প্রশ্নঃ রায় ও ডিক্রির মধ্যে নিম্নোক্ত পার্থক্য কী?
রায় ও ডিক্রির মধ্যে নিম্নোক্ত পার্থক্য বিদ্যমানঃ
(১) ডিক্রি হচ্ছে আদালত কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত এমন বক্তব্য যা কোন মামলার বিতর্কিত সকল বা যে কোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষসমূহের অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে। [দেওয়ানী কার্যবিধি ২(২) ধারা]
আরজি বাতিল এবং দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৭ ধারা এবং ১৪৪ ধারায় বর্ণিত কোন প্রশ্ন বিচারে নিষ্পত্তি হলে তা ও ডিক্রি হিসেবে গণ্য হবে।
তবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি ডিক্রির অন্তর্ভুক্ত হবে নাঃ
(ক) যে কোন রায় যা আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপীলের পর্যায়ে পড়ে অথবা,
(খ) অনুপস্থিতির জন্য কিংবা কোন নিয়ম বা নির্দেশ পালনে ব্যর্থতার জন্য কোন খারিজের আদেশ।
রায় হচ্ছে বিচারক কর্তৃক ডিক্রি বা আদেশ প্রদানের ভিত্তি বর্ণনা। দেওয়ানী কার্যবিধির ৩৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, মামলার শুনানির পর আদালত রায় ঘোষণা করবেন এবং রায়ের ভিত্তিতে ডিক্রি প্রদান করা হবে। একটি রায়ে সাধারণত নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
(ক) মামলার একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি;
(খ) বিচার্য বিষয়সমূহ;
(গ) প্রদত্ত সিদ্ধান্ত;
(ঘ) এরূপ সিদ্ধান্তের যুক্তি।
(২) ডিক্রি হচ্ছে রায়ের চূড়ান্ত পর্যায় কিন্তু রায় হচ্ছে ডিক্রির ভিত্তি।
(৩) রায়ে ডিক্রি ও আদেশ দুই-ই থাকতে পারে। তাই রায় ডিক্রি হতে বেশী বিস্তৃত।
(৪) প্রত্যেক ডিক্রি আপীলযোগ্য, কিন্তু প্রত্যেক রায় আপীলযোগ্য নয়, যেমন কতিপয় আদেশ সম্বলিত রায় আপীলযোগ্য নয়।
(৫) ডিক্রির শ্রেণীবিভাগ আছে। যেমন-প্রাথমিক ডিক্রি ও চূড়ান্ত ডিক্রি, সম্মতিমূলক ডিক্রি, পাল্টা ডিক্রি ইত্যাদি। কিন্তু রায়ের কোন শ্রেণীবিভাগ নেই।
(৬) ডিক্রি রায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, কিন্তু রায় সাক্ষ্য প্রমাণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
মোটামুটি এভাবেই রায় ও ডিক্রির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হয়।
Leave a comment