প্রশ্নঃ
 প্রশাসনিক আইন (Administrative Law) কাকে বলে? 

প্রশাসনিক আইন (Administrative Law): সংক্ষেপে বলতে গেলে প্রশাসন সংক্রান্ত আইনকে প্রশাসনিক আইন বলে। সংবিধানের বিধি অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয় কিন্তু তা বলবৎ করার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে প্রশাসনের উপর। প্রশাসনের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনবোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথোপযুক্ত ক্ষমতা দেয়া হয় এবং এই ক্ষমতা প্রয়োগ বা ব্যবহারের প্রধান নিয়ামক হচ্ছে নিজ বিচার ও বিবেচনা! এই বিচার, বিবেচনা প্রয়োগ যদি বিচারিক রীতিনীতি ঢাকা সমর্থিত না হয় তবে তা স্বেচ্ছাচারে পরিণত হয়। 

তাই থিওডোর রুজভোল্ট বলেন- “যাকে ন্যায় কাজ করতে দেয়া হয়, তাকে অন্যায় কাজ করারও ক্ষমতা দেয়া হয়।” শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শুল্ক, পরিবহন ইত্যাদি নাগরিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বিস্তৃত। তাই প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। 

মেইটল্যান্ড বলেন যে, আপনি যদি কুইন্স বেঞ্চ ডিভিশনের একখণ্ড আধুনিক রিপোর্ট দেখেন তাহলে লক্ষ্য করবেন যে, এতে লিপিবদ্ধ মামলাগুলোর প্রায় অর্ধেকই প্রশাসনিক আইন সংক্রান্ত। এতেই প্রতিফলিত হয় প্রশাসনিক আইনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।

প্রশাসনিক আইনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে প্রফেসর ওয়েড বলেন, প্রশাসনিক আইন মূলতঃ প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত, বিচার বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ বা ভারাপিত আইন প্রণয়নের সাথে নয়৷

ড. জেনিংস বলেন, “প্রশাসনিক আইন হচ্ছে প্রশাসন সংক্রান্ত আইন যা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের গঠন, ক্ষমতা ও কর্তব্যসমূহ নির্ধারণ করে।

প্রফেসর হল্যান্ড সরকারী আইনকে ৬ ভাগে বিভক্ত করেছেন এবং প্রশাসনিক আইনকে দ্বিতীয় ভাগে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তার মতে সাংবিধানিক আইন কাঠামোর সাথে সংযুক্ত এবং প্রশাসনিক আইন কার্যের সাথে জাড়িত।

প্রফেসর রোবসন (Robson)-এর মতে, সর্বসাধারণ ও সংস্থার অধিকার ও সম্পত্তির উপর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিচারিক প্রকৃতির এখতিয়ার প্রয়োগ হচ্ছে প্রশাসনিক আইন।

তাই দেখা যায় প্রশাসনিক আইনের কোন সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা নাই, কিন্তু এর ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে।