‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ’ গ্রন্থ সম্পর্কে যা জান লেখ।

উত্তর: বাংলা উপন্যাস হিসেবে প্রথম গ্রন্থের দাবি খ্রিষ্টান বিদেশিনী হ্যানা ক্যাথারিন ম্যালেন্স (১৮২৬-১৮৬১) রচিত ‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ, (১৮৫২) গ্রন্থের। এ গ্রন্থ খ্রিষ্টধর্মের মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য রচিত। খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করায় ফুলমনির সুখ এবং যথার্থ খ্রিষ্টধর্মাচরণ না করায় করুণার দুঃখভোগ, পরে মেম সাহেবের ঈশ্বর প্রেরিত সুপরামর্শে করুণার সুমতি ও সুখের মুখ দর্শন এ গ্রন্থের কাহিনি। লেখিকার একমাত্র উদ্দেশ্য খ্রিষ্টধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব গ্রহণ এবং অন্যান্য লোকদের মনে ধর্ম গ্রহণের চেষ্টা করা। তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল খ্রিষ্টধর্মের প্রভাবে মানুষের নৈতিক উন্নতি ও সদাচার।

তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এবং ভবানীপুর মিশন স্কুলে খ্রিষ্টান ছেলেমেয়েদের বাংলা শেখাতেন। তাই তিনি বাঙালি সমাজের আচরণ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন এবং বাংলা ভাষার উপরও তার ভালো দক্ষতা ছিল। তার গ্রন্থের কাহিনির কোন ধারাবাহিকতা ছিল না, চরিত্রগুলোও ছিল নিষ্প্রভ ও নির্জীব। বইটি ‘দি উহক’ নামে একটি গল্পগ্রন্থ অবলম্বনে লেখা। চরিত্রগুলো ইংরেজি আদর্শে রচিত। এ গ্রন্থ সম্পর্কে সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন “ঔপন্যাসিকের মানসদৃষ্টি বিস্তৃত, জীবনপটে অভিজ্ঞতার বিন্যাস ও উপন্যাসোচিত সমস্যা একটি উপন্যাসের এ প্রধান ত্রিশর্তের একটিও পুস্তকে রক্ষিত হয়নি। সুতরাং বলা যায়, ফুলমনি ও করুণার বিবরণ গ্রন্থটি যতখানি ইতিহাসগত কৌতূহল নিবৃত্ত করতে সক্ষম ততোখানি সাহিত্যিক রসপিপাসা চরিতার্থ করতে সক্ষম নয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।