উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সমস্যাপূরণ’ গল্পটিতে কৃষ্ণগোপাল সরকার জ্যেষ্ঠপুত্রের প্রতি জমিদারি এবং সংসারের ভার দিয়ে কাশী যাত্রা করলেন। অত্র অঞ্চলের সব অনাথ- দরিদ্রলোক তার জন্য হাহাকার করে উঠল। তার বদান্যতা এবং ধর্মনিষ্ঠাকে সবাই প্রশংসা করতে থাকে। বিপিনকে আক্রমণ করে অছিমদ্দি কাঠগড়ায় বিচারের মুখোমুখি হয়। কৃষ্ণগোপাল এ সংবাদ জানতে পেরে কাশী থেকে চলে আসে এবং অছিমদ্দির যেন কোনো শাস্তি না হয় ও তার সব সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের বাইরে পিতার চলে আসা এবং অছিমদ্দির জন্য পিতার এ দরদ দেখে বিপিন অস্থির হয়ে পড়ে। বিপিন তার পিতার কাছে কারণ জানতে চায়; উত্তরে কৃষ্ণগোপাল বলে অছিমদ্দি যবনীর গর্ভে জন্ম নেয়া তারই ঔরসজাত সন্তান এবং বিপিনেরই ভাই। পরবর্তীতে অছিমদ্দি তার পূর্বের অবস্থা ফিরে পায়। এতদিন পরে উকিল রামতারণ বুঝতে পারে কৃষ্ণগোপাল কেন তাকেও লেখাপড়া শিখিয়েছিল। আসলে কৃষ্ণগোপালের বাইরের মুখোশ এবং ভিতরের মুখোশ এক নয়। তিনি তার ভণ্ডামিকে ঢাকবার জন্য বাইরে একটি আবরণ তৈরি করে রাখেন- যাতে তার প্রকৃত অবস্থা কারো কাছে ধরা না পড়ে। তাই রামতারণ শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, “সংসারে সাধু-অসাধুর মধ্যে প্রভেদ এই যে, সাধুরা কপট আর অসাধুরা অকপট।”