ধারণা গঠন দু-ভাবে হতে পারে- বিনা চেষ্টায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে, প্রচেষ্টার সাহায্যে। লৌকিক ধারণাগুলি বিনা চেষ্টায় গঠিত হয়। বিজ্ঞানসম্মত ধারণাগুলি প্রচেষ্টার মাধ্যমেই গঠিত হয়। এই ধরনের ধারণা গঠন সাতটি স্তর বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এই সাতটি স্তর হল一
(১) পর্যবেক্ষণ: ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম সমগােত্রীয় বিভিন্ন বস্তুকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেমন, ফুল সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে হলে নানা প্রকারের ফুল পর্যবেক্ষণ করতে হয়।
(২) বিশ্লেষণ: পর্যবেক্ষণের পর বিভিন্ন বস্তুর ধর্ম, গুণ, জাতি প্রভৃতি বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়। যেমন, ফুলের বিভিন্ন প্রকার বর্ণ, গন্ধ, আকার প্রভৃতি বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়।
(৩) তুলনা: বিশ্লেষণের পর গুণ বা ধর্মের মধ্যে কী কী মিল রয়েছে এবং অমিল রয়েছে তা নির্ণয় করা হয়। যেমন, বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি ফুলের মধ্যে তুলনা করে তাদের মধ্যে ধর্ম বা গুণের ভিত্তিতে সাদৃশ্য খুঁজে বের করা হয়।
(৪) পৃথককরণ: যেসব ধর্ম বা গুণের ভিত্তিতে বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে এই প্রক্রিয়ার দ্বারা সেগুলিকে মনে মনে আলাদা করে নেওয়া হয় এবং সেগুলির প্রতি মনােনিবেশ করা হয়।
(৫) সামান্যীকরণ: যেসব গুণ বা ধর্মের ভিত্তিতে পৃথককরণ হয়েছিল, এই স্তরে সেই গুণ বা ধর্মের ভিত্তিতে সাধারণ সূত্র স্থির করা হয়।
(৬) শ্রেণিকরণ: শিশু যখন ন্যূনতম দুটি পরিস্থিতিতে বস্তু বা ঘটনাকে সমতুল্য বলে স্থির করবে তখনই শিশু শ্রেণিকরণ স্তরের সবচেয়ে নিম্নস্তরে উপনীত হবে, যদিও সে সমতুল্যতার কারণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নাও হতে পারে।
(৭) নামকরণ: ধারণা গঠনের শেষ স্তর হল নামকরণ। অনেকে একে প্রথাগত স্তর বলেন। এক্ষেত্রে বস্তুটিকে একটি বিশেষ নামে চিহ্নিত করা হয়। এই নামকরণ ধারণার গুণাবলি এবং সমাজ-সমর্থিত হবে। কোনগুলি এই নামের অন্তর্ভুক্ত হবে বা হবে না শিশু তার উল্লেখ করতে পারবে।
Leave a comment