নাথ সাহিত্যের দুটি ভাগ। একভাগে সিদ্ধাদের কথা এবং গোরক্ষনাথ কর্তৃক মীননাথকে নারীমোহ থেকে উদ্ধার, অপর ভাগে রয়েছে রানী ময়নামতী ও তার পুত্র গোপীচন্দ্রের কথা ৷ নাথ সাহিত্যে উল্লিখিত প্রথম ভাগই গোরক্ষবিজয়। এ পর্যন্ত মীননাথের ও গোরক্ষনাথের কাহিনী নিয়ে যে সব কাব্য সম্পাদিত হয়েছে তা হচ্ছে-
কাহিনীটি কিন্তু নানাদিক থেকে উল্লেখযোগ্য। এতে একদিকে সন্ন্যাসী গোরক্ষনাথের মায়া- মোহবর্জিত নিস্পৃহ বৈরাগী মন এবং কর্তব্যকর্মে অবিচল নিষ্ঠা চমৎকার ফুটে উঠেছে, আর একদিকে মীননাথের সাংসারিক মায়ামুগ্ধ বিড়ম্বিত চরিত্রটিও সুপরিকল্পিত হয়েছে। দেহের উপর আত্মার জয় ঘোষণা করা এই সকল নাথপন্থী যোগী কবিদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সেই আদর্শটি, গোরক্ষবিজয় মীনচেতনে যা ব্যাখ্যাত হয়েছে। কেউ কেউ এর মধ্যে উচ্চতম কাব্যধর্ম লক্ষ্য করে একে মহাকাব্য বলতে দ্বিধা করেন নি। এর কাহিনী ও চরিত্র উল্লেখযোগ্য বটে, উপযুক্ত কবির হাতে পড়লে মহাকাব্যের মর্যাদা লাভ করতে পারত। কিন্তু স্বল্প শিক্ষিত কবিদের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই কথা বুঝানো যে, আত্মার মুক্তি ও মোক্ষ নিজের সাধনায় সম্ভব। সেদিক দিয়ে গোরক্ষবিজয় মধ্যযুগের মূল্যবান সৃষ্টি।
প্রশ্নঃ মর্সিয়া সাহিত্য কী?
মর্সিয়া সাহিত্য বলতে প্রধানত কারবালার কাহিনী, তথা হযরত আলী (রা) এর পুত্র, হযরত মুহম্মদ (স) এর দৌহিত্রের যে শোচনীয় ও বেদনার্ত পরাজয়, যা আমাদেরকে শোক সাগরে ভাসায় তাকেই বুঝায়। এ সাহিত্যে নায়ক বিজয়গৌরবহীন এবং পরাজিত ও পাশবিকভাবে নিষ্ঠুরের হাতে মৃত্যুবরণ করে বলেই এ সাহিত্যের রস হয়ে উঠে করুণ। শোকের বা কান্নার আধার বলেই এ বিলাপ প্রধান সাহিত্যের নাম মর্সিয়া বা শোক সাহিত্য।
১. দৌলত উজির বাহরাম খানের- ইমাম বিজয়;
Leave a comment