পদ্মা সেতু-পদ্মা বহুমুখী সেতু রচনা আমাদের সবার জানা উচিত কারণ এই রচনা
আমাদের শিক্ষার্থীদের লিখতে আসতে পারে, তাই আমি শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য
পদ্মা সেতু-পদ্মা বহুমুখী সেতু রচনা সম্পর্কে লিখার চেষ্টা করেছি।
পদ্মা সেতু-পদ্মা বহুমুখী সেতু রচনা তোমাদের জন্য।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আমি তোমাদের জন্য পদ্মা সেতু-পদ্মা বহুমুখী
সেতু রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করেছি তোমরা যদি এই রচনা
পরীক্ষায় লিখতে পারো তাহলে আশা করি অনেক ভাল নাম্বার পাবে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ পদ্মা সেতু-পদ্মা বহুমুখী সেতু রচনা
পদ্মা বহুমুখী সেতু
বাঙালির গৌরব হলো পদ্মা সেতু। এই পদ্মা সেতু মর্যাদা, আত্ম প্রত্যয় ও দৃঢ়তার
প্রতীক। বাঙালি জাতির যতগুলো অর্জন রয়েছে পদ্মা সেতু সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। একটি
দেশের উন্নয়ন তখনই সম্ভব হয় যখন সেই দেশের যোগাযোগ ও সামাজিক, অর্থনৈতিক
ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়। একটি দেশের পরিমাপ করা হয় সেই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা,
অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধির দ্বারা।
একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থায় পারে একটি দেশের প্রতিটি অংশকে যুক্ত করতে। সাধারণত
বলা হয় স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। স্বপ্ন কখনো বাস্তবে পরিণত হয় না। কিন্তু
বাঙালিরা যা দুই যুগ আগে স্বপ্ন দেখেছিল আজ তা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ
বঙ্গের মানুষের স্বপ্নের সেতু কল্পনার ক্যানভাস এর মত আজ স্বমহিমায় সেতু বন্ধন
রচনা করেছে পদ্মার দুই পাড়ের মানুষের।
এই পদ্মা সেতুই বদলে দেবে মানুষের জীবন যাত্রার মান, বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি।
সেই সাথে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পদ্মা সেতু বাঙ্গালীদের একটি
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। বাংলাদেশের যত বড় পরিকল্পনা রয়েছে পদ্মা সেতু সেগুলোর
মধ্যে অন্যতম একটি। পদ্মা সেতু হলো বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু।
এই পদ্মা সেতু একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এই পদ্মা সেতুর মাধ্যমে
মুন্সিগঞ্জের লৌহজঙ্গের সাথে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। এই পদ্মা
সেতুটি ছিল দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন। এই পদ্মা সেতু বদলে দেবে বাংলাদেশের
অর্থনীতির চাকা আর জীবন যাত্রার মান হবে উন্নত।
পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা হলো পদ্মা সেতু। ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রস্তাব
রাখা হয় পদ্মা সেতু নির্মাণের। ১৯৯৯ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করার
প্রস্তাব করা হয় এবং ২০০৪ সালে তার শেষ করার কথা বলা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ
প্রকল্পটি স্থগিত করে কারণ পর্যাপ্ত বাজেটের অভাব ছিল। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকার
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে পদ্মা সেতু নির্মাণের।
পদ্মা সেতুর ইতিহাস
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে পদ্মা সেতু
নির্মাণের কথা জানায়। সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং পদ্মা সেতু
নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সরকার ২০১১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ
শুরু করার কথা বলে। AECOM এর ডিজাইনে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে শুরু হয়
২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
আর ২০১৫ সালের মধ্যে সেতুটি সকল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পুরো পদ্মা
সেতুর প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়েছিল ২৯২ কোটি ডলার। এর মধ্যে এডিবির ঋণ সহায়তা
ধরেছিল প্রায় ৬১.৫ কোটি ডলার। এছাড়াও জাইকা ৪১.৫ কোটি ডলার, আইডিপি ১৫.৫ কোটি
ডলার, বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি ডলার এবং তিন ৩ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল আবুধাবি
ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের ।
কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি টাকা
ঋণ সহায়তা বাতিল করে। এরপর বাংলাদেশ সরকার নিজ অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নেন পদ্মা
সেতু নির্মাণ করার। প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্ত এক অনন্য সাহসী সিদ্ধান্ত।
প্রধানমন্ত্রী সাহসী ভূমিকা
যে স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে স্বপ্ন আসলে তারই জন্য। মানুষ স্বপ্ন দেখতে দেখতে সাহস
করে স্বপ্নের পেছনে ছুটে যায়। বাংলাদেশ পদ্মা সেতুর স্বপ্ন শুধুই দেখেনি তা
বাস্তবে রূপদান করেছে। বিশ্ব ব্যাংক আর্থিক সহায়তা না করলেও বাংলাদেশ সরকার তার
স্বপ্নকে বাস্তবের রূপদান করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু গড়ার স্বপ্নই শুধু দেখেন তিনি তা বাস্তবে পরিণত
করেছেন।
প্রধান মন্ত্রীর এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি সাহসী সিদ্ধান্ত। আর তার সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করার ফলেই বাঙালি জাতি আজ এই সেতুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে ও দেখিয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের রূপরেখা
বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত পদ্মা সেতু একটি বহুমুখী রেলও সড়ক সেতু-
প্রকল্পের নাম – পদ্মা বহুমুখী সেতু
যানবাহন – ট্রেনো বাস
উদ্দেশ্য – পদ্মা নদী পারাপার
নকশা – AECOM
স্থান – লৌহজং মুন্সিগঞ্জের সাথে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর
মোট দৈর্ঘ্য – ৬. ১০৫ মিটার বা ২০. ১৮০ ফুট
প্রস্থ – ১৮.১০ মিটার বা ৫৯.৪ ফুট
নির্মাণ শুরু- ২০১৪ সাল ৭ ডিসেম্বর
উপাদান-স্টিল ও কংক্রিট
নির্মাণকারী- চাইনা মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি
লিমিটেড
পদ্মা সেতুর বর্ণনা
বাংলাদেশের বৃহত্তম সেতু হলো পদ্মা সেতু। এই সেতুটি বহুমুখী সড়ক ও রেল
সেতু। পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮ .১০ মিটার। এই সেতুর
ওপর স্তরে চার ৪ লেনের সড়ক পথ এবং একটি রেলপথ রয়েছে এই সেতুর নিচের স্তরে। এই
সেতু দুই স্তর বিশিষ্ট ক্রংক্রিট ও স্টিল দ্বারা নির্মিত। এই সেতুতে মূল পিলার
রয়েছে ৪২ টি ৪০ টি পিলার নদীর ভেতরে রয়েছে এবং প্রতিটি পিলারে মোট ছয় ৬টি করে
পাইল রয়েছে মোট ২৪০ টি।
এছাড়া ও সেতুর দুই পাশে যে সংযোগ রয়েছে এই দুইটি পিলারে বারো ১২ টি করে মোট
২৪টি পাইল রয়েছে। পিলারের ওপর স্প্যান বসানো হয়েছে মোট ৪১টি। এই সেতুতে ২৭.৬
মিটার রাস্তা রয়েছে রাস্তার অপার অপর প্রান্তের সার্ভিস রোড রয়েছে ২.১৪
কিলোমিটার এবং স্থানে ও সড়ক রয়েছে 0.৬৮ কিলোমিটারএছাড়াও রয়েছে পুলিশ স্টেশন,
ওই স্টেশন, টোল প্লাজা, সার্ভিস এরিয়া, ইমারজেন্সি রিসিপশন এরিয়া
ইত্যাদি।
সেতুর দুই পাড়ে রয়েছে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। চীনের মিন হাইড্রো কর্পোরেশন
কাজ পেয়েছে নদী শাসনের জন্য। এছাড়াও সেতুটির নির্মাণ কাজ তদারকি করছে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনী, বুয়েট এবং কোরিয়া এক্সপ্রেশন ওয়ে কর্পোরেশন এন্ড অ্যাসোসিয়েশন।
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড মূল সেতুর কাজ করছেন।
নির্মাণ কাজের বিন্যাস
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সাতটি ভাগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এগুলো হলো
২০১৪ সালে নভেম্বর মাসে কার্যাদেশ পেয়ে মূল সেতুর নির্মাণের দায়িত্বে
ছিলেন চাইনা মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ৪৮ মাসের মধ্যে
১২,১৩৩ .৩৯ কোটি টাকার কাজ করেছেন। সেতু নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে
নতুন নতুন প্রযুক্তি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্ক অর্গানাইজেশন ১৩৩ কোটি টাকার সংযোগ ও
সার্ভিস এলাকার পরামর্শের কাজ করেছে।
কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে মূল সেতু ও নদী শাসনের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছে।
২০১২ সাল থেকে পরিবেশ উন্নয়নে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং
অদ্যাবধি
লক্ষাধিক বৃক্ষরোপণ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে।
ভূমি গ্রহণ ও পূর্ণবাসন প্রকল্পের জন্য মোট ১৪০৮.৫৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা
হয়েছে ৫০৭.৭১ কোটি টাকা এখানে মোট প্লেটের সংখ্যা ২৬ ৯৮ বাণিজ্যিক প্লট ৮৮ এবং
আবাসিক প্লট ২৬ ১৮ ।৯৭৭টি প্লট ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আব্দুল মমিন লিমিটেড ও মালয়েশিয়া ভিত্তিক এইচসিএম ১২৯০ কোটি টাকার
যৌথভাবে জাজিরা মাওয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ করেছে তারা নিশ্চিত করেছে । নাও
ডোবা অর্থাৎ মূল সেতু যেখানে নামবে সেখান থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক
নির্মাণের কাজ করেছে এছাড়াও তারা সংযোগ সেতুর সংযোগ সড়ক কালভার্ট সার্ভিস এলাকা
ও সেনাবাহিনীকে নির্মাণের কাজ করেছে।
সেতু প্রকল্প এলাকায় কর্মচাঞ্চল্য
বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা সহ এই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে
হাজার হাজার শ্রমিক, বহু সংখ্যক কৌশলী। সেতু নির্মাণে প্রথম দিকে দুইশ বিদেশি সহ
কর্ম সংস্থান হয়েছিল প্রায় দুই হাজার লোকের। পুরো দমে কাজ করতে লোক লেগেছিল
প্রায় দুই হাজার বিদেশি সহ 20000 লোক বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত ছিল।
প্রতিবন্ধকতা ও বাংলাদেশের সক্ষমতা
২০১৪ সালের দুর্নীতির অভিযোগ কানাডা আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয় আর এই ভাবেই
বাংলাদেশ সরকার নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন
২০২২ সালের ২৫ জুন বাংলাদেশের জনগণের নিকট উল্লাসের দিন কারণ এই দিন বাঙালির
স্বপ্ন সার্থক করে উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু। ২০২২ সালের ২৫ জুন বাংলাদেশের
জনগণের একটি উল্লাসের দিন কারণ ওই দিন বাঙালির স্বপ্ন সার্থক করে উদ্বোধন করা হয়
পদ্মা সেতু। ২০২২ সালের ২৬ জুন এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া
হয়েছে।
পদ্মা সেতুর গুরুত্ব
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে রয়েছে প্রায় ১৩ শত নদী। এদেশের বুকে বয়ে চলেছে
অসংখ্য নদী।আর এইসব নদী পারাপারে নৌকা ব্যবহার করা হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা আমাদের
প্রতিনিয়ত নৌ পথের আশ্রয় নিতে হয়। নোপথে আমাদের কোন সঠিক ব্যবস্থা নেই। যার
কারণে প্রতিনিয়ত অনেক ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়।
যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতির কারণে আমাদের প্রয়োজন সেতু। সেতু থাকলে দুই দিকের
মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়। তেমনি অর্থনৈতিক, সামাজিক, বানিজ্য সহ
সকল প্রকার উন্নয়নের জন্য সেতু একান্ত প্রয়োজন।
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব
একটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর সেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর
করে। দক্ষিণবঙ্গের সাথে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে পদ্মা
সেতুর জন্য যার কারণে যাতায়াতের সময় ও ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন পণ্য আনা
নেওয়ার গতি বেড়েছে।
শিল্পক্ষেত্রে অবদান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগ ঘটেছে
এই পদ্মা সেতুর জন্য। যার ফলে এই অঞ্চলে এখন গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শিল্প কারখানা।
এইসব এলাকার যত পচনশীল দ্রব্য আছে তা দ্রুত ঢাকা শহরে পৌঁছানো সম্ভব হবে। পায়রা
সমুদ্র বন্দর, মংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থল বন্দরের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারবে।
যার ফলে বাংলাদেশের শিল্প ক্ষেত্রে আসবে নতুন গতি।
কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি
পদ্মা সেতুর কারণে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে কারণ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মানুষ নতুন
নতুন শিল্পের বিকাশ ঘটাবে। মানুষ নিজের কর্ম খেত নিজে তৈরি করে নিতে পারবে।
কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন
পদ্মা সেতুর ফলে পদ্মা পাড়ের লোকেরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সহজেই বাজারজাত
করতে পারবে। আগে বাজারজাত করা তেমন ব্যবস্থা ছিল না যার কারণে কৃষকেরা সঠিক মূল্য
পেত না। এখন সহজেই তারা তাদের পণ্য বাজার করতে পারবে এবং সঠিক মূল্য পাবে।
সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন
চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর বাংলাদেশের আমদানি রপতানি বাণিজ্য সিংহভাগ নির্ভর করে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর পদ্মা সেতুর ফলে গতিশীল ও সচল হবে। আর চট্টগ্রাম
বন্দরে পাশাপাশি পায়রা ও মংলা সমুদ্র বন্দর অর্থনীতিতে সহায়তা করবে।
অবকাঠামো গত উন্নয়ন
পদ্মা সেতু পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে অবকাঠামগত উন্নয়ন
করবে। পদ্মা সেতুর ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস লাইন সব উপকরণ পদ্মার ওপারে নিয়ে যাওয়া
সম্ভব হবে। যার ফলে ফলশ্রুতিতে অবকাঠামোর উন্নয়ন সম্ভব হবে।
দারিদ্রতা হ্রাস
দক্ষিণ অঞ্চলের দারিদ্রতার হার একটু বেশি আর এর মূল কারণ হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার
অভাব। পদ্মা সেতুর ফলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হবে এবং
তাদের দারিদ্রতার হার কমবে।
সরকারি ব্যয় হ্রাস
পদ্মা সেতুর জন্য সরকারের ব্যয় হ্রাস পাবে কারণ ফেরি সার্ভিস চালু রাখা হয়৫0
শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে এই ফেরি চলাচল বন্ধ হলে ৩৬০০ কোটি টাকা সরকারের সাশ্রয়
হবে।
সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
পদ্মা সেতু নির্মাণ ছিল সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক কিছু
ষড়যন্ত্রের কারণে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় অনিশ্চিত ছিল। ২০০৯ সালে সরকার
চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং ২০২২ সালে তা সমাপ্ত
করতে সক্ষম হয়েছেন। সরকার নিজের অর্থে এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেন।
পদ্মা সেতুর ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন হল এই পদ্মা সেতু পদ্মা সেতুর ফলে পদ্মার ওপারে
থাকা লোকের সাথে সবার যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে। বিদে দেশি-বিদেশি অনেক লোক এখন
পায়রা বন্দরে গিয়ে তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারছে। দক্ষিন অঞ্চলের অঞ্চলের দাম
বেড়েছে। ২০২২ সালে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সাথে সাথেই পদ্মা সেতু ও উত্তর
দক্ষিণের মানুষের সাথে যোগাযোগের একটি মাধ্যম।
শেষ বক্তব্য
বাঙালির স্বপ্ন পদ্মা সেতু আজকের সার্থক হয়েছে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে
বড় রেলও সড়ক সেতু। এই সেতুর ফলে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ হয়েছে
সহজ ও সাবলীল। পদ্মা পাড়ের লোকজন কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে পারেনি। কোন
ক্ষেত্রেই তাদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারেনি। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আজকে
তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে তারা খুব সহজেই তাদের জিনিসপত্র নিয়ে চলে আসতে
পারছে রাজধানী ঢাকায়।
Leave a comment