বর্ষাকালে অধিক বৃষ্টিপাত কেন হয়? |
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। প্রত্যেকটি ঋতু তার নিজস্ব সত্ত্বা নিয়ে আসে। বিভিন্ন ঋতুর এরুপ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যা ওই ঋতুর বিশেষত্ব বহন করে। যেমন বর্ষাকালের কথা বললে অধিক বৃষ্টিপাতের কথা চলে আসে। মূলত অধিক বৃষ্টিপাতের কারনেই আষাঢ়-শ্রাবণ এই দু মাসকে বলা হয় বর্ষাকাল।
তবে শুধু যে বর্ষাতেই অধিক বৃষ্টিপাত হয় তা কিন্তু নয়। গ্রীষ্মকাল থেকেই ঝড় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। কিন্তু বছরের অন্যান্য সময় বা ঋতুতে এমন দেখা যায় না। তাহলে কেন এমন ঘটে? অন্যান্য ঋতুর তুলনায় গ্রীষ্ম এবং বর্ষাতেই কেন এত বেশি বৃষ্টিপাত হয়? চলুন দেখে নেওয়া যাক এর কারন।
গ্রীষ্মকাল আসলে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এর কারন হল সূর্যের অবস্থান। এসময় সূর্য উত্তর গোলার্ধ্যে কর্কটক্রান্তি রেখার উপর খারাভাবে কিরণ দেয় । ফলে তাপ বায়ুমন্ডলে বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে না। বরঞ্চ এ অঞ্চলে অধিক তাপ আপতিত হওয়ার কারনে বায়ুমন্ডল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা অধিক হওয়ার কারনে বাতাসের ঘনত্ব কমতে থাকে। দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গপসাগরে তখন বায়ুচাপ বেশি এবং কম গরম থাকে। এই কম বেশি বায়ু চাপের কারণে একটা ব্যাপন প্রক্রিয়া ঘটে। অর্থ্যাৎ, বায়ু দক্ষিণে বঙ্গপসাগরের অধিক ঘনত্বের অঞ্চল থেকে কম ঘনত্বের দিক উত্তর দিকে ছুটে আসে। যেহেতু এ বাতাস সমুদ্র অঞ্চল থেকে আসে, তাই প্রবাহিত হওয়ার সময় সাথে নিয়ে আসে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প। এবার এই জলীয়বাস্প কর্কটক্রান্তিয় নিম্ন ঘনত্বের বায়ুমন্ডলে এসে জমতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে। এক সময় বৃষ্টি হিসেবে মাটিতে নেমে আসে।
বায়ুমন্ডলের এরুপ ঘনত্বের তারতম্য অন্যান্য ঋতুতেও হয়। কিন্তু অন্যান্য সময়, বিশেষ করে শীতকালে সূর্য তীর্যকভাবে আলো দেওয়ায় তাপ অধিক এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পরে। এতে করে কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল অধিক উত্তপ্ত হতে পারে না এবং বায়ুর ঘনত্বও কমে যায় না।
মূলত এমন কারণেই আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে এবং বিশেষ করে বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
Leave a comment