একটি কঙ্কাল থেকে যেমন লালিত্যে ও লাবণ্যে ভরা যৌবনের কঠিন-কোমল নিটোল পরিপূর্ণ দেহের পরিচয় পাওয়া যায় না, তেমনি কাব্যের তত্ত্ব-বিচারেও কাব্যরসের সন্ধান পাওয়া যায় না। তবু মানুষ নিজের তৃপ্তির জন্য কাব্য-রসের বিচারে প্রবৃত্ত হয় এবং এইভাবেই কাব্যের সঙ্গে অলঙ্কার শাস্ত্রও গড়ে ওঠে। কাব্যের রস সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী বলেই কাব্যের রস-বিচারে কাব্যরসের আস্বাদ পাওয়া যায় না। বস্তুতঃ কাব্যরসাস্বাদী সহৃদয় লোকের মনের বাইরে রসের আর কোনো স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই। সহৃদয় লোকের চিত্তে সুকাব্যপাঠ-জনিত যে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয় তারি নাম ‘রস’। অতএব কাব্যরসের অবস্থান কাব্যে নয়, তার অবস্থান কাব্যপাঠকের মনে। দার্শনিক কান্ট দেখিয়েছেন—জ্ঞানের উপাদান দ্বিবিধ, বাহ্যিক ও মানসিক। ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে যে সকল বাইরের উপাদান আমরা আহরণ করি, তা জ্ঞান নয়। আমাদের সক্রিয় মন যখন ঐ সকল উপাদানকে আত্মসাৎ করে এক বিশেষ পরিণতি ও আকার দান করে, কার্য-কারণ-তত্ত্বের যথাযোগ্য প্রয়োগে তখনই তা জ্ঞানে পরিণত হয়। অতএব বাহ্যিক উপাদান ও মানসিক তত্ত্বের সংযোগে জ্ঞানের উৎপত্তি হয়।
রসের বিশ্লেষণেও পাওয়া যায় বাহ্যিক ও মানসিক উপাদান। বাহ্যিক উপাদান আসে কবির সৃষ্ট কাব্যের জগৎ থেকে, বাইরের জগৎ থেকে নয়, আর মানসিক উপাদান হলো ‘ভাব’ নামক চিত্তবৃত্তি বা ‘ইমোশন’। কাব্যজগতের বাহ্যিক উপাদানের ক্রিয়ায় মনের ভাব ‘রসে’ রূপান্তরিত হয়। এই ভাবসমূহ লৌকিক, লৌকিক জগতের সঙ্গেই এদের সম্পর্ক। কিন্তু এই ভাব বা ইমোশনই রস নয়, কিংবা ভাবের কারণটিও কাব্য নয়। যেমন ‘শোক’ একটি ‘ভাব’ কিন্তু রস নয়, বা শোকের কারণটিও কাব্য নয়। কিন্তু, কবি যখন লৌকিক শোক আর তার লৌকিক কারণের এক অলৌকিক চিত্র কাব্যে রূপায়িত করেন, তখনই তা ‘করুণ’ নামক রসে পরিণত হয়। এই করুণ রস শোকের ইমোশন হয়, কারণ শোক দুঃখদায়ক অনুভূতি; কিন্তু কবির কাছে বর্ণিত করুণ রস আনন্দের স্বাদ নিয়ে আসে। তাই করুণ রসের কাব্য রামায়ণ চিরকালই কাব্যরসিক মানুষকে আকর্ষণ করেছে। লৌকিক বস্তুজগতের শোক-হর্ষাদি নানা কারণে মানুষের মনে লৌকিক ভাবের জন্ম দেয়—আবার ঐ সকল লৌকিক ভাব এবং কারণই কাব্যের জগতে এক অলৌকিক রূপ প্রাপ্ত হ’য়ে লৌকিক ভাবের বৃত্তি বা বাসনাকে অলৌকিক রসে পরিণত করে। তাই রসের মানসিক উপাদান ‘ভাব’ দুঃখময় হলেও তার পরিণাম ‘রস’ নিত্য আনন্দের হেতু। এইজন্যই আলঙ্কারিকরা বলেন—রস ও কাব্যের জগৎ অলৌকিক মায়ার জগৎ। ‘সাহিত্যদর্পণ’কার বিশ্বনাথ কবিরাজ বলেন—
‘শোকহর্ষাদয়ো লোকে জায়ত্তাং নাম লৌকিকাঃ।
অলৌকিবিভাবত্বং প্রাপ্তেভ্যঃ কাব্যসংশ্রয়াৎ।।
—অর্থাৎ লোক-হর্ষাদি লৌকিক ভাবসকল কাব্যসংশ্রয়ে অলৌকিকত্বলাভ করে।
কবি যে কাব্যের মায়াজগৎ সৃষ্টি করেন, তার নির্মাণ-কৌশলের তিনটি ভাগ দেখিয়েছেন বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। এই তিনটি—বিভাব, অনুভাব এবং সম্ভারী বা ব্যভিচারী ভাব। লৌকিক জগতে রতি-আদি ভাবের যা উদ্বোধন ঘটায়, তাকেই বলা হয় ‘বিভাব’ (‘রত্যাদ্যুদবোধকো লোকে বিভাবাঃ কাব্যনাট্যয়োঃ’)। আবার মনের ভাব উদ্বুদ্ধ হলে যে-সব স্বাভাবিক বিকার ও উপায়ে তা বাইরে প্রকাশ হয়, ভাবরূপ কারণের সেই সব লৌকিক কার্যকেই ‘অনুভাব’ বলা হয়। রবীন্দ্রনাথের কবিতার অংশ—
‘দ্বিধায় জড়িত পদে কম্প্রবক্ষে নম্র নেত্রপাতে,
স্মিতহাস্যে নাহি ঢল সলজ্জিত বাসরশয্যাতে,
স্তব্ধ অর্ধরাতে।’
—এখানে মিলন-মধুর লজ্জার যে চিত্রটি অঙ্কিত হয়েছে, তার উপাদানস্বরূপ ব্যবহৃত হয়েছে কয়েকটি ‘অনুভাব’।
আচার্য অভিনব গুপ্ত রসকে বলেছেন নিজের আনন্দময় সম্বিতের (চেতনার) আস্বাদ-রূপ একটা ব্যাপার (“স্বসংবিদানন্দচর্বণ-ব্যাপার-রমণীয়-রূপো রসঃ”)। লৌকিক ভাব কবি-প্রতিভার মায়ায় সকল হৃদয়ে সমবাদী বিভাব ও অনুভাব-রূপ প্রাপ্ত হয়েই রসমূর্তি লাভ করে। কিন্তু লৌকিক ভাব তো ব্যক্তি-হৃদয়ে আবদ্ধ, অতএব পরিমিত এবং তা সামাজিক নয়—এখানেই বিভাব এবং অনুভাবের গুরুত্ব; এদের মধ্যে এমন একটি ব্যাপার আছে, যা লৌকিক ভাবকে ‘সকল-সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী’ অলৌকিক রসমূর্তিতে রূপান্তরিত করে এবং কাব্য-বর্ণিত বিষয়ের সঙ্গে পাঠকের একটা সাধারণ সম্বন্ধের সৃষ্টি করে। একে বলা হয় ‘সাধারণী-কৃতী’ বা ‘সাধারণীকরণ’—যার ফলে কাব্যপাঠকের মনে হয় যে কাব্যের চরিত্র ও ভাব পরের হয়েও নিজের, আবার নিজের হয়েও পরের। অর্থাৎ কাব্যের আস্বাদ আর কোনো পরিমিত ব্যক্তিত্বের সীমায় আবদ্ধ থাকে না, কাব্যের ভাবের সঙ্গে পাঠক একাত্মতা বোধ করতে পারেন।
কবির সৃষ্টি একটা concrete জিনিস, যার মধ্যে নিখিল সহৃদয় ব্যক্তি নিজের প্রতিফলন দেখতে পান। কবি ভাবের লৌকিক পরিমিতত্ব ছাড়িয়ে উঠে ভাবকে রসের মূর্তিতে রূপান্তরিত করেন বলেই তাতে কাব্যরসের সৃষ্টি হয়। আদিকবি বাল্মীকি যদি ক্রৌঞ্জের শোকে দুঃখিতই হয়ে থাকতেন, তবে আর করুণ-রসাত্মক শ্লোক-রচনার অবকাশ থাকতো না। এখানে এই কৌরে শোক ভিন্নতা প্রাপ্ত হয়ে মুনির মনে নিজের চিত্তবৃত্তির আস্বাদনরূপ করুণ-রসের রূপ প্রাপ্ত হয়েই ছন্দোবৃত্তি-নিয়ন্ত্রিত কাব্যশ্লোকরূপে নির্গত হয়েছে। আধুনিক কালের নন্দনতত্ত্ববিদ্ ক্রোচে-বর্ণিত poetic idealisation বস্তুতঃ ভাব ও তার কারণ-কার্যের ‘সকল-সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী’ বিভাব-অনুভাবের পরিণতি। লৌকিক ভাবের আস্বাদ্যমান রসে পরিণতির তত্ত্বও তাঁর বিশ্লেষণে সমর্থিত হয়েছে। কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের কাব্যতত্ত্বেও এই রূপান্তরবাদের সমর্থন রয়েছে।
কবি-হৃদয়ের ভাবকে পাঠক হৃদয়ে সঞ্চারিত করাই একালের লীরিক কবিদের লক্ষ্য বলে মনে হলেও, সেই ভাব যদি কবি-মনে রস-মূর্তি পরিগ্রহ করে বিভাব-অনুভাবের মধ্য দিয়ে পাঠক-মনে যতক্ষণ সেই রসের রূপ ফুটিয়ে তুলতে না পারে, ততক্ষণ তা সার্থক নয়। ব্যক্তিগত ভাবকে আস্বাদ্যমান রসে পরিণত করতে না পারলে সেই ভাব যতই উচ্ছ্বসিত হোক, তা কখনো সহৃদয় পাঠকচিত্তে রসের সঞ্চার করতে পারে না।
মানুষের মনের ভাব শুদ্ধ তার feeling বা সুখদুঃখের অনুভূতি নয়, এটি হচ্ছে সর্বাবয়ব মানসিক অবস্থা বা complete psychosis: ভাব বা ইমোশনের মূলে আছে কতকগুলি idea বা বিজ্ঞান, অতএব idea-র পরিবর্তনে ভাবেরও পরিবর্তন ঘটে। অতএব সংখ্যাতীত idea-র সংযোগ-বিয়োগে অসংখ্য ভাবের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আবার কোনো একটি ভাবই অপর ভাবের সদৃশ নয়, অতএব ভাবের সংখ্যা নিরূপণ কিংবা তাদের বর্গীকরণ অসম্ভব হলেও আলঙ্কারিকগণ সাদৃশ্যবশতঃ কয়েক প্রকার ভাবের নামকরণ করেছেন। তাদের মধ্যে যে নয়টি ভাব প্রধান সেগুলি হল – রতি, হাস, শোক, ক্রোধ, উৎসাহ, ভয়, জুগুপ্সা, বিস্ময় ও শম’। এই ভাবগুলি চিত্তবৃত্তির মধ্যে বহুলরূপে প্রতীয়মান হয় বলে, এদের বলা হয় স্থায়ীভাব’। এই নয়টি ভাব কাব্যের বিভাব এবং অনুভাবে এসে যথাক্রমে নিম্নোক্ত নয়টি রসে পরিণত হয়, –‘শৃঙ্গার, হাস্য, করুণ, রৌদ্র, বীর, ভয়ানক, বীভৎস, অদ্ভুত ও শাস্ত’। এই স্থায়ী ভাবগুলি ছাড়াও অনেক ভাব কাব্যের বিভাব ও অনুভাবের আস্বাদ্যমানতা প্রাপ্ত হয়। আলঙ্কারিকাণ ‘নির্বেদ, হর্ষ, লজ্জা, অসুয়া, বিষাদ’-আদি আরো তেত্রিশটি ভাবের নাম উল্লেখ করলেও তাদের বহির্ভূত আরও বহু ভাবের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন। স্থায়ী ভাবের অতিরিক্ত এই ভাবগুলিকে বলা হয় ‘সঞ্ঝারী’ বা ‘ব্যাভিচারী’ ভাব। এ সব ভাবের কোন স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই, এরা কোনো না কোনো স্থায়ী ভাবের সম্পর্কে মনে আশ্রয় লাভ করে মনকে স্থায়ী ভাবের অভিমুখে চালনা করে। অতএব, স্বতন্ত্র রসমূর্তি-বর্জিত সঞ্ঝারী-ভাবের আস্বাদ্যমানতা স্থায়ী ভাবের রসকেই পরিপুষ্ট করে তোলে। সুতরাং সঞ্চারী ভাবের পরিণতি রস না হলেও যে কাব্যের রস অনেক পরিমাণে সঞ্চারীর আস্বাদ্যমানতার উপর নির্ভর করে, একথা আলঙ্কারিকরা স্বীকার করে গেছেন।
সাধারণভাবে অভিনব গুপ্ত-কথিত পূর্বোক্ত অভিমতটি অপর সকল আলঙ্কারিকগণ স্বীকার করে নিলেও আলঙ্কারিক ভাগুরি সঞ্চারী রসকেও পৃথক রসের মর্যাদা দিয়েছেন। কোনো কাব্যে নানাবিধ রসের উপস্থিতিতে একটি প্রধান হয়ে ওঠে এবং স্থায়ীভাবের পরিণতি অপর রসগুলি তার পরিপোষক হয়ে সঞ্জারীর কাজ করে। তাই কাব্যে স্থায়ী ও সঞ্চারীর ভেদটিকে আপেক্ষিক বলেই মনে করা হয়। ফলতঃ সঞ্চারী কাব্যে এতটাই স্থান জুড়ে থাকে যে, একথা মনেও হয় না যে, সঞ্চারী দ্বারা পরিপুষ্ট না হলে রসের রসত্বই হয় না। সাহিত্যদর্পণ’-কার বিশ্বনাথ তাই যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে ‘চিত্তের রতি প্রভৃতি স্থায়ী ভাব কাব্যের বিভাব, অনুভাব ও সঞ্চারীর সংযোগে রূপান্তর প্রাপ্ত হয়ে রসে পরিণত হয়।
মহাভারতের একটু অংশের কাব্যরস বিশ্লেষণ করে দেখা যেতে পারে। পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাসের পর শ্রীকৃষ্ণকে দূত করে ধৃতরাষ্ট্র-দুর্যোধনের কাছে পাঠানোর প্রশ্নে সহদেব ও সাত্যকি ছাড়া সকলেই সম্মতি দান করেছিলেন। তখন মহাকবি বেদব্যাস দ্রৌপদীর কিছু বর্ণনা ও বক্তব্য পরিবেশন করেন। এই রচনাংশটুকুর মধ্যে বিভিন্ন রসের প্রবাহ বইলেও তাতে রৌদ্ররসই প্রাধান্য লাভ করে, কিন্তু তা ছাড়াও কয়েকটি রস এই রৌদ্ররসের পরিপুষ্টি বিধান করে। এই সঞ্ঝারী রসগুলির মধ্যে রয়েছে- বিষাদ, দৈন্য, হর্য প্রভৃতি আবার বীর ও করুণ—এই দু’টি স্থায়ী রসও এখানে সঞ্চারী রসের মতোই প্রধান রসকে আশ্চর্য সরসতা ও পরম উৎকর্ষ দান করেছে। এই কাব্যাংশের সমস্ত রসের অবলম্বন দ্রৌপদী—তাঁর ভুজঙ্গের মতো দীর্ঘ বেণী, যা অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী ক্ষত্রিয়ের রক্তে পৃথিবীকে রঞ্জিত করবে, তা হলো কাব্যের বিভাব—
কেশপক্ষং বরারোহা গৃহ্য বামেন পাণিনা।
পদ্মাক্ষী পুণ্ডরীকাক্ষপেতা গজগামিনী।।
এখানে রৌদ্ররসের চমৎকারিত্বের পরই করুণ ও রৌদ্ররসের মিশ্রণ নিয়ে আবার কাহিনী অগ্রসর হয়েছে। অভিমানী এবং শোকাশ্রুর ভিতর দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটলেও এখানে করুণ রস প্রাধান্য পেলো না, বরং তা রোদ্ররসকেই আরো পরিপুষ্ট এবং স্থায়ী করে তুলেছে। শোকের চিত্রটি কয়েকটি অনুভাবের সাহায্যে অঙ্কিত হওয়াতে তাও অপূর্ব রসমূর্তি ধারণ করেছে।
রসের বিবরণ এখানেই শেষ হয়নি। রৌদ্র, বীর, করুণ—এই সমস্ত স্থায়ী রসের অন্তরাল থেকে মধুর বা শৃঙ্গার রসের বিভাব সমস্ত রসের উপর একটা মাধুর্যের আস্তরণ বিছিয়ে দিয়েছে। অতএব স্থায়ী রসও যে সঞ্চারী রসের মতোই প্রধান রসকে পরিপুষ্ট করে তোলার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, তার একটি উত্তম নিদর্শন এখানে পাওয়া গেল। রৌদ্ররস এবং বীররসের পার্থক্য বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অনেকেই এতদুভয়ের মধ্যে গণ্ডগোল পাকিয়ে বসেন। যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে’—কবিতাটি আলঙ্কারিকদের মতো বীররসের নিদর্শন, কারণ এর উপাদান স্বরূপ ব্যবহৃত হয়েছে ‘উৎসাহ-উদ্দীপক’ ভাব। আবার ‘স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিয়ে চায় রে কে বাঁচিয়ে চায়’—কবিতাটিকে কবি বীররসাত্মক মনে করলেও এটি আলঙ্কারিকদের মতে বীররসাত্মক নয়, কারণ এটি উৎসাহের রসমূর্তি নয়।
একালের সমালোচকগণ গঠনমূলক সমালোচনায় (constructive criticism) বিশ্বাসী তাই প্রাচীন আলঙ্কারিকদের কাব্যবিশ্লেষণ তাঁদের পছন্দমাফিক হবে। গঠনমূলক সমালোচনায় কাব্যের রসহীন বাক্যের রসকে জল মিশিয়ে পাঠককে গিলিয়ে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে আলঙ্কারিকগণ মনে করতেন যে পাঠক কাব্য পাঠ করেই তার রসের আস্বাদন পাবে। সমালোচক স্বয়ং কবি হলে কাব্যের রস পাঠক-মনে সঞ্চারিত করতে পারেন, কিন্তু এ যোগাযোগ দুর্লভ। আলঙ্কারিকগণ নিজেদের কাব্যতত্ত্ববিৎ সহৃদয় মাত্র জ্ঞান করতেন।
Leave a comment