What is Remand?
আজকাল আমাদের দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের মুখে যে ভয়াবহ শব্দটির কথা বেশি শুনা যায় তার নাম হলো ‘রিমান্ড’ !!
এ শব্দটি ফৌজদারি মামলার জন্য আসামির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর দুটি ধারায় ‘রিমান্ড’ শব্দের কথা উল্লেখ থাকলেও কিন্ত কার্যবিধির কোথাও রিমান্ড শব্দটির সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। ধারা দুটি হল- ১৬৭ ও ৩৪৪।
ধারা নং ১৬৭ তে রিমান্ড বিষয়ে বলা হয়েছে- একজন ব্যক্তি পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কার্য সমাপ্ত না হলে এবং ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বস্তুনিষ্ঠ বিবেচিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিকটবর্তী আদালতের ক্ষমতাসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিমান্ড প্রার্থনা করতে পারেন যা একসঙ্গে ১৫ দিনের অধিক হবে না।
ধারা নং ৩৪৪-এ রিমান্ড বিষয়ে বলা হয়েছে- আসামির অপরাধ সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য পাওয়ার পর যদি প্রতীয়মান হয় রিমান্ডের মাধ্যমে অধিকতর সাক্ষ্যপ্রাপ্তি সম্ভব, সেক্ষেত্রে একটি মামলার তদন্ত বা বিচার চলাকালীন আদালত একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করতে পারেন।
ধারা নং ১৬৭-এর অধীন রিমান্ডের ক্ষেত্রে পুলিশি হেফাজত হতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপনপূর্বক রিমান্ড চাওয়া হয়।
অপরদিকে ধারা নং ৩৪৪-এর রিমান্ডের ক্ষেত্রে একজন আসামি বিচারিক হেফাজতে থাকাকালীন আদালতের কাছে রিমান্ড চাওয়া হয়। একজন আসামির আদালতের নির্দেশনায় কারাগারে অবস্থানকে বিচারিক হেফাজত বলা হয়।
ধারা নং ৩৪৪-এ আদালত বলতে ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়রা আদালতগুলোকে বোঝানো হয়েছে।
ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুযায়ী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকার কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতীত অপর কোনো ম্যাজিস্ট্রেট রিমান্ড আদেশ প্রদানের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত নন। উল্লেখ্য, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সবসময় একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে থাকেন।
ইংরেজি ‘রিমান্ড’ (Remand) শব্দটির অর্থ আসামিকে পুলিশি হেফাজতে পুনঃপ্রেরণ। রিমান্ড (REMAND), বাংলায় অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু আইনি ভাষায় ‘পুলিশ হেফাজতে আটক’ রাখা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শব্দার্থ যেটাহোক ,কিন্ত ‘রিমান্ড’ আসলে কী ও কেমন, এটা একমাত্র ভুক্তভোগী ব্যক্তি বা পরিবার ছাড়া কেউ বুঝতে পারেনা।
প্রকৃতপক্ষে এখানে কর্তার ইচ্ছায় কর্ম সম্পাদন হওয়া আর বাকিরা সবাই নীরব দর্শক!
বাংলাদেশের পুলিশের রিমান্ডের ধরণ:
রিমান্ডে নেয়া আসামিদের ১৪ ধরনের নির্যাতন করা হয়।
সেগুলোর মধ্যে গিটা নির্যাতন, বাদুড় ধোলাই, ওয়াটার থেরাপি, উলঙ্গ করে নির্যাতন, সারাদিন না খাইয়ে নির্যাতন, টানা নির্যাতন, বাতাস নির্যাতন, বোতল থেরাপি, ডিম থেরাপি, ডিস্কো ডেন্স নির্যাতন, সেলাই নির্যাতন, ঝালমুড়ি নির্যাতন উল্লেখযোগ্য। আসামিদের হাত-পায়ের প্রতিটি জয়েন্টে লাঠিপেটা করার নামই হলো গিটা নির্যাতন। এ নির্যাতনের ফলে হাড়-মাংস থেঁতলে যায়। কিন্তু বাইরে থেকে কিছুই বোঝা যায় না। চিত করে ফ্লোরে ফেলে দুই হাত, দুই পা বেঁধে মুখে গামছা বা কাপড় ঢুকিয়ে পানি ঢেলে মারধর করাকে বলা হয় ওয়াটার থেরাপি। নাকে-মুখে পানি দিতে থাকলে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পরে আসামিরা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে তথ্য দিতে থাকে। দু’টি উঁচু টেবিলের মাঝখানে দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানোকে বলা হয় বাদুড় ধোলাই। এ রকমের নির্যাতন করলে যেকোনো আসামি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। গরম বা প্রচন্ড ঠান্ডা ডিম আসামিদের মলদ্বারে ঢুকিয়ে নির্যাতন করাকে বলা হয় ডিম থেরাপি। এ নির্যাতেনের ফলে আসামির মলদ্বার ফুলে যায় এবং অনবরত রক্ত পড়তে থাকে। যতক্ষণ আসামিরা স্বীকারোক্তি না দেয় ততক্ষণ মলদ্বারে ডিম ঢুকাতে থাকে। পরে বাধ্য হয়ে স্বীকারোক্তি দেয়। হাত-পায়ে অবিরাম ইলেকট্রিক শক দেয়াকে বলা হয় ডিস্কো ডেন্স থেরাপি। হাত-পায়ের নখে মোটা সুই ঢুকানোকে বলা হয় সেলাই নির্যাতন। সুই ঢোকানোর পর হাত-পায়ের নখগুলো ফুলে যায়। চোখ-মুখও নাকে শুকনো মরিচ লাগানোকে বলা হয় ঝালমুড়ি নির্যাতন। সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে নির্যাতন করাকে বলা হয় বাতাস নির্যাতন। (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)
গ্রেফতার ও রিমান্ড সম্পর্কে ফৌজদারী কার্যবিধির ৬১ এবং ১৬৭(২) ধারায় যা বলা হয়েছে তা নিম্নরুপ : ধারা ৬১-গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আটক রাখা যাবে না।
১৬৭ ধারা অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ আদেশ না থাকলে এরুপ আইনের সময় গ্রেফতারের স্থান থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যাওয়ার সময় বাদ দিয়ে ২৪ ঘন্টার বেশি হবে না। ধারা ১৬৭(২)-২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করা না গেলে তখনকার পদ্ধতি :
(১) যখনই কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হেফাজতে আটক রাখা হয় এবং প্রতীয়মান হয় যে, ৬১ ধারায় নির্ধারিত ২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করা যাবে না এবং এরুপ বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, অভিযোগ বা সংবাদ দৃঢভিত্তিক, তা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার বা তদন্তকারী পুলিশ অফিসার, তিনি যদি সাব-ইন্সপেক্টর পদের নিম্নপদস্থ না হন, অবিলম্বে অতঃপর নির্ধারিত ডায়েরিতে লিখিত ঘটনা সম্পর্কিত তথ্যের নকলসহ আসামিকে নিকটতম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ করবেন। (২) এই ধারা অনুসারে আসামিকে যে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ করা হবে, তার সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার করার অধিক্ষেত্রে থাকুক বা না থাকুক, তিনি তার বিবেচনামতে আসামিকে উক্তরুপ হেফাজতে আটক রাখার জন্য বিভিন্ন সময়ে কর্তৃত্ব প্রদান করবেন, তবে এরুপ আটকের মেয়াদ সর্বমোট ১৫ দিনের অধিক হবে না। মামলাটি বিচার করার অথবা বিচারার্থে পাঠানোর অধিক্ষেত্রে যদি তার না থাকে এবং তিনি আরো আটক রাখা অপ্রয়োজনীয় মনে করেন, তা হলে তিনি আসামিকে এইরুপ অধিক্ষেত্র সম্পন্ন ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে প্রেরণের আদেশ দিতে পারিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তৃতীয় শ্রেণীর কোনো ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক এ বিষয়ে বিশেষভাবে ক্ষমতাবান নন, এইরুপ কোনো দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পুলিশের হেফাজতে আটক রাখার কর্তৃত্ব দেবেন না।
‘রিমান্ড’-এ থাকাবস্থায় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশি আচরণ সম্পর্কে ২০০৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট নিম্নবর্ণিত চারটি দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন
(ক) কাচের দেয়াল সম্পন্ন একটি কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। (খ) জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে অভিযুক্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। (গ) প্রতিবার রিমান্ডের মেয়াদ তিন দিনের বেশি হবে না। (ঘ) কাচের দেয়াল নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আসামির আইনজীবি ও আত্মীয়স্বজনদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
প্রকৃতপক্ষে পুলিশ রিমান্ড কি?
কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলে পুলিশ অফিসার সেই ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার ওপর তার হেফাজতে রাখতে পারবেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামীকে শারীরিকভাবে বিচারকের সামনে হাজির করতে হবে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছে কিনা সেটাও আসামী বিচারককে বলতে পারবেন।
তখন বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতের বদলে বিচারিক হেফাজতে সোপর্দ করবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তিনি বিচারকের তত্ত্বাবধানে কারাগারে থাকবেন।
এখানে দু’টি ঘটনা ঘটতে পারে।
১। আসামীর আইনজীবী এই মর্মে দরখাস্ত করতে পারেন যে, তার মক্কেল নির্দোষ। সুতরাং তাকে জামিন দেয়া হোক।
২। পুলিশ সেই জামিনের বিরোধিতা করতে পারে। যদি বিচারক মনে করেন যে, তাকে পুলিশ হেফাজতে দেয়া দরকার, তাহলে তিনি সেই মর্মে নির্দেশ দেবেন। কিন্তু একই সাথে এ নির্দেশও দেবেন যে, তার আর কোনো শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। এটাকেই বলা হয় রিমান্ড।
১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্টসহ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা রিমান্ড প্রশ্নে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। এটি করা হয় সন্দেহজনক গ্রেফতার সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা এবং রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারার অপব্যবহার চ্যালেঞ্জ করে। ২০০৩ সালের ২৭শে এপ্রিল হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ঐ দু’টি ইস্যুতে প্রচলিত আইন সংশোধনের নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশনা আপিল বিভাগ স্থগিত করেনি। হাইকোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়,
১। আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না।
২। কাউকে গ্রেফতার দেখানোর সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে।
৩। গ্রেফতারের কারণ একটি পৃথক নথিতে পুলিশকে লিখতে হবে।
৪। গ্রেফতারকৃতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলে তার কারণ লিখে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারি সনদ আনবে পুলিশ।
৫। গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে পুলিশকে।
৬। বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো স্থান থেকে যদি কাউকে আটক করা হয় তাহলে আটক ব্যক্তির নিকট আত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে।
৭। আটক ব্যক্তিকে তার পছন্দসই আইনজীবী ও নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে।
৮। জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে কারাগারের কাঁচনির্মিত বিশেষ কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবেন।
৯। কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া না গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে সর্বোচ্চ তিনদিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।
১০। জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ঐ ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করতে হবে।
১১। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবেন। বোর্ড যদি বলে, ঐ ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাকে দ-বিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।
১২। পুলিশ হেফাজতে বা কারাগারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাতে হবে।
১৩। পুলিশ বা কারা হেফাজতে কেউ মারা গেলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে তা তদন্তের ব্যবস্থা করবেন। মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তে বা তদন্তে যদি মনে হয়, ঐ ব্যক্তি কারা বা পুলিশ হেফাজতে মারা গেছে তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট মৃত ব্যক্তির আত্মীয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা তদন্তের নির্দেশ দিবেন।
এই ১৩ দফাই হলো রিমান্ডের ব্যাপারে হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা। এসব নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ হয়নি, অথবা আপিল বিভাগ এসব নির্দেশনা বাতিল বা সংশোধন করেনি।
সুতরাং সন্দেহাতীতভাবে এই ১৩ দফাই হলো আজ পর্যন্ত বহাল রিমান্ডের নির্দেশনা। কিন্তু লজ্জার বিষয় হলেও সত্যি কথা হচ্ছে, এইগুলা শুধু পুস্তকেই লিপিবদ্ধ। পুলিশ তার নিজের গতিতে চলতেছে আর আইন চলতেছে মানুষের গতিতে।
Leave a comment