সর্ববাদ (Universalism) কাকে বলে?

অথবা, সর্ববাদ ব্যাখ্যা কর।

অথবা, সর্ববাদ কাকে বলে? 

অথবা, সর্ববাদ কি?

অথবা, Universalism বলতে কি বুঝায়?

ভূমিকাঃ নীতিবিদ্যার কাজ হলো নৈতিক মানদণ্ডের আলোকে সমাজবদ্ধ মানুষের ঐচ্ছিক আচরণের মূল্যায়ন করা। সমাজে বসবাসকারী ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। এরা উভয়ই পরস্পর পরিপূরক সম্পর্কে আবদ্ধ। এদের এই সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন মতবাদ গড়ে ওঠেছে। যেগুলো নীতিবিদ্যার আলোচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সর্ববাদ (Universalism): নৈতিক আদর্শ বা দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজের অপরাপর ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির সম্পর্কের বিষয়ে যে মতবাদ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সর্ববাদ বা Universalism অন্যতম। এই মতবাদ অনুসারে প্রত্যেক ব্যক্তির নৈতিক কর্তব্য হলো তার সমাজ বা সম্প্রদায়ের সামগ্রিক মঙ্গল সাধন করা। এ মতবাদ আত্মবাদ ও পরার্থবাদের উপাদানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের দাবি রাখে। কেননা সমাজের সার্বিক মঙ্গল ব্যক্তির নিজের ও অপরের মঙ্গলকে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। সর্ববাদ অনির্দিষ্টভাবে বিস্তৃতি লাভ করতে পারে ব্যক্তি তার নিজের সম্প্রদায়ের তার দেশের সমগ্র মানব জাতির এমন কি সমস্ত প্রাণিকূলের মঙ্গল কামনা করতে পারে।

আত্মবাদে যেখানে শুধুমাত্র আত্ম মঙ্গল বা নিজের স্বার্থ ও মঙ্গল অনুসন্ধান করতে বলা হয়। এখানে ব্যক্তি শুধমাত্র নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। এবং পরার্থবাদে নিজের কথা না ভেবে শুধুমাত্র অপরের মঙ্গল কামনায় এক স্বার্থ রক্ষার কথা বলা হয়েছে। সেখানে সর্ববাদ উক্ত দুটি কথাই বলে। অর্থাৎ ব্যক্তি শুধু নিজের স্বার্থ দেখাবে না সাথে সাথে অন্যান্য লোকের মঙ্গল বা স্বার্থের কথা চিন্তা করবে। অর্থাৎ সর্ববাদ সাধারণ স্বার্থ বা মঙ্গল রক্ষা করাকেই ব্যক্তির নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করে।

সর্ববাদ সকলের স্বার্থ রক্ষার কথা বলে। এর মূল কথা হলো ব্যক্তি নিজের স্বার্থ রক্ষার সাথে সাথে সমাজের অপর ব্যক্তির স্বার্থও রক্ষা করবে। এবং এভাবেই সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সর্ববাদ একটি সমন্বয়কারী মতবাদ। এটা ব্যক্তির নিজের সাথে পাশাপাশি অপরাপর ব্যক্তির স্বার্থ তথা সাধারণস্বার্থের কথা বলে। নীতি বিদ্যার অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সর্ববাদের গুরুত্ব অপরিসীম।