ইনপুট ডিভাইস | Input Device

Input device | Image Internet

যে সব যন্ত্র বা ডিভাইস দ্বারা কম্পিউটারে কোন তথ্য দেওয়া হয় সেগুলো কে বলা হয় ইনপুট ডিভাইস(Input Device)। এই ডিভাইসগুলো দিয়ে আমরা কম্পিউটারকে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করি। যেহেতু এগুলো দিয়ে আমরা কম্পিউটারকে ইনপুট প্রদান করি সেজন্যে এগুলোকে ইনপুট ডিভাইস বলে।একেকটি ইনপুট ডিভাইসের কাজ একেক রকম। নিচে বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইসে নাম ও সংক্ষিপ্ত কাজ দেওয়া হল।

১। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট (Graphics Tablets)
২। ভিডিও ক্যাপচার হার্ডওয়্যার (Video Capture Hardware)
৩। ট্র্যাকবল (Trackballs)
৪। বারকোড রিডার (Barcode reader)
৫। ডিজিটাল ক্যামেরা (Digital camera)
৬। MIDI keyboard
৭। গেমপ্যাড (Gamepad)
৮। জয়স্টিক (Joystick)
৯। কিবোর্ড (Keyboard)
১০। ক্যামেরা (Cameras)
১১। মাইক্রোফোন (Microphone)
১২। মাউস (Mouse -pointing device)
১৩। স্ক্যানার (Scanner)
১৪। ওয়েবক্যাম (Webcam)
১৫। টাচপ্যাড (Touchpad’s)
১৬। ইলেকট্রিক হোয়াইটবোর্ড (Electronic Whiteboard)
১৭। OMR
১৮। OCR
১৯। লাইট পেন (Light Pen)
২০। পাঞ্চ কার্ড রিডার (Punch card reader)
২১। MICR (Magnetic Ink character reader)
২২। ম্যাগনেটিক টেপ ড্রাইভ (Magnetic Tape Drive)

কাজঃ

১। কী-বোর্ড

কম্পিউটারে লেখালিখির কাজের জন্য কী-বোর্ড (keyboard ) ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে লেখা টাইপ করা হয় এবং নির্দেশ প্রদান করা হয়। এটি বহুল ব্যবহৃত ইনপুট ডিভাইস। কী-বোর্ডের অনেকগুলো কী(key) রয়েছে। যেমন- নাম্বার কী দিয়ে সংখ্যা ইনপুট দেওয়া হয়, এলফাভেট কী দ্বারা অক্ষর বা বর্ণ ইনপুট করা হয়, ফাংশন কী দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশ ইনপুট করা হয়।

২। মাউস 

মাউসের কাজ হলো বিভিন্ন ধরণের নির্দেশ প্রদান করা। কম্পিউটার ব্যবহারে সুবিধা থাকায় মাউস(Mouse) খুব জনপ্রিয় ইনপুট ডিভাইস। কোন কিছু নির্বাচন করতে হলে সহজেই তার উপর মাউস পয়েন্টার নিয়ে সিলেক্ট করা যায়। ছবি আঁকা ও গ্রাফিক্সের কাজ করতে মাউস বেশি ব্যবহৃত হয়। মাউস বাটন চেপে কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

৩। স্ক্যানার

স্ক্যান করার জন্য এই ইনপুট ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে লেখা বা ছবিকে কম্পিউটারে ইনপুট করা হয়। স্ক্যানার(Scanner) এর মধ্যে যা রাখা হয় তার অনুলিপি কম্পিউটারে চলে আসে এবং তা সংরক্ষণ বা এডিট করা যায়। কাগজের ডকুমেন্ট স্ক্যানার ব্যবহার করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানো হয়।

৪। জয়স্টিক

কম্পিউটারে গেমস খেলার জন্য জয়স্টিক (Joystick)ব্যবহার করা হয়। এটি শিশুদের প্রিয় ইনপুট ডিভাইস। জয়স্টিকের খাড়া দণ্ডকে হাত দিয়ে মুভ করলে কম্পিউটারের মাউস পয়েন্টার নাড়াচাড়া করে।

৫। ডিজিটাইজার বা গ্রফিক্স ট্যাবলেট

এটি একটি কম্পিউটার ইনপুট ডিভাইস যা ব্যবহারকারীর হাতে আঁকা ছবি, এ্যানিমেশন এবং গ্রাফিক্সকে বিশেষ কলম সদৃশ স্টাইলাস দিয়ে আঁকার সুবিধা দেয়। বাস্তব কাগজ, কলম, তুলি, পেন্সিল ইত্যাদি দিয়ে ছবি আঁকার মতই গ্রাফিক্স ট্যাবলেটে ছবি আঁকা যায়। তবে এই ছবিটি হয় ডিজিটাল। এই সমস্ত ট্যাবলেট দিয়ে হাতে লিখা স্বাক্ষর ডেটা ইনপুট হিসেবে কম্পিউটারে দেয়া সম্ভব হয়।

৬। লাইট পেন

এটি দেখতে কলমের মত। এর মাথায় লাইট সেন্সর থাকে যা আলো অনুভব করতে পারে। এটি ব্যবহারকারীকে পর্দায় দেখতে পাওয়া বস্তু নির্দেশ করতে বা আঁকতে সাহায্য করে যেমনটা টাচস্ক্রীনে করা হয়। কিন্তু এটির মাধ্যমে কাজটি আরও অধিক সুক্ষতার সাথে করা যায়। প্রকৌশল নকশা, ডায়াগ্রাম ইত্যাদি তৈরিতে লাইট পেন ব্যবহৃত হয়।

৭। MICR (Magnetic Ink Character Recognition)

এই প্রযুক্তিটি পাঠকদের সরাসরি ডেটা সংগ্রহের ডিভাইসে তথ্য স্ক্যান করতে এবং পড়তে দেয়। বারকোড এবং অনুরূপ প্রযুক্তির বিপরীতে, MICR অক্ষরগুলি সহজেই মানুষ পড়তে পারে। MICR এনকোডযুক্ত নথিগুলোকে প্রচলিত OCR এনকোডেড নথিগুলির চেয়ে অনেক দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করা যেতে পারে। চৌম্বক কালি বা ফরোসোফেরিক অক্সাইডযুক্ত কালির সাহায্যে MICR লেখা হয়। এই কালির লেখা কাগজ শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রে রাখলে কালির ফেরোসোফেরিক অক্সাইড চুম্বকে পরিণত হয়। এরপর এই বর্ণচৌম্বকগুলো তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশের দ্বারা তড়িৎপ্রবাহ উৎপন্ন করে। এই আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের মান থেকে কোন বর্ণ পড়া হচ্ছে কম্পিউটার তা বুঝতে পারে ও সঞ্চিত রাখে।

ব্যাংকের চেকের চেক নম্বর পড়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক সকল তফসিলি ব্যাংকে MICR যুক্ত চেক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করেছে।

৮। OMR (Optical Mark Recognition)

এটি এমন একটি যন্ত্র যা পেন্সিল বা কালির দাগ বুঝতে পারে। পেন্সিলের দাগ বোঝা যায় গ্রাফাইটের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা বিচার করে এবং কালির দাগ বোঝা যায় কালির দাগে আলোর প্রতিফলন বিচার করে। সাধারণত নথি বা ফর্মগুলি থেকে মানব-চিহ্নিত ডেটা নেওয়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ উত্তরপত্র পরীক্ষা, বাজার সমীক্ষা, জনগননা ইত্যাদি কাজে OMR ব্যবহৃত হয়।

৯। OCR (Optical Character Recognition)

OCR হল হাতে লেখা বা টাইপরাইটারে টাইপকৃত লেখার ছবিকে (সাধারণত স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করা) কম্পিউটারে সম্পাদনাযোগ্য লেখায় অনূদিত করার যান্ত্রিক বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতি। এই যন্ত্র বিভিন্ন বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে। যন্ত্রটি কোন বর্ণ পড়ার সময় সেই বর্ণের গঠন অনুযায়ী কতকগুলো বৈদ্যুতিক সংকেত সৃষ্টি করে। এর সাথে আগে থেকে সঞ্চিত থাকা বিভিন্ন বর্ণের বৈদ্যুতিক সংকেত মিলিয়ে কোন বর্ণ পড়া হচ্ছে OCR তা বুঝতে পারে। চিঠির পিন কোড, ইলেকট্রিক বিল, ইন্স্যুরেন্স বিল, ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম, নোটিস ইত্যাদি পড়ার জন্য OCR ব্যবহৃত হয়।

১০। বারকোড রিডার

এটি একটি অপটিক্যাল বা আলোক ইনপুট ডিভাইস। বারকোডে চওড়াভাবে পর্যাযক্রমে কতগুলো বিভিন্ন প্রস্থের বার বা রেখা থাকে। একে Universal Product Codeও বলা হয়। দোকান থেকে পন্য কেনার সময় পন্যের গায়ে যে বারকোড থাকে তার সাহায্য জিনিসের নাম, উৎপাদকের নাম, মূল্য ইত্যাদি তথ্যসম্বলিত বিল তৈরি করা যায় এবং বিক্রিত জিনিসের স্টকও আপডেট করা হয়।

১১। সেন্সর

এটি কোন সংকেতকে সনাক্ত করতে পারে এমন একটি যন্ত্র। বিভিন্ন ধরনের সেন্সর ভিন্ন ভিন্ন সংকেত সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনঃ লাইট সেন্সর, সাউন্ড সেন্সর ইত্যাদি।

১২। ওয়েবক্যাম

এটি একটি ভিডিও ক্যামেরা যা কম্পিউটারে Read Time ছবি বা ভিডিও ইনপুট দিতে পারে। ইন্টারনেটে ভিডিও চ্যাটিং, ভিডিও রেকর্ড ইত্যাদির কাজে ব্যবহৃত হয়।

১৩। মাইক্রোফোন

এটি শব্দ রেকর্ডিং এক জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র। এটি এক ধরনের সেন্সর হিসেবে কাজ করে, যা শব্দ শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রুপান্তর করে। কম্পিউটার এই শক্তিকে তার মেমরিতে সংরক্ষণ করতে পারে।

১৪। ট্র্যাক বল

ট্র্যাক বল হল একটি ইনপুট ডিভাইস যা বেশিরভাগই মাউসের পরিবর্তে নোটবুক বা ল্যাপটপ কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন একটি বল যা মাউসে অর্ধেক ঢোকানো হয় এবং বলের উপর আঙ্গুল নাড়িয়ে পয়েন্টারটি সরানো যায়।

১৫। টাচপ্যাড

টাচপ্যাড কে ট্র্যাক প্যাডও বলা হয়, সাধারণত কীবোর্ডের নীচে একটি ল্যাপটপে অবস্থিত এবং এটি কার্সারকে ম্যানিপুলেট করতে ব্যবহৃত হয়