উনিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলাদেশে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে জে. সি. মার্শম্যানের মূল্যায়ন কর

উত্তর: আঠারো শতকের শেষের দিকে কয়েকজন ইংরেজ মিশনারি বাংলাদেশে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে সচেষ্ট হন। ধর্ম প্রচারের জন্য তারা এদেশে আসলেও বাংলা গদ্যের অনুশীলনই তাদের প্রধান সার্থকতা। বাংলায় বাইবেল অনুবাদ করে এদেশে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে ব্রতী হয়েছিলেন উইলিয়াম কেরি ও জোশুয়া মার্শম্যান। উইলিয়াম কেরি তার সহযোগিতাতেই ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে ডেনমার্কের শাসনাধীন শ্রীরামপুরে ব্যাপ্টিস্ট মিশন এবং মিশনে মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপন করেন। জন ক্লার্ক মার্শম্যান শ্রীরামপুর মিশনে উইলিয়াম কেরির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তিনি শ্রীরামপুরের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বাংলাদেশে যেসব ইংরেজ মিশনারি খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে এসেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জে.সি. মার্শম্যান। তারা প্রথমে কলকাতাকে প্রচার কেন্দ্ররূপে বেছে নেয়। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীদের বাধার কারণে বাধ্য হয়ে কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। আর এর নেতৃত্বে ছিলেন উইলিয়াম কেরি ও জন ক্লার্ক মার্শম্যান মিশনারিরা। কেরি ও তার সহকর্মীরা মিশন প্রতিষ্ঠার পর বাংলা ভাষায় বাইবেল অনুবাদে আত্মনিয়োগ করেন। এর মাধ্যমে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাইবেল অনুবাদের কারণে কেরি শাসকমহলে পরিচিত হয়েছিলেন। সুতরাং তার উপরে কলেজের বাংলা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হলো। কেরি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে যোগদান করলে জে.সি. মার্শম্যান হলেন শ্রীরামপুর মিশনের সর্বেসর্বা।

১৮১৮ সালের এপ্রিল মাসে শ্রীরামপুর মিশন থেকে বাংলা ভাষায় প্রথম সাময়িক দিগদর্শন প্রকাশিত হয়। এর সম্পাদক ছিলেন জন ক্লার্ক মার্শম্যান। পরবর্তী মে মাসেই বাংলা ভাষার দ্বিতীয় সাময়িকী সমাচার দর্পণ প্রকাশিত হয়। তিনি এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৮৩৭ সালে জে. সি. মার্শম্যানের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই শ্রীরামপুর মিশনের অস্তিত্ব নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।