মেন্টোস এবং কোক বিস্ফোরণ একটি জনপ্রিয় এবং মজাদার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা যা কি না কার্বনেটেড পানীয় থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের দ্রুত নিঃসরণ প্রদর্শন করে। যখন মেন্টোস ক্যান্ডিগুলো কোকের বোতলে (বা যে কোন কার্বনেটেড পানীয়) ফেলে দেওয়া হয়, তখন এটি হঠাৎ এবং অত্যন্ত দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার ফলে চমতকার ফেনাযুক্ত গ্যাসীয় বিস্ফোরণ ঘটে।
এই বিস্ফোরক বিক্রিয়ার পিছনে প্রাথমিক কারণটি মেন্টোস ক্যান্ডির অনন্য পৃষ্ঠতলের বৈশিষ্ট্যের জন্য হয়ে থাকে। এছাড়াও আরো কিছু কারণ রয়েছে যার কারণে কোক এবং মেন্টোসের মিশ্রণে এমন বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিখ্যাত এই এক্সপেরিমেন্টের পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণগুলো।
১। মেন্টোসের পৃষ্ঠতলে গঠন
মেন্টোস ক্যান্ডির অসংখ্য খুদ্র খুদ্র গর্ত এবং ফাটলযুক্ত পৃষ্ঠ থাকে। এই মাইক্রোস্কোপিক ছিদ্র ও ফাটলগুলো কোকের দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসকে দ্রুত দ্রবণ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অসংখ্য নিউক্লিয়েশন সাইট সরবরাহ করে। ফলে দ্রবিভূত গ্যাস দ্রুত দ্রবণ থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। অর্থাৎ কার্বন ডাই অক্সাইড অণুগুলি এই রুক্ষ পৃষ্ঠগুলিতে জমাট ঘটতে থাকে এই জমাকৃত গ্যাসের ত্বরিত মুক্তি ঘটে।
২। কার্বনেটেড পানীয় তে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড
কোকের মতো সকল কার্বনেটেড পানীয়গুলিতে দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস থাকে। এই গ্যাস এই ধরনের পানীয়ের বৈশিষ্ট্যগত ঝাঝ এবং পরিস্ফুরণ এর জন্য দায়ী। মূলত প্রচন্ড চাপে এই গ্যাস কে কমল পানীয়তে দ্রবীভূত করে রাখা হয়। যখন Mentos যোগ করা হয় তখন হঠাৎ মেন্টসের পৃষ্ঠে থাকা লক্ষ লক্ষ খুদ্র ছিদ্রগুলোয় অসংখ্য কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বুদবুদ জমা হতে থাকে। যা কি না এক পর্যায়ে প্রচন্ড চাপে উপরের দিকে উঠে আসে। গ্যাসের ফলে চাপ তৈরি হলে বোতল থেকে তরল বের হয়ে যায়, যা বিস্ফোরক ‘গিজার’ প্রভাব তৈরি করে।
ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটে যে ফেনা এবং বিস্ফোরন প্রায় তাত্ক্ষণিকভাবে ঘটে যায়। প্রক্রিয়াটির চমতকার ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এই পরীক্ষাটিকে সকলের কাছে এত আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
Leave a comment