ব্রাত্য

  • পরিচয়: ব্রাত্যরা সম্ভবত আর্যজাতিরই একটি অংশ ছিল। ড. হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী মনে করেন যে, ব্রাত্যরা সম্ভবত ব্রাহ্মণ্যধর্মবহির্ভূত আর্য ছিল। কেউ কেউ মনে করেন যে, ‘ব্রাত শব্দটি থেকেই ‘ব্রাত্য” শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। ব্রাত’ শব্দের অর্থ হল ‘দল’। অন্যদিকে অধ্যাপক দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন যে, ব্রাত্য কথাটি ব্রত’ শব্দ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। ব্রত থেকে পতিত বিধিবিরােধী গােষ্ঠী—এই অর্থে ব্রাত্য। তারা প্রাকৃত ভাষায় কথা বলত।

  • বৃত্তি: ব্রাত্য জাতিগােষ্ঠীর মানুষ আর্যদের মতাে কৃষিকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করে গ্রামে বাস করত না। আর্যদের আদি বৃত্তি পশুপালনকে তারা জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করে যাযাবর জীবনযাপন করত। পশুর পাল নিয়ে তারা দিনের পর দিন এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ঘুরে বেড়াত।

  • ধর্ম-ভাবনা: ব্রাত্যরা ব্রাম্মণ্যধর্মের যজ্ঞানুষ্ঠান পালন করত না। তারা বেদের প্রতি শ্রদ্ধশীল ছিল না বা ব্রাম্মণ্যধর্মের বিধি-বিধান মানত না। তবে ইচ্ছা করলে ব্রাম্মণ্যধর্মের নির্দিষ্ট আচারঅনুষ্ঠান পালন করে তারাও ব্রাহ্ণ সম্প্রদায়ভুক্ত হতে পারত। ধর্মের দিক থেকে তারা ছিল শৈব।