১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্সের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসে চাকুরিসূত্রে থাকাকালীন গালিলিও হল্যান্ডবাসী এক ব্যক্তির এক যন্ত্র আবিষ্কারের সংবাদ শুনতে পান, যে যন্ত্রের সাহায্যে দূরের বস্তু কাছে দেখা যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি দূরবিন আবিষ্কার করেন। এই দূরবিন আবিষ্কার করার ফলেই ভেনিসের কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে সেযুগে ভেনিস ছিল সমুদ্র বাণিজ্যে উন্নত এক সমৃদ্ধশালী নগররাষ্ট্র। সমুদ্রপথে জাহাজে করে ভেনিসবাসীরা নানা দেশ থেকে যেমন জিনিসপত্র সংগ্রহ করত, তেমনি ইউরােপের নানা দেশে তা রপ্তানিও করত। তবে, মাঝে মধ্যেই ভেনিসের বাণিজ্য-জাহাজগুলিকে শত্রুরাষ্ট্রের আক্রমণের কবলে পড়তে হত। সেই আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে জরুরি ছিল শত্রুর আক্রমণের আগাম খবর পাওয়া। সেই উদ্দেশ্যে, শত্রুকে আগে থেকেই লক্ষ করার জন্য বা আগাম যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য ভেনিস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি জাহাজে একটি করে দূরবিন রাখার প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করলেন। তাই তারা গালিলিওকে দূরবিন সরবরাহের অনুরােধ জানান। দূরবিন আবিষ্কারের কারণেই ভেনিস-এর কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল।

প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর লেখা ‘গালিলিও প্রবন্ধ থেকে জানা যায় যে, দীর্ঘ ১৮ বছর পর ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে গালিলিও স্বদেশে ফিরে আসেন। গালিলিওর স্বদেশে ফিরে আসার প্রধান কারণ ছিল নিরবচ্ছিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা। তিনি ভেনিসে পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার সময় দূরবীক্ষণ আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু এইটুকুতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না, চাইছিলেন আরও গবেষণা, আরও আবিষ্কার। স্বদেশ ফ্লোরেন্সে ফেরার পরই “নিজের দূরবীণ নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন। পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময়েই তিনি দূরবিন দিয়ে ছায়াপথের স্বরূপ নির্ণয় করেছিলেন, চন্দ্রপৃষ্ঠের অসমতা লক্ষ করেছিলেন, বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর একটি উপগ্রহ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ফ্লোরেন্সে ফিরে এসে তিনি নিজের দূরবিনের সাহায্যেই সূর্যমণ্ডলের মধ্যে কলঙ্কবিন্দু লক্ষ করলেন। চাদের মতাে শুক্রগ্রহেরও উজ্জ্বলতার হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনির চারিদিকে বলয়রেখা পর্যবেক্ষণ করলেন। এ ছাড়াও নতুন করে আবিষ্কার করলেন চাঁদের পর্বতমালা এবং বৃহস্পতির উপগ্রহসমূহ। এভাবেই স্বদেশে ফিরে গালিলিও বিশ্বব্ৰত্মাণ্ডের এমন-সব সত্য আবিষ্কার করলেন, দূরবিনের সাহায্যে যে-কেউই তার সত্যতা নির্ণয় করতে পারবে। এসময়েই টলেমির ভূকেন্দ্রিক মতবাদের বিরােধী কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ তার কাছে সঠিক বলে প্রতিভাত হল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তার এই আবিষ্কারগুলি পরবর্তী মহাকাশ বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বিশেষভাবে সাহায্য করেছে।

১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে তাস্কানীর বৃদ্ধ ডিউক মারা গেলে গালিলিওর ছাত্র কসমাে যখন নতুন ডিউক হলেন, তখন গালিলিও স্বদেশে ফিরে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠলেন। সেই উদ্দেশ্য উল্লেখ করে তিনি ফ্লোরেন্সের এক বন্ধুকে যে চিঠিটি লিখেছিলেন তার সারাংশটি নিম্নরূপ-

গালিলিওর বর্তমান কর্মস্থল পাড়ুয়া ছেড়ে অন্য কোনাে শহরে গেলে নিজের কাজ করার জন্য যে তিনি আরও বেশি সময় পাবেন, তা তিনি মনে করেন না। কারণ সেখানে সংসার চালানাের জন্য তাকে বক্তৃতা দিয়েই পয়সা রােজগার করতে হবে। তা ছাড়া, একাধিক কারণে পাড়ুয়া ছাড়া অন্য কোনাে শহরে তিনি অধ্যাপনা করতেও তেমন ইচ্ছুক নন। অথচ কাজ করার জন্য অবসর পাওয়াটা তার একান্ত দরকার।

ভেনিস নগররাষ্ট্রে গণতন্ত্র আছে। সেখানকার শাসকরা যথেষ্ট মহৎ ও উদার হলেও বাঁধা গতের চাকরি ছাড়া তাদের কাছ থেকে অন্য বৃত্তি লাভের আশা একপ্রকার নেই বললেই চলে। প্রত্যক্ষ ও ব্যাবহারিক কাজ ছাড়া অন্য কোনাে গবেষণাধর্মী কাজের চাকরি এই শাসকদের কাছ থেকে তাই আশা করা যায় না। সেখানে তাই যতদিন সম্ভব গালিলিওকে বক্তৃতা ও অধ্যাপনাই চালিয়ে যেতে হবে। যদিও তিনি এই সত্যও জানেন যে, বেতন নিয়ে এভাবে তিনি যতদিন কাজ করবেন, ততদিন তিনি কাঙ্ক্ষিত অবসর ও অর্থ পাবেন না। তার কাঙ্ক্ষিত অবসর ও অর্থানুকুল্য তিনি কোনাে দেশের রাজার কাছ থেকেই কেবলমাত্র পেতে পারেন।

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে দেখা যায় যে, ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে এক হল্যান্ডবাসী ওলন্দাজ এক অভিনব যন্ত্র নির্মাণ করেন। কাচের লেন্স নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তিনি হঠাৎই একটি নলের দু-পাশে চোখ রেখে দেখেন যে, দূরের জিনিস বড়াে দেখাচ্ছে এবং দেখে মনে হচ্ছে যেন তা কাছে এগিয়ে এসেছে। তবে তাঁর তৈরি দূরবিন খুব উন্নত বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল না। তা ছাড়া সেই দূরবিনে সব কিছু উলটো দেখাত।

হল্যান্ডের নাগরিকের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে অনুপ্রাণিত হয়ে গালিলিও নিজে দূরবিন তৈরি করেন এবং তার সাহায্যে লক্ষ করেন যে, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও ভঙ্গুর যাকে চাঁদের পাহাড় বলা হয়। ছায়াপথ যে প্রকৃতপক্ষে লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের সমাবেশমাত্র, বৃহস্পতি গ্রহের চারদিকে যে চারটি উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করছে—এ দৃশ্যও তার আবিষ্কৃত দূরবিনে ধরা পড়ে। ভেনিসবাসী ধর্মভীরু পণ্ডিতরা গালিলিওর এসব পর্যবেক্ষণ এবং আবিষ্কারের কথা বিশ্বাস করতে চাইলেন না। অথচ তারা গালিলিওর শত অনুরােধেও দূরবিনে চোখ রাখতে রাজি হলেন না—পাছে দূরবিনে চোখ রাখলে তাদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়। ভেনিসের ধর্মভীরু পণ্ডিতদের এই গোঁড়ামি এবং কূপমণ্ডুক মানসিকতা লক্ষ করেই আমােদ পেয়েছিলেন যুক্তিবাদী বিজ্ঞানী গালিলিও।

“আড়কাটী মাছকে উপযুক্ত শিক্ষা দিলে কিনা তা খবর পাইনি…।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ঘটনাটির বর্ণনা দাও। আড়কাটী মাছ’-এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

“কাজেই রাতেও যাওয়া হবে না, চব্বিশ ঘণ্টা এইখানে পড়ে থাকো…।” -রাতে না গিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা পড়ে থাকার কারণ বিশ্লেষণ করাে।

সুয়েজখালে :হাঙ্গর শিকার রচনায় জাহাজের যাত্রীদের সঙ্গে মিশরীয় অধিবাসীদের যাতে কোনাে ছোঁয়াছুঁয়ি না হয়, তার জন্য কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?

হাকাহাকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালেন। আরব মিঞার কর্মতৎপরতার পরিচয় দাও।

ভারতের বাণিজ্যকে লেখক মানব-জাতির উন্নতির সম্ভবত সর্বপ্রধান কারণ বলেছেন কেন?

“এ কথা ইউরােপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না;” -কোন কথা ইউরােপীয়রা স্বীকার করতে চায় না এবং কেন?

“জাহাজের পেছনে বড়াে বড়াে হাঙ্গর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে।” -লেখকের অনুসরণে হাঙরের সেই ভেসে ভেসে বেড়ানাের দৃশ্য নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

সুয়েজখালে জাহাজ পারাপারের ব্যবস্থা বর্ণনা করাে।

ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে লেখকের মনােভাব ব্যাখ্যা করাে।

“যাঃ, টোপ খুলে গেল! হাঙ্গর পালালাে।” -টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনা অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিও-র চরিত্রের প্রতিবাদী সত্তার পরিচয় দাও।

গ্যালিলিও প্রবন্ধে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিওর আপসকামী মনােভাবের যে পরিচয় দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিওর জন্মস্থান পিসায় অতিবাহিত হওয়া তার ছেলেবেলার পরিচয় দাও।

“গণিতের অধ্যয়নবাসনাই প্রবল হয়ে উঠল।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলাে কীভাবে গালিলিওর গণিতের অধ্যয়ন- বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছিল?

প্রথম যৌবনে স্বদেশে থাকাকালীন সংসার চালানাের জন্য কীভাবে লড়াই করতে হয়েছিল গালিলিও-কে, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে ভেনিস রাষ্ট্র এবং পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গালিলিও-র আঠারাে বছরের কর্মজীবনের বিবরণ দাও।

দূরবিনের আবিষ্কার ভেনিসনিবাসী গালিলিওর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

“এখানেই শুরু হল তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞানীর জীবন।” -প্রকৃত বিজ্ঞানীর’ সেই জীবন বর্ণনা করাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গালিলিওর স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করাে।

স্বদেশে ফেরার পর দেশের ধার্মিক ও শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে কীভাবে গালিলিও সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

“আর এক কারণে তাঁর সব আবিষ্কার ও মতামত শুধু পণ্ডিত মহলে আবদ্ধ রইল না।” -কারণটি বিস্তৃতভাবে পর্যালােচনা করাে।

গালিলিওর শেষ ন’বছরের জীবনকথা গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

“তখনকার দিনে ধার্মিক পণ্ডিতেরা এসব বিশ্বাস করতে চাইলেন না।” -ধার্মিক পণ্ডিতরা কী বিশ্বাস করতে চাইলেন না এবং কেন?

“প্রথমে Inquisition রায় দিলেন যে,” -কী রায় দিয়েছিলেন তা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরিচয় দাও।

গালিলিওর পিতৃ-পরিচয় লিপিবদ্ধ করে শিক্ষার্থী গালিলিওর তার্কিক মনােভাবের পরিচয় দাও।