অথবা, অর্থনীতি কাকে বলে?
উত্তরঃ ‘অর্থনীতি’ শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘Oikonomia’ থেকে। যা দ্বারা গার্হস্থ্য ব্যবস্থাপনা বুঝায়। মূলত গার্হস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রায় একই ধরনের। একটি পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পরিবারই নির্ধারণ করে পরিবারের সদস্যরা কে কি কাজ করবে। যেমন- কে রান্না করবে, কে অর্থের সংস্থান করবে, কে কাপড়-চোপড় ধৌত করবে, কে টিভি দেখবে ইত্যাদি। এসব সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সামর্থ্য, প্রচেষ্টা ও ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারকে দুপ্রাপ্য সম্পদ এদের মধ্যে বন্টন করতে হয়।
একইভাবে পরিবারের মত সমাজকেও বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সমাজকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় সমাজে কি কি কাজ হবে, কে কোন ধরনের কাজ করবে ইত্যাদি। যেমন- কে খাদ্য উৎপাদন করবে, কে কাপড় তৈরি করবে, কে কম্পিউটার সফ্টওয়্যারের কাজ করবে ইত্যাদি। এসব সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সমাজকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় অর্থনীতিতে প্রাপ্তব্য সম্পদ কিভাবে কাজে লাগাবে এবং উৎপাদিত দ্রব্য বা সেবা কাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।
অর্থনীতিতে প্রাপ্তব্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এসব সম্পদ দুপ্রাপ্য। আমরা আগেই জেনেছি মানুষ যা চায় তার পুরােটাই এই সীমিত সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন করা সম্ভব নয়। পরিবার যেমন তার প্রত্যেক সদস্যদের সব আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম নয়, ঠিক তেমনি সমাজও সব মানুষের চাওয়া অনুযায়ী সবচেয়ে উন্নত জীবনযাত্রার মান প্রদান করতে পারে না।
অর্থনীতি এমন একটি শাস্ত্র যেখানে সীমিত সম্পদ দ্বারা অসীম অভাব মেটানাের প্রচেষ্টা নিয়ে আলােচনা করা হয়। অর্থাৎ দুপ্রাপ্য সম্পদের মাধ্যমে মানুষের বিকল্প অভাব পূরণের উপায়সমূহের আলােচনা করে অর্থনীতি।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এল. রবিন্স এর সংজ্ঞানুযায়ী- “অর্থনীতি এমন একটি বিজ্ঞান যা অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহারযােগ্য দুপ্রাপ্য সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধন সংক্রান্ত মানুষের আচরণ বিশ্লেষণ করে।”
উপরিউক্ত আলােচনা থেকে বলা যায়, সমাজের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের উপায় বিশ্লেষণই অর্থনীতির বিষয়বস্তু।
Leave a comment