উত্তরঃ মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে প্রধানত দুটি ধারা- (ক) মৌলিক সাহিত্যের ধারা, (খ) অনুবাদ সাহিত্যের ধারা।
(ক) মৌলিক সাহিত্যের ধারাঃ মধ্যযুগে যে সমস্ত কাব্য মৌলিক, পৌরাণিক, আধা পৌরাণিক, দেবনির্ভর, মহামানবের জীবনকেন্দ্রিক, ধর্মনির্ভর রচনা ইত্যাদি যা পূর্ববর্তী কোন গ্রন্থ হতে গৃহীত নয়, সাধারণভাবে এসব রচনা মৌলিক সাহিত্য নামে পরিচিত। মৌলিক সাহিত্যের ধারার মধ্যে—
১. পদাবলী সাহিত্যের ধারা- (ক) গীতিকবিতা, (খ) কাহিনী কবিতা, (গ) জীবনী সাহিত্য ।
২. মঙ্গলকাব্যের ধারা—
(i) প্রধান মঙ্গলকাব্য— মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, বিশমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল।
(ii) অপ্রধান মঙ্গলকাব্য — রায়মঙ্গল, শীতিলামঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, কমলামঙ্গল, গঙ্গামঙ্গল, সূর্যমঙ্গল, সারদামঙ্গল।
৩. নাথ সাহিত্যের ধারা— প্রধান কবি ও কাব্য
(i) ভীমসেন রায় – মীনচেতন
(ii) ফয়জুল্লাহ— গোরক্ষ বিজয়
(iii) শুকুর মামুদ— গোপীচন্দ্রের সন্ন্যাস।
৪. দোভাষী পুঁথি সাহিত্যের ধারা— এ ধারার কবি শাহ গরীবুল্লাহ, সৈয়দ হামজা, আব্দুর রহিম।
৫. রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান— সমগ্র মধ্যযুগ ধরে লায়লী মজনু, মধুমালতী, সয়ফুল মুলুক বদিউজ্জামান, সতীময়না লোর চন্দ্রানী, গুলে বকাওলী, মৃগাবতী, গদামল্লিকা, হানিফা কয়রাপরী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য প্রণয়োপাখ্যান রচিত হয়।
৬. সত্যপীর বা সত্য নারায়ণের পাঁচালী—হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মিলনার্থে সত্য নারায়ণকে নিয়ে শেখ ফয়জুল্লাহ, শাহ গরীবুল্লাহ প্রমুখ সত্যপীরের পাঁচালি রচনা করেন।
(খ) অনুবাদ সাহিত্যের ধারাঃ হিন্দু ও মুসলমান কবিরা আরবি, ফারসি, উর্দু, হিন্দি, সংস্কৃত ভাষার উল্লেখযোগ্য কাব্য অনুবাদ করেন।
(i) সংস্কৃত রামায়ণ থেকে কৃত্তিবাস— কৃত্তিবাসী রামায়ণ।
(ii) সংস্কৃত মহাভারত থেকে অনুবাদ করেন কাশীরাম দাস।
(iii) সংস্কৃত থেকে মালাধর বসু— শ্ৰীকৃষ্ণ বিজয়
(iv) হিন্দি ‘পদুমাবৎ’ থেকে আলাওল— পদ্মাবতী
(v) ফারসি থেকে জৈনুদ্দীন— রসুল বিজয়
(vi) আরবি থেকে শাহ মুহম্মদ সগীর— ইউসুফ জোলেখা।
Leave a comment