বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ সাধন এবং ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে গণসচেতনতা গঠনে সাময়িকপত্রের গুরুত্ব সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন। সাময়িকপত্র প্রকাশে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানগণও এগিয়ে এসেছিলেন। মুসলমানদের মধ্যে সাময়িকপত্র প্রকাশ করে যারা দেশ ও জাতির উপকার সাধন করেছেন তাদের মধ্যে মাওলানা আকরাম খাঁ অন্যতম। তার সম্পাদনায় ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা থেকে ‘আল-এসলাম’ নামক একখানি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হতো।

পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এর প্রথম সংখ্যায় বলা হয়েছিল, “স্বধর্ম, স্বজাতি, স্বদেশ ও সাথে সাথে মাতৃভাষার সেবা করিবার নিমিত্তেই আল এসলামের প্রচার।” একদল ধর্মপ্রাণ তরুণের চিন্তা ও কর্মের ফসল ছিল এ পত্রিকা খানি। নিজেদের ধর্ম, সমাজ, কৃষ্টি, সাহিত্য ইত্যাদি তুলে ধরা, বিকাশ সাধন করা এবং মুসলমান সমাজকে পশ্চাদপদ অবস্থা থেকে সম্মুখপানে টেনে নিয়ে যাওয়ার মহৎ উদ্দেশ্যেই তারা পত্রিকাখানি প্রকাশ করেছিলেন।

তাঁরা সবাই ছিলেন সুশিক্ষিত এবং সংস্কারমুক্ত। ধর্মের নানা গোঁড়ামি তাদের মধ্যে ছিল না। পত্রিকাটিতে গল্প বা উপন্যাস প্রকাশের নিদর্শন না থাকলেও চিন্তামূলক এবং অনুসন্ধান ও পরিশ্রম সাপেক্ষ প্রবন্ধ ও আবেগপ্রবণ কবিতা এতে প্রকাশ করা হতো। এ পত্রিকায় লেখকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মুজাফফর আহমদ, আব্দুল গফুর সিদ্দিকী, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আব্দুল লতিফ, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, শেখ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ কে চাঁদ প্রমুখ। ধর্ম, দর্শন, সাহিত্য ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে মুসলমানদের স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এ পত্রিকার অবদান অসামান্য।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।