প্রশ্নঃ চর্যাপদের নামকরণের বিষয়টি সংক্ষেপে লেখ।

উত্তরঃ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাপদ একটি মাইলস্টোন। হয়তাে প্রাচীনতম ও প্রথমও। ১৯০৭ সালে মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে যে পুঁথিটি উদ্ধার করেন এবং ১৯১৯ সালে সে পুঁথিটি প্রকাশকালে নামকরণ করেন চর্যাপদ। তবে তার উদ্ধারকৃত পুঁথিটির নাম ছিল চর্যাচর্যবিনিশ্চিয়।

পুঁথিটিতে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নাম যেমন ছিল তেমনি প্রথম বন্দনা শ্লোকে ‘আশ্চর্য চর্যাচয়’ শব্দটিও পাওয়া যায়। তাই অনেক পণ্ডিতই মনে করেন যে পুঁথিটির আসল নাম আশ্চর্য চৰ্য্যাচয়’। তবে প্রবােধচন্দ্র বাগচী, ডঃ সুকুমার সেন প্রমুখ বলেন যে, পুঁথিটির আসল নাম ছিল “চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়-এর চর্যাপদ নামকরণ করায় মনীন্দ্রমােহন বসু বলেছেন যে, যেহেতু পুঁথির গায়ে যে নাম রয়েছে তাতে যখন বিষয়বস্তুর সাথে নামের সঙ্গতি মেলে তখন নাম পরিবর্তন না করাই উচিত ছিল। কেননা গ্রন্থটিতে প্রােথিত বিষয়বস্তু বৌদ্ধ সহজযান মতে ধর্মীয় তত্ত্ব ও জীবনাচরণ।

‘চয্যা’ অর্থ আচরণীয় এবং ‘অচয্যা’ অর্থ অনাচরণীয়। অর্থাৎ স্পস্ট যে গ্রন্থটি বলে দিচ্ছে মানব জীবনে কোন্‌টি আচরণীয়, এবং কোনটি অনাচরণীয়।