অনুচ্ছেদ লিখন বাংলা দ্বিতীয় পত্রের একটি অভিচ্ছেদ অংশ। আমাদের পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় বাংলা অনুচ্ছেদ  – পানি দূষণ সম্পর্কে লিখতে আসে। তাই আমি বাংলা অনুচ্ছেদ  – পানি দূষণ সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় লেখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা পরীক্ষায় বাংলা অনুচ্ছেদ  – পানি দূষণ লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।

পানি দূষণকে প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা – ভূপৃষ্ঠ তলীয় দূষণ এবং ভৌম জল দূষণ।পানি দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে মানুষের দায়িত্ব হীনতাকে চিহ্নিত করা হয়। নিচে বাংলা অনুচ্ছেদ – পানি দূষণ সম্পর্কে লেখা হলো-

বাংলা অনুচ্ছেদ  – পানি দূষণ 

পানির অপর নাম জীবন। আর পানি দূষণ হল মানুষের কার্যকলাপের ফলে জলাশয়ের পানি দূষিত হওয়া। পানি দূষণ ভৌত, রাসায়নিক ও জীবাণু ঘটিত সংমিশ্রণের ফলে ও অনিরাপদ ও হিতকর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুপযোগী হওয়া। আর এই অনুপযোগী হওয়াকে বলা হয় পানি দূষণ। বিভিন্ন অস্বাভাবিক গুনাগন বিনাষ্টাকারী উপাদানের সংমিশ্রণকে সম্মিলিতভাবে পানি দূষণ নামে অভিহিত করা হয়। এক কথায় পানি দূষণ হলো পানির অবস্থার পরিবর্তন।

আরো পড়ুনঃ  বাণিজ্য মেলা – একটি বাণিজ্য মেলা – অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

পানিতে এমন পদার্থের উপস্থিতি যা পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করে তাকে বলা হয় পানি দূষণ।পানি দূষণ বর্তমানে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পানি দূষণ একটি মারাত্মক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, খাবারের পানির পিএইচ PH মান হওয়া উচিত সাত ৭ থেকে আট ৮ এর মধ্যে। কিন্তু যখন এই অবস্থার পরিবর্তন হয় তখন তাকে পানি দূষণ বলা হয় এবং এই পানি খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ  আমার প্রিয় খেলা – অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

পানি দূষণকে প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা – ভূপৃষ্ঠ তলীয় দূষণ এবং ভৌম জল দূষণ।পানি দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে মানুষের দায়িত্ব হীনতাকে চিহ্নিত করা হয়। কারণ মানুষ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য এবং অন্যান্য আবর্জনা নদীতে এবং সমুদ্রের পানিতে নির্গত করে যা পানির দূষিত করে। এছাড়াও কিছু লোক রয়েছে যারা নদী – নালা,খাল-বিল ইত্যাদির পাশে অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার নির্মাণ করে যা মারাত্মকভাবে পানি দূষিত করে।

আরো পড়ুনঃ  গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

বিশ্বে যত রোগ ও মানুষের মৃত্যু হয় তার প্রধান কারণ হলো পানি দূষণ। ২০১৫ সালে ১৮ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য পানি দূষণকে দায়ী করা হয়েছিল। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পানি দূষণ বুড়িগঙ্গা নদীতে। এছাড়া ভারত এবং চীন এই দুই দেশে পানি দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ভারতে প্রতিদিন আনুমানিক ৫৮০ জন মানুষ পানি দূষণের কারণে মারা যায়। আবার চীনের শহরের ৯০ শতাংশ পানি দূষিত। ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী চীনে নিরাপদ পানির থেকে বঞ্চিত প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ।

শেষ কথা

উন্নয়নশীল দেশে সবচেয়ে বেশি পানি দূষণের মাত্রা বেশি এবং সেই সাথে শিল্প উন্নত দেশগুলোতেও দূষণের মাত্রা কম নয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৯ সালে পানির রিপোর্টে বলা হয় যে যত মাইল প্রবাহের মূল্যায়ন করা হয়েছে তার মধ্যে ৪৪ শতাংশ, হ্রদ এর ৭১ শতাংশ, ৬৪ শতাংশ এবং উপসাগর ও মোহনায় স্কয়ার মাইলের ৩০ শতাংশকে দূষিত প্রাণী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ  নারীর ভূমিকা – সমাজে নারীর ভূমিকা – অনুচ্ছেদ জেনে নিন

পানি দূষণ রোধ করতে হলে কৃষকদের সবুজ সার ব্যবহার করতে হবে। লোকজনের স্বাস্থ্য সমস্ত শৌচকার নির্মাণ করতে হবে এবং জাহাজ মালিকদের জাহাজের নিচের স্তর তৈরিতে সতর্ক হতে হবে যেন তেল চুয়ে পানি দূষিত না হয়। আর এভাবে আমরা পানি দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। আর যদি পানি দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হবে।