অথবা, অদৃষ্টবাদ কাকে বলে?
অথবা, অদৃষ্টবাদের ধারণাটি কী?
অথবা, অদৃষ্টবাদের মূল বক্তব্য কী?
ভূমিকাঃ মানব সমাজের বিচিত্র পরিবর্তনের ক্রমধারার মাঝে এক সময়ে তাদের স্বীয় ক্রিয়াকর্ম ও চিন্তায় স্বাধীনতাবোধ জেগে উঠে। সমষ্টির বিশ্বাস এবং ব্যক্তির চিন্তাধারার মধ্যকার সংঘর্ষের ফলে মনন বা ইচ্ছার স্বাধীনতার উদ্ভব।
অদৃষ্টবাদঃ স্বাধীন ইচ্ছাকে অস্বীকার করে যে মতবাদ সবকিছুকে অদৃশ্য ভাগ্যবিধাতার উপর ছেড়ে দেয় তাকে অদৃষ্টবাদ বলে । অদৃষ্টবাদের মতে, কোনো মানুষের পক্ষেই জাগতিক বা পার্থিব কোনো ঘটনাকে পরিবর্তন বা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, যদি তাতে কোনো অদৃশ্য ভাগ্যবিধাতার ইশারা না থাকে। কেননা ভাগ্যবিধাতাই যাবতীয় পরিবর্তন ও পরিবর্তনের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে থাকে। অদৃষ্টবাদিরা মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তাদের মতে, মানুষের কোন ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকতে পারে না। মানুষ হচ্ছে অদৃষ্টের নাচের পুতুল মাত্র । ভাগ্য মানুষকে যে দিকে পরিচালিত করে মানুষও সেদিকে পরিচালিত হয়। প্রকৃতির প্রতিটি ঘটনারই এভাবে পূর্বনির্ধারিত ডিক্রি বা নিয়তির অমোঘ বিধানকে মেনে চলতে হয়। তাই প্রকৃতির রাজত্বে স্বাধীনতা বা স্বাতন্ত্র্য বলে কোনো কিছুর অস্তিত্বকে স্বীকার করা যায় না। সুতরাং মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা নেই।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় ছোট খাট দু’য়েকটা ত্রুটি সত্ত্বেও ইচ্ছার স্বাধীনতা মতবাদ হিসাবে অদৃষ্টবাদ একটি চরমপন্থি মতবাদ। এটি মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে মানুষকে অদৃষ্টের হাতের পুতুলে পরিণত করেছে। এ ক্ষেত্রে মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের কোন অবকাশ নেই।
Leave a comment