জন কীটস্-এর কবিতায় সৌন্দর্য চেতনা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক যুগের অন্যতম কবি জন কীটস্-এর রচনায় পাওয়া যায় ভাব নিবিড় বর্ণবৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যচেতনা। তিনি জগতের আনন্দরূপকে সন্ধান করেছিলেন সৌন্দর্যের মধ্যে। সে সৌন্দর্য হল সত্য–নিত্য নিরঞ্জন অখণ্ড মণ্ডলাকার অনন্ত দার্শনিক উপলব্ধি লঞ্চ পরমা শ্রী—’Truth এবং “Beauty’। এই সত্য ও সুন্দর জগৎ চরাচরে পরিব্যাপ্ত। পায়ের তলার ধূলি থেকে নক্ষত্রলোক পর্যন্ত সর্বত্র বিস্তৃত। ‘ওড অন এ গ্রীসিয়ান আর্ন’ (Ode on a Grecian Um) কবিতায় তাঁর বক্তব্য এই যে পার্থিব সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু শিল্পসৌন্দর্য কালজয়ী। এই কবিতায় বিঘোষিত হয়েছে চরম সত্য—

‘Beauty is truth, truth is beauty that is all 

Ye know on earth, and all ye need to know.

অন্যত্র তাঁর এই ভাবপ্রকাশ করেছেন– What the imagination scizes as beauty must be truth. তাঁর প্রথম বৃহৎ কাব্য Endymion (১৮১৮) এ কাঁটস্-এর ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সৌন্দর্যপ্রিয়তার ঐকান্তিক ঐশ্বর্যদীপ্ত প্রকাশ। ব্যঞ্জনাময়ী ভাষায় রচিত হয়েছে কীটসের ‘ওড টু এ নাইটিঙ্গেল’ (Ode to a Nightingale)। কবিতাটি সৌন্দর্য ও মধুরতার অপর এক অপূর্ব প্রকাশ। এন্ডিমিয়ন (Endymion) কাব্যে তিনি বলেছেন, ‘A thing of beauty is a joy for ever’i

কীটসের সঙ্গে কোলরিজের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য কোথায় আলোচনা করো।

রোমান্টিক কবি কীটস্‌কে বলা হয় কোলরিজের ভাবশিষ্য। কারণ কীটসের কবিতায় রোমান্স ভাবনার নিগূঢ় তাৎপর্যসূজনে, অতিপ্রাকৃত পরিমণ্ডল রচনে, সৌন্দর্য চিত্রণে কোলরিজের কাব্যাদর্শ লক্ষ্য করা যায়। এ প্রসঙ্গে কোলরিজের ‘ক্রিস্টাবেল’ ও কটিসের ‘দি ঈভ অফ সেন্ট অ্যাগেন্স’ কবিতা দুটি পাশাপাশি রাখলে দেখা যায়, দুই কবিই মধ্যযুগীয় সংস্কার ও বিশ্বাসকে যথাযথ রূপে পরিবেশন করেছেন। পার্থক্য শুধু এই যে কোলরিজ রচনা করেছেন অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃত কাহিনী, আর কীটস্ রচনা করেছেন অলৌকিক বিশ্বাসকেন্দ্রিক মানবিক কাহিনী। কোলরিজের কাহিনীর পটভূমি অরণ্যস্থল, কীটসের প্রাসাদের অভ্যন্তর। ক্রিস্টাবেল কাহিনীর নিসর্গ চিত্রে রয়েছে আসন্ন বসন্তের সূচনায় শীতের আমেজ, আর কীটসের রচনায় পাই শীতের আকন্দ্র শিহরণ। তবে উভয় কবির রচনার মধ্যেই রয়েছে ব্যঞ্জনা নিবিড়তা। রোমান্টিক চেতনার উদ্ভাসে উভয় কবি নিসর্গ বর্ণনায় সৌন্দর্য, রোমাঞ্চকর আতঙ্ক পাণ্ডুরতা, রহস্যময় কৌতূহলী চিত্তাচ্ছন্নতা নিপুণ।