প্রশ্নঃ প্রাণবাদের বৈশিষ্ট্য কী?

অথবা, প্রণবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর।

ভূমিকাঃ সচরাচর আমরা যেসব বস্তু প্রত্যক্ষ করি তাদের তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। এগুলাে হলাে- ১. নির্জীব বা প্রাণহীন যারা জড়, ২. সজীব বা যাদের প্রাণ আছে এবং ৩. জীবের মধ্যে যাদের চেতনা আছে অর্থাৎ যারা চেতনশীল প্রাণী অর্থাৎ মানুষ। প্রাণ বলতে আমরা এমন এক জীবনীশক্তিকে বুঝি, যার ফলে জীবের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশ সাধন, ঐক্য স্থাপন, দেহের ক্ষয়পূরণ, পারিপার্শ্বিকের সাথে দেহের সামঞ্জস্য বিধান, দেহ থেকে দেহের উৎপাদন অর্থাৎ বংশবৃদ্ধিকরণ প্রভৃতি কাজ সাধিত হয়।

প্রাণের বৈশিষ্ট্যঃ নিম্নে প্রাণের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলাে-

(১) প্রাণ বা জীবন দেহকে আশ্রয় করে নিজেকে বিকশিত করে। দেহবিচ্ছিন্ন প্রাণের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না।

(২) প্রাণ নিজেকে অন্যের মধ্যে সংক্রমিত করে তার বংশ বিস্তার করে।

(৩) প্রাণ জৈবিক ক্রিয়াসমূহকে সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে জীবদেহের কল্যাণ সাধন করে।

(৪) প্রাণ উদ্দীপকের ডাকে সাড়া দেয়।

(৫) প্রাণ দেহের মধ্যে এমন শক্তি উৎপন্ন করে, যার ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে পরিবর্তন ও ক্রমবিকাশ সাধন হয়।

(৬) প্রাণের খাদ্যের প্রয়ােজন হয় এবং এ খাদ্য সে বাইরের পরিবেশ থেকে আহরণ করে।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাণ বা জীবন হলাে এক প্রকার সংগঠন শক্তি, যা দেহের সমস্ত ক্রিয়া-কর্ম নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, জীবদেহ কেবল জড় পদার্থ নয় বরং জড়কে নিয়ন্ত্রণ করার শক্তিও তার আছে। এই শক্তিই প্রাণশক্তি, যা জড়ের গতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং অজীবজনি মতবাদ ও জীবজনি মতবাদের মধ্যে জীবজনি মতবাদই সঠিক ও যুক্তিযুক্ত মতবাদ বলে মনে হয়।