প্রশ্নঃ বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সুবিধাসমূহ আলোচনা কর।

অথবা, বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার গুণাবলি কী কী?

অথবা, বিচার বিভাগীয় পর্যালোচার ইতিবাচক দিকসমূহ কী?

ভূমিকাঃ আমেরিকার রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাগুলোকে কার্যকর করার জন্য এবং আইন বিভাগ প্রণীত আইন ও শাসন বিভাগের কার্যক্রমের সাংবিধানিকতা বজায় রাখার জন্যই বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার উদ্ভব। সহজভাবে বলতে গেলে আইন অনুযায়ী কোন কাজকে কার্যকর বা অকার্যকর বলে ঘোষণা দেয়ার বিচার বিভাগীয় এখতিয়ারকে বুঝায়।

বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সুবিধাঃ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা কেবল নেতিবাচক দিকটিই সব নয়। উপর্যুক্ত আলোচনার বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার কেবল বিরূপ সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যবস্থার পক্ষেও কিছু বলার আছে।

১। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার সমীক্ষার ক্ষমতাকে কখনই দায়িত্বহীনভাবে খেয়ালখুশিমতো প্রয়োগ করে নি। মার্কিন কংগ্রেস ১৮০৩ সাল থেকে ১৯৭৬ সালের মধ্যে ৭০ হাজারের মতো আইন করেছে। সুপ্রিম কোর্ট বৈধতা বিচারের মাধ্যমে কেবল ১২০টি যুক্তরাষ্ট্রীয় আইনকে বাতিল করেছে।

২। সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতার অস্তিত্বের জন্য মার্কিন কংগ্রেস ও রাষ্ট্রপতি সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কংগ্রেস বা রাষ্ট্রীয় কোন কোন ক্ষেত্রে বাধা হয়ে সংযত হন, এ আশঙ্কায় যে কাজটি আদালত অবৈধ ঘোষণা করতে পারে।

৩। আদালতের সিদ্ধান্তকে কংগ্রেসও আইন করে পরিবর্তন করতে পারে। কংগ্রেস ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৭ সালের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ২১টি সিদ্ধান্তকে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে পরিবর্তন করেছে।

৪। Carr, Berastein and Murphy তাদের ‘Ameriean Democracy’ গ্রন্থে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দু’একটি ইতিবাচক দিক উল্লেখ করেছেন । অনেক ক্ষেত্রে আদালত কংগ্রেসের আইনকে অবৈধ ঘোষণা করে ইতিবাচক ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থার পথ উন্মুক্ত করে। সুপ্রিম কোর্ট বিদ্যালয় বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে সোয়েট বনাম পেইন্টার (১৯৫০) মামলার বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে যে মূল্যবোধ বর্তমান তাকে সুদৃঢ় করেছে।

উপসংহারঃ উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, বহু বিরূপ সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতার গুরুত্বকে অস্বীকার করা যাবে না। কারণ অনেক সময় চাপের মুখে বা উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে কংগ্রেস বা রাষ্ট্রপতি অনেক ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। আদালতের বৈধতা বিচারের মাধ্যমে এসব সিদ্ধান্তের পুনরায় বিচার করার সুযোগ পাওয়া যায় বা পরিবর্তনও করা যায়।