অথবা, অচিন পাখির রূপ আত্মার পরিচয় দাও

উত্তর: বাউলের সাধনা দেহকেন্দ্রিক। এই দেহের মধ্যেই পরমপুরুষ বা মনের মানুষের অবস্থান। এই মনের মানুষের সন্ধান লাভ বাউল সাধনার প্রধানতম লক্ষ্য। লালন শাহ প্রচলিত ধর্মের পথ ছেড়ে বাউল সাধন তত্ত্বের উপর নির্ভরশীল হয়ে মানব শরীরের ভিতরে মনের মানুষ রূপ সৃষ্টিকর্তার সন্ধানে সারাজীবন সাধনা করেছেন। তাঁর গানে এই মানবদেহ ‘খাঁচা’ নামে অভিহিত হয়েছে। পাখির খাঁচায় যেমন পাখি আসে যায়, অস্থির মতি পাখির মন টেকে না; তেমনি মানবদেহ রূপ খাঁচায় অচিন পাখিরূপ আত্মাও যেন মন বসায় না। কবি এখানে সেই আত্মার স্বরূপ সন্ধান করেছেন। তিনি দেহের মধ্যে একদিকে যেমন মনের মানুষরূপী ঈশ্বরকে খুঁজেছেন অচিন পাখির রূপকে, অন্যদিকে তেমনি দেহের বিশ্লেষণও করেছেন। কবি এখানে বলেছেন মানবদেহ রূপ খাঁচায় অচিন পাখি রূপ আত্মা কিভাবে আসা যাওয়া করে। তিনি সেই আত্মাকে ধরতে পারলে তার পায়ে। মন-বেড়ী দিতেন। অর্থাৎ পরমাত্মা বা মনের মানুষের সাহচর্য লাভের জন্য তাঁর মন ব্যাকুল।

বাউল সাধকের চিরন্তন কামনাই যেন এখানে বর্ণিত হয়েছে।