বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩) এর ‘বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ (১৮৬০) শ্রেষ্ঠ প্রহসনের অধিকারী। এতে বিদ্যমান রয়েছে চরিত্রহীনতা ও অধর্মাচারী লোকের ভণ্ডামি। তাছাড়া নাট্যকার প্রহসনটিতে টাইপ জাতীয় চরিত্র সৃষ্টি করে সমকালীন সমাজের রূপ তুলে ধরেছেন।
‘বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসনের বিষয়বস্তু হলো: বৃদ্ধ ভক্তপ্রসাদ এলাকার জমিদার এবং সে সূত্রে ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু তার চরিত্র ভালো নয়। সে এলাকার গরিব চাষা ও শ্রমিকদের অত্যাচার করে। কিন্তু নারীর প্রতি তার সীমাহীন লালসা। মুখে ধর্মের বুলি করলেও মুসলমান সুন্দরী বধূদের ভোগ করতেও সে দ্বিধা করে না। এমনকি সে তাদের পিছনে টাকা খরচ করতেও প্রস্তুত। লোকে তাকে ভয় এবং শ্রদ্ধা ভরে দেখলেও সুযোগ পেলে তাকে পরাস্ত করতে চায়। অবশেষে গদা ও পুটির পরামর্শ মতো বকধার্মিক ভক্তপ্রসাদ রাতের অন্ধকারে ভগ্ন শিবমন্দিরে মুসলমান বধূ ফাতেমার কাছে যৌবনের খায়েশ মিটাতে যায় এবং হানিফের কাছে উত্তম মধ্যম খেয়ে এ জীবনে আর লাম্পট্য না করার প্রতিজ্ঞা করে। এভাবে তৎকালীন সমাজের সামন্ত প্রভুদের অত্যাচার, শোষণ এবং বৃদ্ধদের নারীলোলুপতার বাস্তব চিত্ত মধুসূদনের ‘বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসন প্রকাশ পেয়েছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment