সাংস্কৃতিক বিশ্বায়ন

সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াকে অনেক সময় ‘ম্যাকডোনাল্ডীকরণ’ (McDonaldization) নামেও অভিহিত করা হয়। সাংস্কৃতিক বিশ্বায়ন হল একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর একটি অংশে উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রী, ধ্যান-ধারণা এবং তথ্যাদি এক বিশ্ব-ধারার সামিল হয়ে পড়ে। তারফলে বিভিন্ন জাতি, অঞ্চল এবং ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সাংস্কৃতিক পার্থক্যসমূহ অপসারিত হয়। আন্তর্জাতিক বা বহুজাতিক কোম্পানীসমূহের উদ্ভব ও বিকাশ এবং বিশ্ব-দ্রব্যসামগ্রীর উদ্ভব আংশিকভাবে বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াকে পরিচালিত করেছে। তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক বিকাশ ও বিস্তার, উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্তার, ইন্টারনেট, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামো এবং বিভিন্ন বিশ্ব মাধ্যম করপোরেশন বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াকে উজ্জীবিত করেছে।

তবে সংস্কৃতি বিশ্বায়নকে যেমন সাহায্য করে, তেমনি প্রতিবন্ধকতাও করে। বিশ্বায়নের উপাদান বা শক্তিসমূহ সংস্কৃতির দ্বারা যেমন সমৃদ্ধ হয়, তেমনি প্রতিহতও হয়। হলিউডের সিনেমাসমূহ পৃথিবীব্যাপী প্রদর্শিত হয়। অ্যাডিডাস খেলাধূলার পণ্য-সামগ্রী দুনিয়াজুড়ে বিক্রী হয়। কোকাকোলার বাজার বিশ্বব্যাপী। ম্যাকডোনাল্ড-এর চটজলদি খাবারদাবার বিশ্বের বাজার ছেয়ে গেছে। দুনিয়াজুড়ে বিক্রি হয় এ রকম পণ্য সামগ্রী বহু ও বিভিন্ন। কিন্তু এই সমস্ত আন্তর্জাতিক পণ্যসামগ্রীকে দেশীয় ও স্থানীয় সংস্কৃতি এবং সামাজিক রীতিনীতির স্পর্শকারতাকে মর্যাদা দিয়ে চলতে হয়।

সামাজিক বিশ্বায়ন

বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার সুবাদে আর্থনীতিক ও রাজনীতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন বা রূপান্তর পরিলক্ষিত হয়। সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনসমূহ সামাজিক ক্ষেত্রে অধিকতর সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির সহায়ক, নাকি দ্বন্দ্ব ও দারিদ্র্যের জন্ম দেয়, সে বিষয়ে অল্পবিস্তর বিতর্ক বর্তমান। বস্তুত বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজব্যবস্থাসমূহ নিজেদের কীভাবে পরিবর্তিত বা রূপান্তরিত করে, তার উপরই সমগ্র বিষয়টি বহুলাংশে নির্ভরশীল। আর্থ-রাজনীতিক ক্ষেত্রে যেমন বিশ্বায়ন বিদ্যমান বা সাবেকি ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জে জানায়, সামাজিক ক্ষেত্রেও বিশ্বায়ন অনুরূপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

সামাজিক বিশ্বায়নও হল একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার প্রভাবে ঐতিহ্যবাদী সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ হীনবল হয়ে পড়ে। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের স্বরূপত্ব সৃষ্টি হয় নতুন করে। নতুন পরিচয়ের সুবাদে মানুষ আর বিশেষ কোন জনসম্প্রদায়ের বা জাতির সদস্য থাকে না। প্রাক্‌ আধুনিক দুনিয়ায় মানুষের পরিচয়ের প্রেক্ষিতসমূহ ছিল সংকীর্ণ ও সীমাবদ্ধ। পরিবার, জাতি-উপজাতি, গ্রাম, ধর্ম প্রভৃতির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তি মানুষের পরিচিতি নির্ধারিত হত। কালক্রমে এই পরিচিতির পরিবর্তন ঘটে। মানুষ সার্বভৌম রাষ্ট্রব্যবস্থার সদস্য হিসাবে পরিচিতি প্রাপ্ত হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিয়ে রাষ্ট্রের জনসমষ্টি গঠিত হয়। রাষ্ট্রের সদস্য হিসাবে মানুষের নাগরিকতা বা জাতীয়তার পরিচিতি প্রাধান্য পায়।

সমাজবিজ্ঞানীদের একাংশের অভিমত অনুযায়ী বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া প্রসারিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পরিচয় দুর্বল হয়ে পড়ে। অতীতের সাবেকি পরিচয়সমূহ গুরুত্ব হারায়। নতুন নতুন প্রযুক্তিগত প্রকৌশলের বিকাশ ও বিস্তার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্তার, ব্যাপক সংখ্যায় মানুষের পরিযান প্রভৃতি কারণে দূর-দূরান্তের মানুষজনের সঙ্গে সংযোগ-সম্পর্ক গড়ে উঠে। জাতীয় প্রতীকের অংশীদারীত্বের পরিবর্তে বিবিধ সাধারণ স্বার্থ ও ধ্যান-ধারণা অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিপন্ন হয় এবং তদনুসারে ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট, ই-মেল, ওয়েবসাইট প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গের সামনে এক নতুন দুনিয়াকে উন্মুক্ত করে দেয়।

সামাজিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষজনের মধ্যে অধিকতর সংযোগ-সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। এটাই সব নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন পরিচয় বা স্বরূপতার সৃষ্টি হবে। এই আন্তর্জাতিক স্বরূপতা জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হবে। এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের রূপান্তর সাধিত হবে। এর একটি সম্ভাব্য ফলশ্রুতি হল জাতীয় সংকীর্ণতামূলক এক বিশ্বজনীনতা। বিশ্বায়িত দুনিয়ায় আন্তর্জাতিক বিশ্বজনীনতার সম্ভাব্যতা বর্তমান। মানুষজনের ভৌগোলিক অবস্থানগত ব্যবধান সত্ত্বেও এই বিশ্বজনীনতা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ বা সুসংহত করে।

বিশ্বায়নের প্রক্রিয়া সামাজিক ক্ষেত্রে এক ধরনের বহু সংস্কৃতিবাদের সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্বায়নের সুবাদে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সংযোগ-সম্পর্ক গভীর হয় এবং তাদের মধ্যে ধ্যান ধারণার লেনদেন ঘটে। তারফলে বহুসংস্কৃতিবাদের গতিবিদ্যা জাতীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্থানান্তরিত হয়। আগেকার দিনে সময় এবং ভৌগোলিক ব্যবধানজনিত কারণ সাংস্কৃতিক বন্ধনের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হত। বিশ্বায়ন এই প্রতিবন্ধকতাকে অপসারিত করে এবং বহুসংস্কৃতিবাদ অধিক সংখ্যক মানুষকে সংযুক্ত ও সমন্বিত করে। তার ফলে নতুন মূল্যবোধসমূহের এবং স্বরূপতাসমূহের সৃষ্টি হয়।

সামাজিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের সুবাদে ব্যক্তিবর্গের স্বরূপতা অধিকতর সুপরিসরসম্পন্ন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে জাগতিক পরিচিতি অধিকতর গুরুত্ব পায়। শান্তি ও গণতন্ত্রের জন্য নতুন নতুন পথ উন্মুক্ত হয়। সামাজিক ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সংযোগ-সম্পর্ক সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে এক ধরনের বিশ্বজনীনতার সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে এক নতুন পৌর পরিচিতি বা নাগরিক স্বরূপতার সৃষ্টি হয়। এই নাগরিক স্বরূপতা সাবেকি সীমানা ও যাবতীয় প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে যায়। এ হল বিশ্বব্যাপী বা সর্বব্যাপক নাগরিক সমাজ (Global Civil Society)। এই সর্বব্যাপী নাগরিক সমাজ হল এক সংগঠিত জীবনধারা। এই জীবনধারা রাষ্ট্রকে অতিক্রম করে যায় এবং রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে অবস্থিত হয়। এই বিশ্ব নাগরিক সমাজ বেসরকারি সংগঠনসমূহের (NGOs Non-governmental Organisations) মাধ্যমে সংগঠিত বা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিব্যক্ত হতে পারে। আবার অনানুষ্ঠানিকভাবেও এ রকম নাগরিক সমাজের অভিব্যক্তি ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে সামাজিক আন্দোলনসমূহের কথা বলা যায় অথবা অধিকতর বুনিয়াদি তৃণমূল স্তরে সমস্বার্থসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মূল্যবোধসমূহের সম্পর্কের কথা বলা যায়। এই বিশ্বনাগরিক সমাজ রাজনীতিকে নতুন রূপ দিতে পারে। এই উদ্দেশ্যে বিশ্ব নাগরিক সমাজ জনসাধারণের সুসংহত ক্রিয়াকর্মের নতুন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে পারে এবং আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনীতি ও অংশগ্রহণের ব্যাপারে নতুন ধরনের চিন্তাভাবনার পথ উন্মুক্ত করতে পারে। তাছাড়া এই বিশ্বজনীনতা ও বিশ্ব নাগরিক সমাজ আন্তর্জাতিক বিবাদ-বিসংবাদকে অপসারিত করার ব্যাপারেও সম্ভাবনাপূর্ণ সামর্থ্যযুক্ত।

সামাজিক বিশ্বায়নের সমালোচনা

বিরুদ্ধবাদীরা স্বীকার করেন না যে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার বিস্তার সামাজিক প্রগতির সহায়ক। সমালোচকদের অভিমত অনুযায়ী সামাজিক বিশ্বায়নের গতি ও প্রভাব বৃদ্ধি পেলে ধ্যান-ধারণা ও মূল্যবোধ নিয়ে দ্বন্দ্ব-বিবাদ বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বায়ন জনসাধারণকে অধিকতর জ্ঞানদীপ্ত প্রবুদ্ধ করবে না; বরং বিপরীত পরিস্থিতি-পরিমণ্ডলের সৃষ্টি করবে। অসংখ্য বিকল্প ধ্যান-ধারণা, তথ্যাদি ও মূল্যবোধসমূহ জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করবে। কারণ আমজনতা এতসব ধ্যান-ধারণা, তথ্যাদি, মূল্যবোধ প্রভৃতি মূল্যায়ন ও অনুধাবন করতে অসমর্থ। স্বভাবতই অধিকতর জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত জনগণের সৃষ্টি হবে না। সৃষ্টি হবে বিভ্রান্ত, বিচ্ছিন্ন ও অস্থির জনসাধারণের। এবংবিধ পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষজন সাবেকি ধ্যান-ধারণা ও স্বরূপতার প্রতি অধিকতর আকৃষ্ট হবে। স্বভাবতই সামাজিক বিশ্বায়নের সুবাদে বিশ্বজনীনতা বা বহু সংস্কৃতিবাদের সৃষ্টি হবে না। বরং সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ ও মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সামাজিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের কারণে নিজেদের জীবনযাত্রার প্রতি বিদেশী-বিরোধী মনোভাব দেখা দিবে। সমাজবিজ্ঞানী প্যাট্রিক ওনীল তাঁর Essentials of Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন: “This countervailing trend against globalization has been described by political theorist Benjamin Barber as ‘jihad’, the impulse across many societies (Islamic or otherwise) to violently resist these alien ideas and values. The September 11 attacks can be viewed in this light-as a strike against the values…. of globalization rather than on the United States.”

সামাজিক বিশ্বায়নের ফলে নিম্নস্তর পর্যন্ত সাংস্কৃতিক এবং বৌদ্ধিক দৌড়ের সুবাদে সদৃশকরণ ও সমরূপকরণের প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়; বহুসংস্কৃতিবাদ, বিশ্বজনীনতা ও বিশ্ব নাগরিক সমাজের সৃষ্টি হয় না। সকল সমাজব্যবস্থায় স্বকীয়তাসম্পন্ন বেশ কিছু বিষয় থাকে। সেগুলিকে বিশ্বায়িত করা যায় না। বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় সেসব বিনষ্ট হয়। বিশ্বায়িত হয় সেই সমস্ত বিষয়, যেগুলির স্বকীয়তা বা স্বাতন্ত্র্য নাই। অর্থাৎ বিশিষ্ট কোন কিছুই বিশ্বায়িত হয় না।

যে সমাজের যে বিষয়টি জনসাধারণের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, তা নির্বীজিত করা হয় এবং নতুন মোড়কে ভরে বিশ্বব্যাপী বিক্রীর ব্যবস্থা করা হয়। যে সব জিনিসের কদর মানুষের কাছে নেই, বা কদর কম, তা একেবারে বাতিল করে দেওয়া হয়। সেই শূন্যস্থানে নিয়ে আসা হয় সেই সমস্ত জিনিস যা সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের কাছে আদরণীয় এবং খুব কম সংখ্যক মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় প্রতিপন্ন হয়।

প্রত্যেক সমাজের নিজস্ব ইতিহাস আছে; আছে নিজস্ব ভাষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, খাদ্যাভাস, মূল্যবোধ, রীতিনীতি প্রভৃতি। এগুলি সংশ্লিষ্ট সমাজকে স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্র্য্য প্রদান করে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সবকে সম্পৃক্ত, পরিশীলিত এবং নতুন মোড়কবদ্ধ করা হয়। সর্বত্র ভোগ্য বিষয়ে রূপান্তরিত করার জন্য উদ্যোগ-আয়োজন গ্রহণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার পরিণামের কথা বলতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞানী প্যাট্রিক ওনীল তাঁর Essentials of Comparative Politcs শীর্ষক গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন: “This outcome has been described by Barber (Benjamin Barber) as McWorld.”

সমালোচকদের আরও অভিযোগ আছে। বিশ্ব সমরূপসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠলে অধিকতর সমৃদ্ধি ও সহযোগিতার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। এ রকম আশা হয়ত অমূলক নয়। কিন্তু তারজন্য মূল্য দিতে হবে অনেক। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বনিয়াদকে বিসর্জন দিতে হবে। বিদ্যমান ধ্যান-ধারণাসমূহের মধ্যে কোন অর্থবহ পার্থক্য থাকবে না। মানুষের পছন্দের বিকল্পসমূহ কেবল ভোগ্যপণ্যসমূহের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। মূল্যবোধ, বিতর্ক ও অংশগ্রহণ অর্থহীন হয়ে যাবে। প্যাট্রিক ওনীল বলেছেন: “Both freedom and equality become, in essence, meaningless concepts, since they are not goods or services that can be marketed, bought or sold.”