আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা কিন্তু আমরা পিকনিক
করে থাকি। পিকনিক করতে এবং আনন্দ উপভোগ করতে আমাদের আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস
সম্পর্কে জানা একান্ত প্রয়োজন তাই আমি আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস
সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
পিকনিক মানে আনন্দ উল্লাস আর করা আর একসঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া
করা। আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
পোস্ট সূচিপত্রঃ আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস
পিকনিক কি
পিকনিক হলো পরিবারের লোকজন বা পরিচিত জনের সাথে আনন্দঘন সময় কাটানো এবং খাওয়া
দাওয়া করা। একে আবার বনভোজন এবং চড়ুইভাতী ও বলা হয়ে থাকে। পিকনিকের সংজ্ঞা
দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজ ডিকশনারি তে বলা হয়েছে – কেউ যখন কোন
উপলক্ষ ছাড়া বাইরে খেতে যায় তখন তাকে পিকনিক বলা হয়। এই পিকনিক বা বনভোজনের
সবাই মিলে হইচই এবং খাওয়া-দাওয়া করা হয়।তাইতো কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-
ফল ধরেছে বটের ডালে ডালে;
অফুরন্ত আতিথে তার সকালে বৈকালে
বনভোজনের পাখিরা সব আসছে ঝাঁকে ঝাক।
মাঠের ধারে আমার ছিল চড়িভাতির ডাক।
পিকনিক দিবসের ইতিহাস
প্রতি বছর ১৮ই জুন আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস। প্রতিবছর এই দিনটি আনন্দ উল্লাসের
সাথে পালন করা হয়ে থাকে। ফরাসি শব্দ থেকে পিকনিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।
ফ্রান্সের কিছু ব্যাক্তি বাসা থেকে খাবার নিতেন এবং এগুলো তারা বিভিন্ন
রেস্তোরায় বসে খেতেন এবং ওয়াইন সঙ্গে নিতেন। আর এই সব থেকে পিকনিক বা বনভোজনের
জড়িয়ে পড়ে মানুষ সংস্কৃতিতে। তবে মনে করা হয় পিকনিকের উদ্যোগ হল ফরাসিরা।
অনেকেই মনে করেন পিকনিক শুরু হয়েছে ১৭৯৯ সালের দিকে অর্থাৎ ফরাসি বিপ্লবের শেষের
দিকে। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই পিকনিক
বেশি দেখা যায় বড় বড় পার্ক গুলোতে ফরাসি বিপ্লবের আগে কেউ প্রবেশ করতে পারত না
ফরাসি বিপ্লবের পরেই প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষের জন্য পার্ক গুলো খুলে দেওয়া
হয়েছিল।
আরো পড়ুনঃআন্তর্জাতিক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস সম্পর্কে জেনে নিন
মানুষ তখন পার্কে গিয়ে মজা করতো ও খাওয়া-দাওয়া করত। তবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা
যায় যে পিকনিক শব্দটি ফরাসি শব্দ। আবার অনেকের ধারণা ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়ার
যুগ থেকে পিকনিক শুরু হয়েছে। কারণ বৃটিশরা একসঙ্গে বাইরে সময় কাটাতো এবং ভালো
ভালো খাবার খেতো। ২০০৯ সালে পর্তুগালের লিবসনে সবচেয়ে বড় পিকনিক টি হয়েছিল এতে
অংশগ্রহণ করেছিল প্রায় ২২ হাজার ২৩২ জন লোক ৪০০ টি বাসে করে পিকনিক করতে এসেছিল।
পিকনিকের সময় নির্বাচন
১৮ই জুন আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস হলেও বাংলাদেশের শীতের শেষে অর্থাৎ
ফেব্রুয়ারিতে বেশি পিকনিক হয়ে থাকে। শীত প্রধান দেশে আবার গরমকালে পিকনিক হয়ে
থাকে। এর প্রধান কারণ হলো পৃথিবীর সব দেশে এক সময় পিকনিক বা বনভোজন হয় না।
বাংলাদেশ যেহেতু নাতিশীতোষ্ণ দেশ তাই বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে পিকনিক হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃআন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস সম্পর্কে জেনে নিন
শীত প্রধান দেশে আবার গরমকালে পিকনিক হয়ে থাকে এর প্রধান কারণ হলো পৃথিবীর সব
দেশে এক সময় পিকনিক বা বনভোজন হয় না। বাংলাদেশ যেহেতু নাতিশীতোষ্ণ দেশ তাই
বাংলাদেশে শীতেরশেষে পিকনিক হয়ে থাকে। আর শীত প্রধান দেশে বেশি জুন মাসে পিকনিক
হয়। তাই পিকনিক যেহেতু শীত প্রধান দেশ থেকে শুরু হয়েছে তাই ১৮ জুন জাতীয়
পিকনিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস
১৮ই জুন আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস। প্রতিবছরই ১৮ই জুন জাতীয় পিকনিক দিবস হিসেবে
দিবসটি যথাযজ্ঞ মর্যাদার সাথে পালন করা হয়। পিকনিক কে আবার আউটডোর ডাইনিং ও বলা
হয়ে থাকে। কারণ পিকনিক মানেই বাইরে হই হুল্লোড় আর খাওয়া-দাওয়া। বনভোজনের
উদ্দেশ্য হল বাইরে ঘুরতে যাওয়া এবং সবাই মিলে ভালো ভালো খাবার খাওয়া।
আর সেই সঙ্গে মনকে চাঙ্গা করা। আর কাজের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য
মানুষ পিকনিক করে থাকে।পিকনিক করলে মন চাঙ্গা হয় এবং কাজের গতি বাড়ে। পিকনিক
হলো শীত প্রধান দেশের জন্য মজার হলিডে। কারণ ১৮ই জুন এইসব দেশে সরকারি ছুটির দিন।
তাইতো কবি আবদার রশিদ লিখেছেন-
চড়ুইভাতির পাশেই নদীর কূল ছিল
আনন্দে তাই সবার গলায় খুলছিল
ফুর্তিতে খোশ গল্প পেতে মশগুল ছিল।
মাথায় তাদের হাল ফ্যাশনের চুল ছিল
জনা চারেক আলুর খোসা ছুল ছিল।
কবির এই কবিতার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি পিকনিক মানে সবাই মিলেমিশে কাজ করা এবং
আনন্দ করে একসাথে সবাই খাওয়া দাওয়া করা।
আরো পড়ুনঃ
১৫ই মে – বিশ্ব পরিবার দিবস – সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
পিকনিক হয় মূলত দুপুর অথবা রাত্রে খাওয়ার সময় এই সময়টা বেছে নিয়ে কিছু লোক
একসঙ্গে হই-হুল্লোড় করে এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে আর এভাবেই তাদের
পিকনিক বা বনভোজন বা চড়ুইভাতে পালন করে থাকে।
পিকনিকের গুরুত্ব
কর্মব্যস্ততার মাঝেও নিজের পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য পিকনিকের গুরুত্ব অপরিসীম।
একমাত্র পিকনিকের মাধ্যমেই মানুষ পারে নিজের পরিবারকে এবং আত্মীয়-স্বজনকে কিছু
সময় দিতে। পিকনিক এমন এক আনন্দঘন পরিবেশ পিকনিকের আগের দিন যেন সময় কাটতে
চায় না।
আরো পড়ুনঃ বিশ্ব মা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
কর্মব্যস্ত মানুষ প্রতিদিন কাজ করতে করতে একঘেয়েমি হয়ে যায় কাজের চাপে মানুষের
মানসিক চাপ বেড়ে যায় আর মানুষ এই যান্ত্রিকতার এই অন্তত একটু সময়ের জন্য হলেও
ভুলে থাকতে চাই তার কর্মব্যস্ত জীবনকে। আর এর জন্য প্রয়োজন হয় বিনোদন। আর
মানুষ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় পিকনিককে। মানুষ এখন পিকনিক করতে গিয়ে
নিজের পরিচিতজনদের সাথে কিছু সময় কাটাতে পারে।
শেষ কথা
পিকনিক মানে হইহুল্লোড় পিকনিক মানে লোকজনের আয়োজন পিকনিক মানেই আনন্দঘন পরিবেশ
সবাই মিলেমিশে খাওয়া-দাওয়া করা যেন ভাবতেই ভালো লাগে পরিবারের মানুষকে একটু
সময় দিতে পিকনিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমরা সবাই পরিচিতজনদের সঙ্গে একসঙ্গে হই
এবং পিকনিক করি এটাই আমাদের আগামী দিনের কামনা।
Leave a comment