অথবা, কর্তব্য কী?
ভূমিকাঃ আধুনিক রাষ্ট্র যেমন নাগরিককে বিভিন্ন প্রকার সুযােগ-সুবিধা প্রদান করেছে তেমনি নাগরিকদেরও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু কর্তব্য রয়েছে। একজন সুনাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের প্রতি যেসব অধিকার রয়েছে সেটিই হচ্ছে কর্তব্য।
কর্তব্যঃ আইনের দ্বারা স্বীকৃত অধিকার উপভােগ করার জন্য যেসব দায়িত্ব পালন করতে হয়, তাকে কর্তব্য বলে। অধ্যাপক লস্কির মতে, কর্তব্য বলতে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গীন কল্যাণের জন্য কোনাে কিছু করা বা করার দায়িত্বকে বুঝায়। নিম্নে কর্তব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করা হলাে-
(১) রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্যঃ কোনাে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য কর্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের নাগরিকগণ যদি দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে, তাহলে রাষ্ট্র স্থিতিশীল থাকবে। সুতরাং কর্তব্য পালন করা অধিকার উপভােগ করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
(২) রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে সুসংহত, সুদৃঢ়, সচল ও গতিশীল করেঃ অধিকার নাগরিকের যেমন সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনকে পরিপূর্ণ করে তােলে, নাগরিকের কর্তব্য তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাকে সুসংহত, সুদৃঢ়, সচল ও গতিশীল করে তােলে।
(৩) আইনের শাসন সুদৃঢ় করেঃ কর্তব্য আইনের শাসনকে সুদৃঢ় করে। নাগরিকদের কর্তব্য তীক্ষ্ণ হলে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না। ফলে অধিকার ভােগ নিশ্চিত করে।
(৪) সুশাসন নিশ্চিত করেঃ কোনাে একটি রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণের জন্য সুশাসন একান্ত আবশ্যক। রাষ্ট্রের প্রত্যেক ব্যক্তি যদি তাদের কর্তব্য পালনে সচেষ্ট হয়, তাহলে উক্ত রাষ্ট্রে অবশ্যই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, যেটি আমাদের সকলের কাম্য।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায়, রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সচল, প্রাণবন্ত, ন্যায়ানুগ করার জন্য নাগরিকদের যে দায়িত্ব সেটিই হচ্ছে কর্তব্য। অধিকার ভােগ এবং কর্তব্য পালনের মধ্যদিয়ে নাগরিক জীবন সংহত ও উন্নত হয়।
Leave a comment