প্রহসন একপ্রকার নাট্য সৃষ্টি যেখানে হাস্যরসময় জীবনের আলেখ্য রূপায়িত হয়ে উঠে। সমাজের দোষত্রুটি অবলম্বনে ব্যঙ্গবিদ্রূপের মাধ্যমে প্রহসন পাঠকের বা দর্শকের কাছে কৌতুকময় হয়ে উঠে। প্রহসনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিক একে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। অধ্যাপক এন চৌধুরী প্রহসনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “সমাজের কুরীতি সংশোধনের রহস্যময় ঘটনা সংবলিত হাস্যপ্রধান একাঙ্কিকা নাটককে প্রহসন বলে।”

মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাহিত্য জীবন খুব দীর্ঘ নয়। তবুও তার আবির্ভাব বাংলা সাহিত্যে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। তিনি তার সাহিত্য জীবনে যে দুটি প্রহসন রচনা করেন তার একটির নাম হলো ‘একেই কি বলে সভ্যতা’। প্রহসনটি ১৮৬০ সালে প্রকাশিত হয়। এ প্রহসন রচনার পটভূমি হলো আধুনিক কলকাতা। প্রহসনের কাহিনিটি সংক্ষেপে এভাবে বলা যায়, “কর্তা মহাশয় পরম বৈষ্ণব। তিনি অধিকাংশ সময় বৃন্দাবনেই বাস করেন। তার পুত্র নববাবু জনাকয়েক বন্ধু নিয়ে জ্ঞানতরঙ্গিনী নামে একটা সভা করেছে এবং সে সভায় মদ্যপান ও বারবনিতাদের নিয়ে উলঙ্গ নৃত্য করা হয়। কর্তা মহাশয় নববাবুকে চোখে চোখে রাখার চেষ্টা করলেও নববাবু ও তার বন্ধুর সহযোগিতায় বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে জ্ঞানতরঙ্গিনী সভায় যায়। কর্তা মহাশয় ছেলের খোঁজখবর নেয়ার জন্য বৈরাগীকে পাঠালে তাকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়। নববাবু অধিক রাতে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরলে কর্ত্তা মহাশয় বুঝতে পারে ছেলের আসল চেহারা। অবশেষে সব বুঝতে পেরে কর্তা মহাশয় কলকাতার বাসে উঠে বৃন্দাবন চলে যায়। এভাবেই শেষ হয়ে যায় ‘একেই কি বলে সভ্যতা’র কাহিনি।”

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।