বীজগনিত বা পাটিগণিতে পরিসংখ্যান বা Statistics অধ্যায়ে বা তথ্য উপাত্য অধ্যায়ে গড় বা গাণিতিক গড় কি, কাকে বলে বা গড় করার নিয়ম সম্পর্কে ভয় ও বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়। কিভাবে সমাধান করবো, গড় ও গাণিতিক গড় নির্ণয়ের পদ্ধতি কি একই? সংক্ষিপ্ত ও সহজ পদ্ধতিতে কিভাবে গড় নির্ণয় করতে হয়? এমন নানান প্রশ্ন দেখা দেয় ছাত্র ছাত্রীদের মনে। ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম থেকে শুরু করে এইচএসসি বা ১১-১২ শ্রেণি এমনকি অনার্স মাস্টার্স লেভেলেও গড় বিষয়টি খুবি গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনা গড় সম্পর্কে বিস্তারিত। সহজ, সংক্ষিপ্ত ও কৌশলগত মজার পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিষয়টি এমন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, আশাকরি সকলে গড় সম্পর্কে না বুঝে আর থাকবো না .

গড় কাকে বলে?

বিভিন্ন রাশির সমষ্টি বা যোগফলকে উক্ত রাশিগুলোর মোট সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যাবে, তাকে ঐ রাশি বা সংখ্যাগুলোর গড় (average) বলে। গড় বলতে সাধারণত গাণিতিক গড়কেই বোঝায়।


গাণিতিক গড় (Arithmetic average) হলো একাধিক সংখ্যা বা রাশির সকল মানকে প্রতিনিধিত্বকারী একটি একক মান।

উদাহরণস্বরুপ, সুমন এর বয়স ২৮ বছর। ইমামের এর বয়স ৩২ বছর এবং জাহাঙ্গীরের বয়স ২৭ বছর। তাহলে এই তিনজনের মোট বয়স = ২৮+৩২+২৭ = ৮৭ বছর। সুতরাং উক্ত তিনজনের বয়সের গড় = মোট বয়স (৮৭) ÷ মোট মানুষ (৩)।

বা, গড় = ৮৭÷৩ = ২৯

তাহলে, সুমন, ইমাম ও জাহাঙ্গীরের বয়সের গড় ২৯ বছর।

গড় নির্ণয়ের সূত্র

১. ছক বিহীন তথ্যের গড়(Average) বা গাণিতিক গড় নির্ণয়ের সূত্রটি হলো-

গড় (Average)বা গাণিতিক গড় = রাশিসমূহের সমষ্টি ÷ রাশির সংখ্যা।

উদাহরণঃ ৩০, ১৫, ১০, ৩৫, ১০ তথ্য বা ছক বিহীন তথ্য গুলোর গড় = (৩০ + ১৫ + ১০ + ৩৫ + ১০)/৫ = ১০০/৫ = ২০

২. গুরুত্ব যুক্ত তথ্যের গড় বা গাণিতিক গড় নির্ণয়ের সূত্র হলো-

গড়(Average) বা গাণিতিক গড় = (তথ্য x গনসংখ্যর সমষ্টি) ÷ গনসংখ্যা।


৩. ছকে থাকা শ্রেণী যুক্ত তথ্যের গড়(Average) নির্ণয়ের সূত্র হলো-

গড়(Average) বা গাণিতিক গড় = (গণসংখ্যা x মধ্যমানের সমষ্টি) ÷ গণসংখ্যা।

অর্থ্যাৎ,


যেখানে, 

n = গণসংখ্যা

fi = i তম শ্রেণির গণসংখ্যা

xi = i তম শ্রেণির মধ্যমান

৪. সংক্ষিপ্ত বা সহজ পদ্ধতিতে গড়(Average) নির্ণয়ের সূত্র – 

ছকে থাকা শ্রেণী যুক্ত তথ্যঃ

মধ্যক নির্ণয়ের সূত্র

৫. ছক বিহীন এবং যদি উপাত্ত সংখ্যা জোড় হয় তবে

মধ্যক = (n/2 তম পদ + [n/2+1] তম পদের যোগফল)÷2

যেখানে,

n = গণসংখ্যা

৬. ছক বিহীন এবং যদি উপাত্ত সংখ্যা বিজোড় হয় তবে

মধ্যক = (n+1)/2 তম পদ

৭. ছকযুক্ত শ্রেণিবিহীন উপাত্তের ক্ষেত্রে যখন n জোড় সংখ্যা

প্রথমে ছকের মাধ্যমে ক্রমযোজিত গণসংখ্যা বের করে নিতে হবে

মধ্যক = (n/2 তম পদ + [n/2+1] তম পদের যোগফল)÷2

যেখানে,

n/2 তম পদ = n/2 সংখ্যাটি ক্রমযোজিত সংখ্যার যে শ্রেণিতে অবস্থিত সেই শ্রেণির মান

[n/2+1] তম পদ = n/2+1 সংখ্যাটি ক্রমযোজিত সংখ্যার যে শ্রেণিতে অবস্থিত সেই শ্রেণির মান

৮. ছকযুক্ত শ্রেণিবিহীন উপাত্তের ক্ষেত্রে যখন n বিজোড় সংখ্যা

মধ্যক = (n+1/2) সংখ্যাটি ক্রমযোজিত সংখ্যার যে শ্রেণিতে অবস্থিত সেই শ্রেণির মান

৯.

প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র

১০.

অন্যান্য সূত্র

 

১১. পরিসর = (সর্বোচ্চ সংখ্যা – সর্বনিম্ন সংখ্যা) + ১

১২. শ্রেণিসংখ্যা= শ্রেণি পরিসর/ শ্রেণি ব্যাপ্তি

১৩. শ্রেণি ব্যবধান = উচ্চ সীমা – নিম্ন সীমা

সরাসরি গড় নির্ণয়ের সূত্র

গড় = রাশির সমষ্টি / রাশির সংখ্যা |

মধ্যক নির্ণয়ের সূত্র কি

মধ্যক= L+(n/২-Fc)h/fm

পরিসর নির্ণয়ের সূত্র কোনটি

পরিসর = (সর্বোচ্চ সংখ্যা – সর্বনিম্ন সংখ্যা) + ১
এই একটি সূত্র দিয়েই সকল ধরনের পরিসর নির্ণয় করা সম্ভব। কোনো একটি উপাত্তের যতগুলো তথ্য আছে, সবগুলো তথ্য থেকে সর্বোচ্চ মান ও সর্বনিম্ন মানের পার্থক্যের সাথে ১ যোগ করলেই পরিসর পাওয়া যায়।

শ্রেণি সংখ্যা নির্ণয়ের সূত্র কোনটি

শ্রেণিসংখ্যা= শ্রেণি পরিসর/ শ্রেণি ব্যাপ্তি।

পরিসংখ্যানে শ্রেণী সংখ্যা কি

পরিসংখ্যানে, একটি শ্রেণী হল মানগুলির একটি গ্রুপিং যার দ্বারা একটি ফ্রিকোয়েন্সি বন্টনের গণনার জন্য ডেটা বাইন করা হয় |

গোষ্ঠীবিহীন তথ্যের শ্রেণী ব্যবধান নির্ণয়

শ্রেণি ব্যবধান নির্ণয় করতে, শ্রেণির নিম্ন সীমাটি উপরের সীমা থেকে বিয়োগ করা হয়। শ্রেণি ব্যবধান সূত্রটি নিম্নরূপ দেওয়া হয়েছে: শ্রেণি ব্যবধান = উচ্চ সীমা – নিম্ন সীমা ।

পরিসংখ্যান এর জনক কে

ভারতে পরিসংখ্যানের জনক বলে খ্যাত প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ ইংরেজি ‘Statistics’ এর বাংলা করেন ‘রাশিবিজ্ঞান’। অন্যদিকে বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের জনক কাজী মোতাহার হোসেন ইংরেজি ‘Statistics’ এর পরিভাষা হিসেবে বাংলায় ‘পরিসংখ্যান’ নামে একটি নতুন শব্দ সৃষ্টি করেন |

পরিসর বলতে কী বোঝায়

পরিসর শব্দের অর্থ ব্যবধান অর্থাৎ তথ্যের সর্বোচ্চ মান থেকে সর্বনিম্ন মান-এর ব্যবধানকে পরিসর বলে। তথ্য নিবেশনের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম মানের পার্থক্যকেই মুলত পরিসর।