অথবা, সার্বভৌমত্বের বিভিন্ন দিক সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
ভূমিকাঃ সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়। যে চারটি উপাদানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র গঠিত তাদের মধ্যে সার্বভৌমত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযােগ্য উপাদান। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও স্বরূপ বহুলাংশে সার্বভৌম ক্ষমতার প্রকৃতি ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে।
সার্বভৌমত্বের প্রকারভেদঃ সার্বভৌম ক্ষমতার অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি অনুযায়ী একে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নে সার্বভৌত্বের বিভিন্ন দিক আলােচনা করা হলাে-
(১) আইনগত সার্বভৌমত্বঃ আইনগত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে সেই সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত আদেশ আইনে রূপ লাভ করে এবং আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয়। অর্থাৎ আইন প্রণয়নের চূড়ান্ত ক্ষমতাই আইনগত সার্বভৌমত্ব।
(২) রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বঃ রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে বুঝায় রাষ্ট্রের যে সমষ্টিগত প্রভাব আইনগত সার্বভৌমত্বের পেছনে অবস্থান করে, সেগুলাের ঐক্যবদ্ধ বা সমষ্টিগত রূপ।
(৩) জনগণের সার্বভৌমত্বঃ জনগণের সার্বভৌমত্বের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে জনগণই সার্বভৌম। অর্থাৎ জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। জনগণের সম্মতিই হল রাষ্ট্রের ভিত্তি এবং জনগণের নির্দেশই হলাে আইন। রাষ্ট্রের এলাকার ভেতরে এই গণশক্তির.ওপরে আর কোনাে ঊধ্বর্তন শক্তি নেই।
(৪) অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বঃ অভ্যন্তরীণ সার্বভৌম ক্ষমতার বলে রাষ্ট্র তার অধীনে সকল জনসমষ্টি ও সকল সংস্থার পূর্ণ আনুগত্য লাভ করে। কেউ রাষ্ট্রের আদেশ ও নিষেধ অমান্য করলে তাকে চরম দণ্ড দেয়া হয়। অভ্যন্তরীণ সার্বভৌম ক্ষমতার বলে রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করে যা সকলের জন্য অবশ্য পালনীয়।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সার্বভৌমত্ব হল রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য এ চরম ক্ষমতা প্রয়ােগ করা হয়। একমাত্র সার্বভৌমত্বের হাতেই রাষ্ট্রের চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে।
Leave a comment