[1] পটভূমি: বড়ােলাট হিসেবে ভারতের শাসনভার গ্রহণ করে ওয়াভেল বুঝতে পারেন শীঘ্রই ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হতে চলেছে। কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মতভেদের কারণে ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। এই অচলাবস্থার অবসানের জন্য বড়ােলাট লর্ড ওয়াভেল ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সঙ্গে আলােচনা করে একটি পরিকল্পনা পেশ করেন। এটি ওয়াভেল পরিকল্পনা (১৯৪৫ খ্রি.) নামে খ্যাত।
[2] প্রস্তাবসমূহ: এই পরিকল্পনায় বলা হয়-
-
[i] শীঘ্রই সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর ও সংবিধান রচনার কাজ শুরু করবে;
-
[ii] নতুন সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় নেতাদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে;
-
[iii] কেন্দ্রীয় পরিষদে বর্ণহিন্দু ও মুসলমান সদস্যদের সংখ্যা সমান থাকবে;
-
[iv] বড়ােলাট এবং প্রধান সেনাপতি ছাড়া সমস্ত সদস্যই হবেন ভারতীয়;
-
[v] ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ইংরেজ সরকারের হাতেই ন্যস্ত থাকবে।
[3] সিমলা বৈঠক: এই প্রস্তাবগুলি আলােচনা করার জন্য লর্ড ওয়াভেল সিমলাতে ভারতীয় নেতাদের একটি বৈঠক ডাকেন (২৫ জুন, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে)। কংগ্রেসের পক্ষে মৌলানা আজাদ ও মুসলিম লিগের পক্ষে জিন্না এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
[4] পরিণতি: জিন্না তাঁর পাকিস্তান দাবি থেকে সরে আসতে অসম্মত হন। তিনি দাবি করেন যে, কেন্দ্রীয় পরিষদে সকল মুসলিম সদস্যকে মুসলিম লিগের সভ্যদের মধ্যে থেকে গ্রহণ করতে হবে। কংগ্রেস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। শিখরাও পৃথক অঞ্চলের দাবি জানায়। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি একমত না হওয়ায় সিমলা বৈঠক ব্যর্থ হয়।
Leave a comment