বহুরূপতাঃ যদি কোন মৌল ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকৃতিতে থাকতে পারে তার এ ধর্মকে বহুরূপতা বলে।
যেমনঃ কার্বনের বহুরূপতা হচ্ছে- গ্রাফাইট, হীরক, কয়লা ইত্যাদি।
কার্বনের রূপভেদঃ কার্বন একটি বহুরূপী মৌল। এর অনেক রূপভেদ আছে। কার্বনের রূপভেদকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা- স্ফটিকাকার বা দানাদার ও অদানাদার।
স্ফটিকার কার্বনের রূপভেদঃ স্ফটিকার কার্বনের রূপভেদ হচ্ছে ডায়মন্ড ও গ্রাফাইট।
অদানাদার কার্বনের রূপভেদঃ অদানাদার কার্বন প্রকৃতিতে নানা রূপে থাকে। যেমনঃ কাঠ কয়লা, প্রাণিজ কয়লা, ভুসা কয়লা, কোক কার্বন, কয়লা, গ্যাস কার্বন।
কার্বন একটা বিজারক পদার্থ। কার্বন দ্বারা ধাতুর অক্সাইডকে বিজারিত করে মুক্ত ধাতুতে রুপান্তর করা যায়।
সালফারের বহুরূপতাঃ প্রকৃতিতে সালফারের অনেকগুলো রূপভেদ আছে। যেমনঃ দানাদার, অদানাদার ও তরল সালফার।
দানাদার সালফারঃ দানাদার সালফারের দুটি রূপভেদ আছে। ১. রম্বিক বা আলফা সালফার ২. মনোক্লিনিক বা বিটা সালফার।
অদানাদার সালফারঃ অদানাদার সালফারের দুটি বহুরূপতা হচ্ছে- ১. প্লাস্টিক বা নমনীয় বা গামা সালফার, ২. দুগ্ধ বা ডেল্টা সালফার।
তরল সালফারঃ তরল সালফারের রূপভেদ হচ্ছে – ১. ল্যামডা সালফার, ২. মিউ সালফার।
এছাড়াও সালফারের আরেকটি বহুরূপতা হচ্ছে কলয়ডেল সালফার। দানাদার সালফারের রম্বিক ও মনোক্লিনিক উভয়ের আণবিক সংকেত S₈ . তবে এদের কেলাস গঠনের পার্থক্য রয়েছে। রম্বিক সালফার অষ্টতলকীয় ও মনোক্লিনিক সালফার প্রিজমেটিক কেলাস গঠন করে। এদের বহুরূপতা এনানসিওট্রোপিক। তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে বহুরূপতা যেকোনো একদিকে প্রদর্শন করতে পারে। যেমনঃ 95.6ºC তাপমাত্রার উপরে মনোক্লিনিক সালফার স্থায়ী কেলাস গঠন করে। আবার, 95.6ºC তাপমাত্রার নিচে রম্বিক সালফার স্থায়ী কেলার গঠন করে।
অক্সিজেনের বহুরূপতাঃ প্রকৃতিতে অক্সিজেনের দুইটি বহুরূপতা বিদ্যমান আছে। যার একটি হচ্ছে ড্রাই অক্সিজেন বা অক্সিজেন নামে পরিচিত। এর সংকেত O₂ . অপরটি হচ্ছে ট্রাই অক্সিজেন যা ওজন নামে পরিচিত। এর সংকেত O₃ . অক্সিজেনের বহুরূপতা একমুখী বা মনোট্রোপিক। অক্সিজেন শক্তি শোষণ করে ওজোন গ্যাসে পরিণত হয়। অপরদিকে ওজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে শক্তি বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন উৎপন্ন করে।
3O₂ <———> 2O₃
এ স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তন সব অবস্থায় শুধু এক দিকে ঘটে। এজন্য এই পরিবর্তনকে একমুখী বা মনোট্রোপিক পরিবর্তন বলে।
ফসফরাসের বহুরূপতাঃ প্রকৃতিতে ফসফরাসের দুটি বহুরূপতা আছে। একটি হল শ্বেত ফসফরাস (P₄) এবং অপরটি হচ্ছে লোহিত ফসফরাস (Pn)। লোহিত ফসফরাসের সুস্থিতি, শ্বেত ফসফরাসের চেয়ে বেশি। এছাড়াও প্রকৃতিতে ফসফরাসের আরেকটি বহুরূপতা হচ্ছে কাল ফসফরাস। চারটি ফসফরাস পরমাণু সমযোজী বন্ধনের মাধ্যমে শ্বেত ফসফরাসের চতুস্তলকীয় গঠন তৈরি করে। প্রকৃতিতে শ্বেত ফসফরাস কঠিন অবস্থায় থাকে। তবে শ্বেত ফসফরাসের অণুগুলি দুর্বল ভ্যানডার ওয়ালস বল দ্বারা আবদ্ধ থাকে বলে এটি মোমের মত নরম হয়। শ্বেত ফসফরাস স্থিতিশীলতা কম হওয়ায় এটি বেশ সক্রিয়।
অপরদিকে, লোহিত ফসফরাস একটি উচ্চ পলিমার হওয়ায় এটি বেশ স্থায়ী।
Leave a comment