প্রশ্নঃ মহীসোপানের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কি কোন বিরোধ আছে? 

ভূমিকাঃ সমুদ্র আইন একটি আন্তর্জাতিক আইন। পূর্বের তুলনায় বর্তমানে সমুদ্রের ব্যবহার অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং সমুদ্রের নানামূখী ব্যবহারের ফলে এর গুরুত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্র সংক্রান্ত দু’টি কনভেনশন হলো ১৯৫৮ সালের জেনেভা কনভেনশন এবং ১৯৮২ সালের সমুদ্র সংক্রান্ত কনভেনশন। জ্যামাইকার মন্টিগো বে-তে ১৯৮২ সালের কনভেনশনটি অনুষ্ঠিত হয়।

মহীসোপানের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কি কোন বিরোধ আছেঃ বাংলাদেশের জলভাগ বেশ অগভীর এবং ক্রমশ ঢালু। যারফলে বাংলাদেশের মহীসোপান তটরেখা বা ভিত্তিরেখা থেকে ৩৫০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো এক্ষেত্রে পাশের দেশ ভারতের সীমানা মিশে যায়। এই কারণে বাংলাদেশের মহীসোপানের প্রান্ত সীমা ঘোষণা না করে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমে এটি নির্ধারণের প্রচেষ্টা ছিল। বাংলাদেশ এটিকে চায় সমতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে কিন্তু ভারত চায় সম-দূরত্বের ভিত্তিতে এটিকে নির্ধারণ করতে। কাজেই আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি বা আলোচনায় কোন অগ্রগতি হয়নি। দীর্ঘদিন এই অবস্থা বজায় থাকায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে সমুদ্র বিষয়ক স্থায়ী আদালতে আইনি কার্যক্রম শুরু করে। উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যে উক্ত আইনি কার্যক্রমের নিষ্পত্তি হয়েছে। নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত সমুদ্রসীমা বিষয়ক স্থায়ী আদালত কর্তৃক ২০১৪ সালের ৭ জুলাই ঘোষিত রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের সমুদ্র সীমার বিরোধের অবসান হয়। অর্থাৎ বর্তমানে মহীসোপানের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।

উপসংহারঃ সমুদ্র আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আইন। সমুদ্রের উপকূলে যে সকল রাষ্ট্র অবস্থিত সেই সকল দেশ এই আইনের বিশেষ সুবিধা ভোগ করে। আঞ্চলিক সমুদ্র এলাকার মধ্যে অন্যান্য দেশ শুধু নির্দোষ ভাবে চলাচল করতে পারে। অন্য কোন সুবিধা ভোগ করতে পারে না। কিন্তু উন্মুক্ত সমুদ্রে সকল দেশ সমান অধিকার ভোগ করে থাকে।