প্রশ্নঃ 
পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law) কাকে বলে? 

পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law): মূল আইনকে বাস্তবে প্রয়োগ করার জন্য যে আইন অনুসৃত হয় তাকে পদ্ধতিগত আইন বলে। বিচার প্রশাসনের জন্য মূল আইনের ন্যায় পদ্ধতিগত আইনও সমধিক গুরুত্বপূর্ণ। যেমন— বাংলাদেশে প্রযোজ্য দণ্ডবিধি আইনটি প্রণীত হয়েছিল ১৮৬০ সালে। ইহা মূলতঃ মৌল আইন। বিভিন্ন অপরাধের সংজ্ঞা, এর উপাদান ও শাস্তির বিধান এতে রয়েছে। কিন্তু ফৌজদারী আইন প্রশাসনের জন্য এগুলো যথেষ্ট নয়। একটি ফৌজদারী মামলা কোথায় ও কিভাবে করতে হবে, এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোথায় আপীল করতে হবে এ সব তথ্য এই আইনে নেই। এছাড়া অপরাধীদের গ্রেপ্তার, আদালতে উপস্থাপন, আদালত গঠন, মামলা পরিচালনা, নিষ্পত্তি ও রায় ইত্যাদি সবই পদ্ধতিগত প্ৰশ্ন যা দণ্ডবিধি আইনে নাই। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে বিচার প্রশাসনের জন্য এগুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধি বিধান থাকা প্রয়োজন। 

এ সকল পদ্ধতিগত প্রশ্নে ত্রুটির কারণে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে এবং একজন জঘন্য অপরাধীও যেমন শাস্তি এড়ায়ে যেতে পারে তেমনি একজন নিরপরাধ ব্যক্তিও শাস্তি পেতে পারে। এ সকল বিবেচনা করে ১৮৯৮ সালে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনটি প্রণীত হয়। কাজেই বলা যায় যে, পদ্ধতিগত আইন হচ্ছে সম্পূরক যা মৌল আইনে বর্ণিত অভীষ্ঠ লক্ষ্যে উপনীত হতে সাহায্য করে। মূল আইন যে অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে তা ভঙ্গ করলে পদ্ধতিগত প্রতিকার দেয় ৷ 

তাই এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে স্যামন্ড বলেন যে, আইনের যে শাখা মামলার প্রণালী নির্ধারণ করে তা হচ্ছে পদ্ধতিগত আইন প্রকৃতপক্ষে পদ্ধতিগত আইন মামলার কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে স্যামন্ডের মতে এ পার্থক্য শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, বাস্তব ক্ষেত্রে এর তেমন গুরুত্ব নেই। অনেক পদ্ধতিগত বিধি-বিধান তাদের বাস্তব কার্যকারিতার দিক দিয়ে সম্পূর্ণভাবে না হলেও উল্লেখযোগ্যভাবে মূল আইনের সম পর্যায়ের। তাই আপীল করার অধিকার, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সাক্ষ্যদানের অধিকার ইত্যাদি পদ্ধতিগত আইনের আওতাভুক্ত হলেও এগুলো অধিকার নির্ধারণ করে থাকে।