অথবা, বৈষ্ণব পদাবলীতে বিধৃত পাত্রপাত্রীর সংক্ষেপে তুলে ধর
উত্তর : আদিতে বিধাতা এক ছিলেন। তিনি নিঃসঙ্গতা দূর করতে নিজ অংশ থেকে নারী স্বরূপাকে সৃষ্টি করে যুগল হলেন। এভাবেই পুরুষ-প্রকৃতি, মায়া-ব্রহ্ম এবং বিষ্ণু-শ্রী তত্ত্বের উদ্ভব হলো। পুরুষ-প্রকৃতির তথা নারী-পুরুষের মিলনেই সৃষ্টির উদ্ভব। তাঁদের সম্পর্ক প্রেমও। সৃষ্টি স্রষ্টার আনন্দ সহচর। যেখানে স্রষ্টার সঙ্গে মানুষের আনন্দের তথা প্রণয়ের সম্পর্ক সেখানে নিয়ম-রীতির ব্যবধান থাকতে পারে না। অনুরাগে প্রেমের উন্মেষ, বিরহে উপলব্ধি, মিলনেই সার্থকতা। প্রেমিক এবং প্রেমাস্পদ পরস্পর পরস্পরকে আত্মস্থ করতে আকুল হবে। এ প্রেম জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার। বিন্দু বিন্দু পানি নিয়ে সমুদ্র। বিন্দুর একক শক্তি অতি তুচ্ছ। তাই সমুদ্রের জন্য তার ব্যাকুলতা। অনুরূপভাবে বিন্দুস্বরূপ জীবাত্মা পরমাত্মার জন্য ব্যাকুল। এ ব্যাকুলতার জন্যই জীবাত্মা প্রেমিকা তথা রাধা। জীবাত্মা বাদ দিয়ে পরমাত্মার লীলা হয় না। সুতরাং বৈষ্ণব পদাবলীতে ভগবান ও মানুষ তথা পাত্রপাত্রীর মধ্যে সম্পর্ক হচ্ছে গোপীভাবে সাধনা করা। এখানে গোপী গুরু জীব তথা মানুষ শিষ্য।
Leave a comment