সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা ছােটোগল্প থেকে গৃহীত এই উদ্ধৃতিটি সৌখীর মায়ের। সৌখীর অনুচরদের উদ্দেশ করেই ডাকাতের মা’ এমন ভাবনা ভাবতে বাধ্য হয়েছে। সৌখীর বাবার আমলের এক ডাকাত যখন আহত হয়ে ধরা পড়ে, তখন সে নিজের হাতেই নিজের জিভ কেটে ফেলেছিল—যাতে দলের গােপন কথা পুলিশের কাছে বেরিয়ে না-পড়ে। সৌখীর দলে কিন্তু এমন বিশ্বাসী এবং দল-অন্ত প্রাণ অনুচর নেই। অনুচররা প্রথম দু-বছর নিয়মমতাে তার মাকে মাসে মাসে টাকা পাঠালেও পরবর্তীতে টাকা পাঠানাে একেবারে বন্ধ করে দেয়। সৌখীর বাবার আমলে এমনটা কিন্তু কল্পনাও করা যেত না। এমনকি সৌখীর আমলেও আগে এমনটা ঘটেনি। দুঃখ-দারিদ্রে জর্জর, একাকী, প্রৌঢ়া, বিধবা তাই হতাশ হয়ে সৌখীর অনুচরদের বদলােক’, ‘একলফেঁড়ে লােক’ বলে অভিহিত করেছে। সৌখীর জেলে থাকাকালে তার এক অনুচর সৌখীর মাকে টাকা দিতে আসত। তার চিবুকের নীচে ছিল দুগাছা দাড়ি। সৌখীর মার চোখে তার চেহারাটা ছিল ঠিক যেন তালপাতার সেপাই। কালিঝুলি মেখে হাতে মশাল নিয়ে থাকলেও তাকে দেখে কোনাে লােকই ভয় পাবে না। সুতরাং কী চেহারায়, কী মানসিকতায় সৌখীর মার চোখে ওরা মােটেই ডাকাত হওয়ার যােগ্য নয়- ‘চোর ছিঁচকে চোর!’
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প থেকে উদ্ধৃত এই খেদোক্তিটি ডাকাত সর্দার সৌখীর মায়ের।
প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে সৌখী জেলে। অভাবের তাড়নায় নাতি ও বউমাকে বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয় সে। নিঃসঙ্গ বিধবা সৌখীর মায়ের বেশ কিছুদিন ধরেই রাতে ভালাে ঘুম হচ্ছিল না। এমনিতেই শীতকালে আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে না শুলে তার ঘুম হয় না। বেশ কয়েক বছর আগে এমনই এক শীতের রাতে সে যখন আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমােচ্ছিল, তখন তার ছেলে সৌখী কোথা থেকে রাতদুপুরে ঘরে ফিরে দরজায় সাংকেতিক টোকা দিলেও তার মায়ের কানে সে শব্দ পৌছােয় না। দরজা খােলার পর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে ছেলে সৌখী মাকে খুব মারধাের করে এবং শাসানি দিয়ে বলে যে, অমনভাবে নাকমুখ ঢেকে সে যদি আর কখনও তার মাকে ঘুমােতে দেখে, তবে তাকে খুন করে ফেলবে। এই ঘটনায় ছেলের সম্পর্কে মার মন্তব্য ছিল বাপের বেটা, তাই মেজাজ অমন কড়া। কিন্তু বিগত পাঁচ বছর ধরে তার রাগী ছেলে সৌখী জেলে থাকায়, তাকে বকুনি দেবার মতাে লােক আর তার বাড়িতে নেই—এমনকি আপাদমস্তক কম্বল মুড়ে নাক ডেকে সে যদি ঘুমােয়, তবুও। এটাই তার দুঃখের কারণ।
সতীনাথ ভাদুড়ীর ডাকাতের মা ছােটোগল্পে দেখা যায়, কোনাে এক শীতের রাতে গায়ে কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে ছিল সৌখীর বিধবা মা। শীতকালে কম্বল দিয়ে মাথা-মুখ না মুড়ে শুলে তার ঘুম আসে না। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগের একটা ঘটনার পর থেকে সে আর অমনভাবে কম্বলমুড়ি দিয়ে শােয় না। শীতের এক রাতদুপুরে অভ্যেসমতাে সে যখন আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমােচ্ছিল, তখন তার ছেলে সৌখী ডাকাতি করে বাড়ি ফিরে দরজায় সাংকেতিক টোকা দিলেও তার মায়ের কানে সে শব্দ পৌঁছােয় না। দেরি করে দরজা খােলায় প্রচণ্ড রেগে গিয়ে সৌখী এরপর মাকে মারধাের করে এবং ভবিষ্যতে নাক-মুখ ঢেকে শােওয়ার ব্যাপারে শাসানিও দেয়। সেদিনের এই ঘটনাটির পর ঘুমের অসুবিধা সত্ত্বেও আর কোনােদিনও আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে শােয়নি সৌখীর মা। এমনকি, বিগত পাঁচ বছর ধরে তার ছেলে জেলে রয়েছে, তবুও।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে সৌখীর মার শীত করতে থাকে। সে অনুভব করে যে, আগে সেই কম্বলটায় ভালােমতাে শীত মানলেও এখন তার এতে শীত মানছে না। সৌখী আগের বার জেল থেকে কম্বলটা নিয়ে এসেছিল। এরপর পাঁচ বছর পর বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়া শেষে যখন সৌখী শােওয়ার উপক্রম করে, তখনই তার নজর যায় মায়ের গায়ের ওই ছেঁড়া কম্বলটার প্রতি। এরপর সৌখী নিজের আনা নতুন কম্বলটা মার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে নিজে সেই পুরােনাে, জীর্ণ কম্বলটা নিয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এভাবেই ‘ডাকাতের মা’ গল্পে বারবার এসেছে কম্বলের প্রসঙ্গ।
সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা ‘ডাকাতের মা ছােটোগল্পের ডাকাত সর্দার সৌখী পাঁচ বছর পর জেল খেটে বাড়িতে ফিরে বউ এবং বছর-পাঁচ বয়সের ছেলেকে খুঁজছিল। সৌখীর মা তখন ছেলের মনােভাব আঁচ করতে পেরে প্রসঙ্গ বদলানাের জন্য ছেলে সৌখীকে জিজ্ঞাসা করে, জেলে তার অসুখ-বিসুখ হয়েছিল কি না। সৌখী তখন মায়ের সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “এদের কাউকে দেখছি না?” সৌখীর এই প্রশ্নের ভয়ই করছিল তার মা।
রুগণা, গর্ভবতী স্ত্রীকে রেখে পাঁচ বছর আগেই ডাকাত সর্দার সৌখী জেলে যাওয়ার কিছুদিন পরই তার ছেলের জন্ম হয়। সৌখী জেলে যাওয়ার পর সৌখীর অনুচররা মাসে মাসে নিয়মমতাে তার মাকে মাসােহারা পাঠালেও দুবছর পর তারা টাকা পাঠানাে বন্ধ করে দেয়। ফলে নাতি ও রুণা পুত্রবধূর মুখে অন্ন জোটাতে না পেরে সৌখীর মা তাদের বেয়াইয়ের বাড়িতে রেখে আসতে বাধ্য হয়। খই-মুড়ি ভেজে তা বিক্রি করে কোনােমতে সে তার নিজের পেট চালিয়ে নিতে থাকে। সৌখীর মা ভাবে, জেল থেকে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর অসুস্থতার খবর শুনলে সেই মুহূর্তেই সৌখী হয়তাে শ্বশুরবাড়িতে চলে যাবে। ফলে, একদিনের জন্য সৌখীর মা তার ছেলেকে নিজের কাছে রাখতে পারবে না। এই ভাবনাই সৌখীর মার মনে ভীতির সঞ্চার করেছিল। এর সঙ্গেই অবশ্য যুক্ত করতে হয় সৌখীর অপত্যস্নেহ, যার, টানে সে অনায়াসে এতদিনের অতৃপ্ত মাতৃসান্নিধ্যও উপেক্ষা করতে পারে।
তেলেনাপােতা ত্যাগ করার পর থেকে কীভাবে তেলেনাপােতা এবং যামিনীর স্মৃতি গল্পকথকের মন থেকে ক্রমশ মলিন হয়ে যায় তা তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্প অবলম্বনে লেখাে।
তেলেনাপােতা যাওয়াকে লেখক ‘আবিষ্কার’ বলেছেন কেন?
“মনে হবে তেলেনাপােতা বলৈ কোথায় কিছু সত্যি নেই” -এ কথা কার মনে হবে? এই মনে হওয়ার কারণ কী?
তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্পটির নামকরণ কতটা সার্থক আলােচনা করাে।
“আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।” -আসল উদ্দেশ্য কোনটি? সেই উদ্দেশ্য সাধনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করলেন?
ছােটোগল্প হিসেবে ‘ডাকাতের মা’ কতটা সার্থক আলােচনা করাে।
‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের মূল চরিত্র কে—সৌখী না তার মা?
ডাকাতের মা গল্পে একটি ডাকাত পরিবারের কথা যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আলােচনা করাে।
ডাকাতের মা গল্পে ন্যায়-অন্যায় বােধ যেভাবে আবর্তিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লেখাে।
ডাকাতের মা ছােটোগল্প অবলম্বনে ডাকাত-সর্দার সৌখীর চরিত্র আলােচনা করাে।
‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে ঘরে ঢােকা অবধি সময়কালের বিস্তৃত বর্ণনা দাও।
শেষবার সৌথী জেলে যাবার পর তার পরিবার কীভাবে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেছিল তা ডাকাতের মা’ গল্প অবলম্বনে লেখাে।
ডাকাতের মা ছছাটোগল্প অবলম্বনে সৌখীর মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।
ডাকাতের মা ছোটগল্প অবলম্বনে মাতাদীন পেশকারের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।
‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে দারােগাবাবুর চরিত্র বর্ণনা করাে।
ডাকাতের মায়ের মাতৃত্ববােধ আলােচনা করাে।
ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে সৌখীর মার লােটা চুরির বিস্তৃত বিবরণ দাও।
ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে কীভাবে লােটা চুরির কিনারা হল তা আলােচনা করাে।
বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে সৌখীর প্রবেশের আগে বিছানায় শুয়ে কী কী কথা ভাবছিল সৌখীর মা-‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে তা বর্ণনা করাে।
‘ডাকাতের মা’ গল্প অবলম্বনে মাদীন পেশকার এবং বাসনওয়ালার সাক্ষাৎকার নিজের ভাষায় লেখাে।
রাতবিরেতে সৌখীদের বাড়িতে ঢােকার আগে বহিরাগত ব্যক্তি দরজায় কীভাবে টোকা দিয়ে তার পরিচয় জ্ঞাপন করত তা ডাকাতের মা ছােটোগল্প অবলম্বনে লেখাে। গল্প অনুসারে ডাকাত সর্দার সৌখীর অনুচরদের পরিচয় দাও।
ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে সৌখীর জেলজীবনের পরিচয় দাও।
ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে সৌখীর দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিচয় দাও।
“মা তখনও মেঝেতে পড়ে ডুকরে কাঁদছে।”—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মায়ের ডুকরে কাদার কারণ আলােচনা করাে।
“মেয়েমানুষের আর কত আক্কেল হবে?” -বক্তার এ কথা ভাবার কারণ কী?
“দিনকালই পড়েছে অন্যরকম!” -বক্তার এ কথা বলার কারণ আলােচনা করাে।
“কী কপাল নিয়ে এসেছিল।” -বক্তার এরূপ উক্তির কারণ ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে লেখাে।
Leave a comment