প্রশ্নঃ কখন রিসিভার নিয়োগ করা হয়? রিসিভারের ক্ষমতাসমূহ কি কি? কর্তব্যে অবহেলার জন্য রিসিভারের দণ্ড কি? রিসিভারের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি কি?
When can a Receiver be appointed? What are his powers? What penalties may be imposed upon a Receiver to breach his duties? What is the obligation of a Receiver?
রিসিভার নিয়োগঃ দেওয়ানী কার্যবিধির ৫১ ধারা অনুযায়ী এবং ৪০ নম্বর আদেশের ১ নম্বর বিধি অনুযায়ী আদালত সংগত মনে করলে যে কোন সময়ে কোন সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ করতে পারেন। ইহা আদালতের সুবিবেচনার উপর নির্ভরশীল হলেও রিসিভার নিয়োগের সময় যথাসম্ভব বিচার বিভাগীয় মূলনীতি ও প্রচলিত আইনের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়। এরূপ নিয়োগের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, মামলার বিষয়বস্তু সংরক্ষণ। শুধু সম্পত্তির ভাল ব্যবস্থাপনা বা রক্ষনাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের প্রয়োজন হলেই চলবে না বরং তা ন্যায় সঙ্গত ও সুবিধাজনক কিনা তা দেখতে হবে। আইনগত স্বত্বগণের অধীনে দাবি করছে এমন বিবাদীর দখলাধীন সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ করা যাবে না যদি না বাদীর উন্নততর স্বত্বাগম এবং আপাতদৃষ্টিতে ভাল মামলা থাকে।
রিসিভারের ক্ষমতাঃ যে আদালত রিসিভার নিয়োগ করে থাকেন সে আদালতই তার ক্ষমতা নির্ধারণ করে দেন। সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা আনয়ন, মামলা প্রতিহত করণ, পাওনা আদায়করণ, ব্যবস্থাপনা সংরক্ষন, রক্ষনাবেক্ষণ ও সম্পত্তির উন্নয়ন, ভাড়া প্রদান এবং দলিল কার্যকরী করার ব্যাপারে মালিকের যে ক্ষমতা রয়েছে তেমন সকল ক্ষমতা অর্পন করা যায়, অথবা আদালত যেরূপ ক্ষমতা উপযুক্ত মনে করবেন তা প্রদান করবেন।
রিসিভারের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ দেওয়ানী কার্যবিধির ৪০ নম্বর আদেশের ৩ নম্বর বিধিতে রিসিভারের কর্তব্য বর্ণিত · হয়েছে৷ প্রত্যেক রিসিভার-
(১) তেমন জামানত থাকলে যা আদালত উপযুক্ত মনে করবেন, সে সম্পত্তি থেকে যা গ্রহণ করবে তার যথারীতি হিসেব পেশ করবে;
(২) আদালত যেভাবে নির্দেশ দিবে সেভাবে তার হিসাব নিকেশ পেশ করবে;
(৩) আদালতের নির্দেশ মত তার নিকট পাওনা অর্থ পরিশোধ করবে; এবং
(৪) তার ইচ্ছাকৃত ভুল অথবা অবহেলার জন্য সম্পত্তির কোন ক্ষতি হলে সে তার ক্ষতিপূরণ করবে।
একজন রিসিভার হচ্ছে আদালতের কর্মচারী ও প্রতিনিধি। মামলার পক্ষসমূহের প্রতিনিধি নয়। তার দখলে যে সম্পত্তি থাকবে তা আদালতের দখলে আছে বলে গণ্য করা হবে। যে আদালত তাকে নিযুক্ত করেছে, তার অনুমতি ছাড়া সে মামলা দায়ের করতে পারে না এবং তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায় না। এছাড়া আদালতের অনুমতি ছাড়া রিসিভারের নিকট অর্পিত সম্পত্তি ক্রোক করা যায় না৷
কর্তব্যে অবহেলার জন্য রিসিভারের শাস্তিঃ একজন রিসিভার আদালতের নিদের্শ মত বা পদ্ধতিতে হিসেব-নিকেশ দাখিল করতে ব্যর্থ হলে অথবা আদালতের নির্দেশ মত তার নিকট হতে পাওনা অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বা তার ইচ্ছাকৃত ভুল বা বড় ধরনের অবহেলার দরুন সম্পত্তির কোন ক্ষতিসাধন করা হলে, আদালত তার সম্পত্তি ক্রোক বা বিক্রি এবং বিক্রিলব্ধ অর্থ দ্বারা তার নিকট হতে পাওনা পরিশোধ বা ক্ষতিপূরণের জন্য আদেশ দিতে পারেন। এর পরে ও যদি উদ্ধৃত থাকে তবে তা রিসিভারকে ফেরত দেয়া যেতে পারে। (আদেশ ৪০ বিধি ৪)
Leave a comment