ব্রাসি হ্যালহেডের ব্যাকরণ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

উত্তর: ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড (১৭৫১-১৮৩০) তার বন্ধু ও প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বী শেরিডানের কাছে পরাভূত হয়ে ইংল্যান্ড ত্যাগ করে ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাইটারের চাকরি নিয়ে কলকাতায় আসেন। হ্যালহেড অক্সফোর্ড খ্রিষ্ট চার্চ কলেজে পড়ার সময়েই ভারতীয় ভাষার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। ফলে কলকাতায় এসে তিনি বাংলা ও ফারসি ভাষার প্রতি জোর দেন। ১৭৭৩ খ্রিষ্টাব্দে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস তাকে বাংলা ফারসি গ্রন্থ রচনার দায়িত্ব দেন। তিনি ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সুপ্রিম কোর্টে অস্থায়ী দোভাষীর পদ লাভ করেন। তিনি ১৭৭৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘A Code of Gentoo Laws নামক হিন্দু আইনের বাংলা অনুবাদ করেন।

তিনি এ সময় হেলেনালুইসা রেবোকে বিয়ে করেন। ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে হ্যালহেড কোম্পানির কর্মচারীদের জন্য ব্যাকরণ রচনায় মনোনিবেশ করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীরা শাসন কাজের সুবিধার জন্য বাংলা গদ্যে আত্মনিবেশ করেছিলেন। ১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাসি হ্যালহেড ‘A Grammar of the Bengal Language’ রচনা করেন। এ গ্রন্থটি কোম্পানির কর্মচারীদের বাংলা ভাষা শেখানোর জন্য রচিত হয়েছিল। এর ভাষা ছিল ইংরেজি কিন্তু দৃষ্টান্ত ছিল বাংলা।

ব্রাসি হ্যালহেডের রচনার অন্যতম দিক হচ্ছে এটি বাংলা অক্ষরে মুদ্রিত। ইতঃপূর্বে পর্তুগিজ ধর্মযাজকরাও পর্তুগিজ বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও অভিধান সংকলন করে। এর কিছু পর্তুগালের রাজধানী লিসবন নগরে রোমান অক্ষরে ছাপা হয়েছিল। হিন্দুধর্মকে কেউ কেউ আক্রমণ করে এবং খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য যে পুস্তিকা রচনা করেছিলেন তার কিছু রোমান অক্ষরে ছাপা হয়েছিল। রোমান অক্ষরে ছাপার কারণে তখনো ছাপার অক্ষরে বাংলা হরফের ব্যবহার শুরু হয়নি। হ্যালহেডের ‘A Grammar of the Bengal Language’ এছটি ছাপাতে ধাতুতে খোদাই বাংলা অক্ষর ব্যবহৃত হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।