আমাদের দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষালয়গুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা মােটামুটিভাবে 10 থেকে 17 বছর বয়স অবধি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করে থাকে। মাধ্যমিক শিক্ষালয়কে সাধারণত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়—
-
শিক্ষার্থীদের দায়িত্বগ্রহণের ভিত্তিতে বিভাগ;
-
শিক্ষার্থীদের লিঙ্গভিত্তিক বিভাগ;
-
সময়কালভিত্তিক বিভাগ;
-
প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমােদনভিত্তিক বিভাগ এবং
-
অন্যান্য বিভাগ।
(১) শিক্ষার্থীদের দায়িত্বগ্রহণের ভিত্তিতে বিভাগ: এই ধরনের বিদ্যালয়কে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা—
-
আবাসিক বিদ্যালয়: এইসব বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীকে বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বাসস্থানে থাকতে হয়। তাদের থাকা, খাওয়া, পঠনপাঠন সবই বিদ্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়।
(২) লিঙ্গভিত্তিক বিভাগ: মাধ্যমিক স্তরে অনেক বিদ্যালয় আছে যা শুধু ছেলেদের জন্য এবং অনেক বিদ্যালয় আছে যা শুধু মেয়েদের জন্য। আবার কিছু সহশিক্ষা বিদ্যালয়ও আছে যেগুলি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্য।
-
পুরুষ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়: এইসব বিদ্যালয়ে কেবলমাত্র পুরুষ শিক্ষার্থীরাই পড়াশােনা করে। মেয়েদের ভরতি করা হয় না।
(৩) সময়কালভিত্তিক বিভাগ: সময়কালকে ভিত্তি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—
-
নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়: সাধারণত পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এ ধরনের বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করে। একে জুনিয়র বিদ্যালয়ও বলে।
-
উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়: এ ধরনের বিদ্যালয়গুলিতে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানাে হয়। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সাধারণ পাঠক্রম পড়ানাে হয়। পরবর্তী দুবছর সাধারণ ও বৃত্তিমূলক—এই দুই ধরনের পাঠক্রম অনুসারে এখানে পড়ানাে হয়ে থাকে।
(৪) প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমােদনভিত্তিক: মাধ্যমিক বিদ্যালয় কোন্ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমােদিত তার ভিত্তিতে শ্রেণিভাগ করা যেতে পারে। যেমন—Central Board of Secondary Education, Indian Council of Secondary Education এবং বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ইত্যাদি।
(৫) অন্যান্য বিভাগ: উপরিউক্ত বিদ্যালয়গুলি ছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেখতে পাওয়া যায়—
-
পাবলিক স্কুল: ইংল্যান্ডের পাবলিক স্কুলের অনুকরণে এই বিদ্যালয় গঠিত। এখানে জ্ঞানের বিকাশ ছাড়াও অন্য গুণাবলির বিকাশ ঘটানাে হয়ে থাকে। এই ধরনের বিদ্যালয় যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ।
-
সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল: এই ধরনের বিদ্যালয়গুলিতে সরকার আর্থিক সাহায্য করে। তবে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকে বিদ্যালয়ের নির্বাচিত পরিচালক সমিতি।
-
বেসরকারি স্কুল: এই ধরনের বিদ্যালয়গুলি সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নেয় না। বিদ্যালয়ে পড়াশােনার সব খরচ ছাত্রছাত্রীদের বহন করতে হয়।
-
ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত স্কুল: বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিজেদের উদ্যোগে গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। এখানে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়।
আমাদের দেশে উপরিউক্ত নানা ধরনের মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেখা যায়। বৈশিষ্ট্য ও গুণগত দিক থেকে এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।
Leave a comment