গ্রেফতারী পরােয়ানা
[Warrant of Arrest]
কোনো অপরাধে অভিযুক্তকে হেফাজত বা গ্রেপ্তারের জন্য আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশই হলো ওয়ারেন্ট(Warrant)। মূলত কোন অপরাধীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারী পরােয়ানা (Warrant of arrest) ইস্যুর মাধ্যমে দায়িত্ব অর্পণ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে পুলিশ কর্মকর্তা আদেশটি কার্যকরের মাধ্যমে অভিযুক্তকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। উল্লেখ্য,অপরাধীকে হেফাজতে নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রেফতারী পরােয়ানা সমনের[Summons] চেয়ে কঠোরতম একটি উপায়।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৭৫ ধারা এবং police regulation of Bengal (PRB),পিআরবির ৪৬৮ প্রবিধান অনুসারে আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট- আমলযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক হলে, আত্মগােপন করলে, সমন জারীর পরও কোন ব্যক্তি আদালতে হাজির না হলে কিংবা উল্লিখিত ব্যক্তিকে আটক করে আদালতে হাজির করার জন্য যে লিখিত (written) স্বাক্ষরিত ও আদালতের সীলমােহরিত যে আদেশনামা বা নির্দেশনামা প্রদান করা হয় তাকে গ্রেফতারী পরােয়ানা বলা হয়।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা একটি নির্দেশনামা যা মূলত সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী সরকারি দলিল বলা যায়। গ্রেফতারী পরােয়ানা প্রদানকারী আদালত কর্তৃক বাতিল বা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত অথবা কার্যকর না করা পর্যন্ত বলবৎ থাকে। ১৯২৮ (৭) পাট, ৪৭৮ মামলায় বলা হয়েছে ওয়ারেন্ট একবার ইস্যু করার পর তা বাতিল কিংবা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে, এমনকি তাতে। ফেরত পাঠাবার তারিখ উল্লেখ থাকলেও ১৪ ক্রিএলজে ১৪২ এ বলা হয়েছে যে। আদালত ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন কেবল সে আদালতই ওয়ারেন্ট বাতিল করতে পারেন।
গ্রেফতারী পরােয়ানার বৈশিষ্ট্য/শর্তাবলী
[Features/Conditions of warrant of arrest]
ফৌজদারী কার্যবিধি আইন অনুসারে গ্রেফতারী পরােয়ানার বৈশিষ্ট্য/শর্তাবলী নিচে তুলে ধরা হলো-
১. গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদালত কর্তৃক লিখিত হতে হবে।
২. এটি যে আদালত ইস্যু করবেন সে আদালতের প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে ।
৩. এটিতে অবশ্যই আদালতের সীলমােহর থাকতে হবে।
৪.পরােয়ানা তামিলকারী অফিসারের নাম ও পদবী উল্লেখ থাকবে। [এ প্রসঙ্গে আব্দুল গফুর বনাম সম্রাজ্ঞী; আরএলআর ২৩ কলকাতা ৮৯৬ মামলায় বলা হয়েছে যে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অবশ্য লিখিত হতে হবে এবং যিনি স্বাক্ষর করবেন তাতে তার স্বাক্ষর এবং সিলমোহর থাকতে হবে। এর কোনো একটি না থাকলে আইনের দৃষ্টিতে বাতিল বলে গণ্য হবে।]
৫. যে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা অপরাধীকে গ্রেফতার করতে হবে তার নাম, ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে।
৬. যে অপরাধে গ্রেফতার করা হবে সে অপরাধের ধারা উল্লেখ থাকবে।
৭. পরােয়ানায় জামানত গ্রহণের নির্দেশ থাকতে পারে।
৮. পরােয়ানা জামিনযােগ্য না জামিন অযােগ্য তা উল্লেখ থাকবে।
৯. যে আদালত পরােয়ানা ইস্যু করবে সে আদালত ব্যতীত অন্য কোন আদালত পরােয়ানা বাতিল করতে পারবে না।
গ্রেফতারী পরােয়ানা কখন ইস্য করা হয়
[When is an arrest warrant issued]
ফৌজদারী কার্যবিধি ৭৫ এবং পিআরবি প্রবিধান ৪৬৮ অনুসারে আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট-
১. অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক হলে।
২, গ্রেফতার এড়ানাের উদ্দেশ্যে আত্মগােপন করলে
৩. সমন জারীর পরও কোন ব্যক্তি আদালতে হাজির না হলে
উলিখিত ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করার জন্য আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারী পরােয়ানা ইস্যু করতে পারেন ।
Leave a comment