উইলিয়াম কেরি সম্পর্কে যা জান লেখ

বাংলা ভাষার বয়স হাজার বছরের অধিক হলেও বাংলায় লেখা গদ্যের বয়স মাত্র দু’শ বছরের মতো। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজকে কেন্দ্র করেই বাংলা গদ্যের সূত্রপাত। আর এ কাজের ভার নিয়েছিলেন উইলিয়াম কেরি নামক একজন ইংরেজ।

উইলিয়াম কেরি ১৭৬১ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের নর্দামাটনশয়্যারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন দরিদ্রের সন্তান। ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্যাপটিস্ট মিশনের পাদ্রি হন এবং ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মযাজক হিসেবে ভারতে আসেন। এরপর ১৭৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মালদহে নীলকুঠির তত্ত্বাবধায়ক হন। ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শ্রীরামপুরে আসেন এবং ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি বাংলা গদ্যে গ্রন্থ রচনার জন্য অন্যকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি নিজেও কলম ধরেন। তার এ প্রচেষ্টার ফলে বাংলা গদ্যে সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত হয়।

এ সম্পর্কে সজনীকান্ত দাস যথার্থই বলেছেন, “বাংলাদেশে কেরির অপর সকল কীর্তি যদিও কোনোদিন নিঃশেষে বিলুপ্ত হয়, বাংলা সাহিত্য বাঁচিয়া থাকিলে তিনি স্বমহিমায় বাঁচিয়া থাকিবেন।” তার রচিত গ্রন্থসমূহ হলো: বাইবেলের বঙ্গানুবাদ (১৮০১), বাংলা ব্যাকরণ (১৮০১), বাংলা-ইংরেজি অভিধান (১৮০১), কথোপকথন (১৮০১), ইতিহাসমালা (১৮১২), উইলিয়াম কেরির গদ্য ছিল প্রাঞ্জল। তবে শেষের দিকে তিনি মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের প্রভাবে সংস্কৃত ঘেষা বাংলা গদ্যের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এর প্রভাব তৎকালীন লেখকদের লেখায় সহজেই লক্ষণীয়। ১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম পরলোকগমন করেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।