অথবা, চণ্ডীদাসের ১৬৫ নং পদাবলম্বনে রাধার প্রেমানুভূতির পরিচয় দাও
উত্তর: অভিসার সাজসজ্জায় দুর্নিবার পথ পরিক্রমায় লীলাময়ী যে রাধাকে বিদ্যাপতি বা গোবিন্দদাস চিত্রিত করেছেন চণ্ডীদাসের প্রেমাকুলা অভিসারিকা রাধা তার থেকে একেবারেই স্বতন্ত্র। চণ্ডীদাসের রাধা অভিসার যাত্রায় ব্যাকুল হলেও অফুরান গৃহকাজে পিঞ্জরাবদ্ধ। এ কবিতাংশে ঘরে গুরুজন ননদী দারুন। বিলম্বে বাহির হৈনু। আহা মরি মরি সঙ্কেত করিয়া কত না যাতনা দিনু। রাধা তার সখীকে বলছে যে ঘোর রজনীতে মেঘের মধ্যে কৃষ্ণ এসে তার বাড়ির আঙিনাতে অপেক্ষা করছে। কিন্ত ঘরে গুরুজন রয়েছে এবং রাধার ননদী ভীষণ কড়া; এ কারণে রাধার বাড়ি হতে বের হতে বিলম্ব হচ্ছে। কৃষ্ণকে নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করতে বলে রাধা যেন তাঁকে যন্ত্রণা দিয়েছে। কারণ সে নির্দিষ্ট সময়ে বের হতে পারছে না। রাধা মনে করে পুণ্যফল গুণে সে কৃষ্ণের মতো বন্ধু পেয়েছে। বাড়ির আঙিনায় বৃষ্টির মধ্যে কৃষ্ণ তার জন্য প্রতীক্ষারত, কিন্তু সে যেতে পারছে না। কৃষ্ণের দুঃখ দেখে রাধার মন কেমন করে। অফুরান গৃহকাজে ব্যস্ত রাধার দেরি দেখে কৃষ্ণ নিজেই দেখা দেয়। তখন সব বাধা জলাঞ্জলি দিয়ে রাধাকে বেরোতে হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে এসে একথাই বলা বাহুল্য যে রাধা কৃষ্ণের প্রেম এক অমর সত্য। সুতরাং কৃষ্ণের প্রেমেই রাধা ব্যাকুল। তাই শত বাধা বিপত্তির মধ্যেও উভয়ের মিলন ঘটে।
Leave a comment