প্রশ্নঃ “কাদেরের উগ্র-দুর্দান্ত স্বভাব বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা না হয়ে আরাে তেজী হতে থাকে।”- উক্তিটির আলােকে কাদেরের শৈশব-কৈশােরের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘চাঁদের অমাবস্যা’ উপন্যাসের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রটি হচ্ছে কাদের- ঔপন্যাসিক প্রদত্ত উক্তির মধ্য দিয়ে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন।

জ্যেষ্ঠভ্রাতা দাদাসাহেবের সঙ্গে কাদেরের বয়সগত ব্যবধান ত্রিশ বছরের। কাদেরের জন্মকালে দাদাসাহেবের ‘ওয়ালেদ বয়ােবৃদ্ধ’। শেষ-বয়সের সন্তান কাদেরের প্রতি তাই তার পিতার মাত্রারিক্ত স্নেহ ও প্রশ্রয় ছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সমান্তরালভাবে কাদেরের স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত বিকাশ ঘটেনি। সে তার ‘অদম্য খেয়ালি ভাব, উগ্র মেজাজ এবং সৃষ্টিছাড়া দুরন্তপনা’-সহই বেড়ে উঠেছিল।

পরবর্তীকালে কাদেরের এই অন্তর্গত স্বভাব প্রশমিত ও সংযত হয়নি। বিদ্যালয়ে গেলেও স্কুলের শৃঙ্খলা ও নিয়মনীতির প্রতি অনিষ্ঠ ও বীতশ্রদ্ধ কাদের কেবলই পরিজনদের কাছে ‘বিদ্রোহী ছেলে’ বলে পরিচিত হয়েছে, বিদ্যালাভ করতে পারেনি। তাছাড়া সে বয়ােপ্রাপ্ত হলেও তার আচরণের কোনাে পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। কাদেরের উগ্র-দুর্দান্ত স্বভাব বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা না হয়ে আরাে তেজী হতে থাকে।

সুতরাং বলা যায়, অলস নিষ্কর্মা ও লম্পট কাদের বড়বাড়ির সদস্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে নিজের চারিপাশে আভিজাত্যময় ও অলৌকিক একটি দুর্গ তৈরি করেছে। এই দুর্গের আড়ালে তার প্রকৃত স্বরূপকে সে লুকিয়ে রাখতে পেরেছে।