কথামুখ: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে আমরা দেখি, জনৈক ভদ্রলােক পুরােনাে নাট্যশাস্ত্র ঘেঁটে শম্ভু মিত্র রচিত নাটকের নাম দিয়েছিলেন বিভাব। বিভাব’ শব্দটির অর্থ হল মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া নয়টি রসানুভূতির কারণ।
লেখকের উপলব্ধি : নিজের নাট্যভাবনা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই নামের বিরােধ খুঁজে পেয়েছেন স্বয়ং নাট্যকারই। একারণেই তার মনে হয়েছে, তাদের নাটকের নাম হওয়া উচিত অভাব নাটক। প্রবল অভাব থেকেই তাদের এই নাটকের জন্ম।
উপলব্ধির কারণ : এই নাটকে ভালাে মঞ্চ নেই, নেই আলাে বা ঝালর ইত্যাদি মঞ্যসজ্জার বিবিধ উপকরণ। থাকার মধ্যে শুধু আছে নাটক করার অদম্য আকাঙ্ক্ষা। এর ওপর রয়েছে সরকারের চূড়ান্ত অসহযােগিতাও। এত কষ্ট করে সব কিছু জোগাড় করার পর অভিনয়ের ব্যবস্থা করা হলেও উঠে আসে খাজনার দাবি। পেশাদারি মঞ্চকে যে খাজনা দিতে হয় না, গ্রুপ থিয়েটারকে তা দিতে হয়। সরকারের এই বিমাত্সুলভ দৃষ্টিভঙ্গিকে তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করে নাট্যকার এরপর নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান—“…আমরা তাে নাটক নিয়ে ব্যবসা করি না, তাই সরকার আমাদের গলা টিপে খাজনা আদায় করে নেন।”
শেষের কথা : এই চূড়ান্ত প্রতিকূলতায় গ্রুপ থিয়েটারের পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানাে অনেক সময়েই সম্ভব হয়ে ওঠে না। গ্রুপ থিয়েটারের প্রবল অভাবের এই চিত্রই ‘বিভাব’ নাটকে প্রকাশ পেয়েছে।