শুরুর কথা: শম্ভু মিত্র তাঁর ‘বিভাব’ নাটকে শুধু প্রচলিত নাট্যরীতিরই বদল ঘটাননি, সেই সঙ্গে তার নিজের নাট্য বিষয়ক ভাবনারও প্রকাশ ঘটিয়েছেন। নাটকের সূচনায় শম্ভু মিত্র নিজেই অন্য ধারার নাটকের অভিনয়ে নানা অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলেছেন।
প্রতিবাদী ভূমিকা : সারাজীবনই একটা নিজস্ব মঞ্চের আকাঙ্ক্ষা পােষণ করেছেন শঙ্কু মিত্র- “নিজেদের একটা মঞ্চ থাকবে, যেখানে মনের সাধে নানা রকম প্রয়ােগকৌশল পরীক্ষা করা যাবে।” অন্য ধারার নাটকের কাছ থেকে সরকারের কর আদায়, অথচ পেশাদারি থিয়েটারকে করমুক্ত রাখার বিরুদ্ধেও বিভাব নাটকে প্রতিবাদী ভূমিকায় দেখা যায় শম্ভু মিত্রকে।
দর্শকের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব : আপাতভাবে হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার যে অভিপ্রায় নিয়ে নাটকের সংলাপ শুরু হয়েছে, তার সঙ্গে বক্স অফিসের চাহিদাকে জুড়ে দেওয়া হয়। নাটকের গুণগত মানের থেকে দর্শক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়ার যে প্রয়াস নাট্যাভিনয়ে দেখা যায়, তাকেই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
নাট্যকারের শিল্পদর্শন : কেবল হাসির খােরাক হিসেবে জীবনকে দেখা, মানুষের সমস্যাকে উপলদ্ধি না করা ইত্যাদি শম্ভু মিত্রের শিল্পদর্শন ছিল না। তিনি নিজেই লিখেছেন- “শিল্প মানুষের বােধের একটা হাতিয়ার।”
শেষের কথা : নাট্যকাহিনির শেষে খাদ্য ও বস্ত্রের দাবিতে এগিয়ে আসা মিছিলের ওপরে পুলিশের নির্বিচারে গুলিচালনা দেখে যখন নাট্যকার বলেন, “এবার নিশ্চয়ই লােকের খুব হাসি পাবে?”—তখন নাট্যকারের বােধ, মধ্যবিত্তের সস্তা মানসিকতাকে আঘাত করার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণতা পায়।