সময়ের মাঝখানে কবি নিজেকে দাঁড় করিয়ে প্রতিবাদকে প্রত্যক্ষ ও জীবন্ত করতে চেয়েছেন। আমি এবং আমার’ শব্দগুলি তাই ঘুরে ফিরে আসে কবিতায়।
কবিতার ধারা : কবিতাটির আর-একটি লক্ষণীয় গঠনগত বৈশিষ্ট্য হল প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তবক শেষ হচ্ছে প্রশ্ন বা বিস্ময়চিহ্ন দিয়ে। যেন কবি চারপাশে উত্তর খুঁজছেন। আর তা খুঁজতে খুঁজতেই শেষ স্তবকে পৌঁছে যাচ্ছেন সিদ্ধান্তে। সেখানে ঘােষণা করে দিচ্ছেন কবিতায় বিবেক জাগিয়ে রাখার অঙ্গীকার।
শব্দচয়ন : অন্যদিকে, প্রতিবাদের কবিতা হলেও শব্দ ব্যবহারের মুনশিয়ানায় অদ্ভুত একটি গীতিকাব্যিক মেজাজও আলােচ্য কবিতায় নিয়ে এসেছেন কবি। কবিতার নামই তার নিদর্শন। তাই বলা যায়, বােধের সঙ্গে, অনুভূতির সঙ্গে মিলে প্রতিবাদের ভাষা বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতায়।