প্রকৃত চাষের জন্য ব্যবহৃত জমি এবং মােট চাষের জন্য ব্যবহৃত যে জমি তার অনুপাতের শতকরা হারকে শস্য নিবিড়তা বা শস্য প্রগাঢ়তা (Intensity of Cropping) বলে। সাধারণভাবে শস্য নিবিড়তা বলতে বােঝায় প্রকৃত চাষের জমির মধ্যে মােট কতটা পরিমাণ জমিতে চাষ করা হচ্ছে। শস্য নিবিড়তা নির্ণয়ের সময় মােট চাষের জমি এবং প্রকৃত কতটা পরিমাণ জমিতে চাষ করা হয় যে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়ােজন।

শস্য উৎপাদনের প্রকৃতি বোঝা যায় : শস্য নিবিড়তার মানচিত্র থেকে একটি জমির শস্য উৎপাদনের প্রকৃতি কীরূপ হবে তা বােঝা যায়।

জমির প্রকৃতি বোঝা যায় : জমির প্রকৃতি এক-ফসলি, দো-ফসলি না বহু-ফসলি তা শস্য নিবিড়তা থেকে বােঝা যায়।

ভূমি ব্যবহারের সুস্পষ্ট ধারণা লাভ : ভূমি ব্যবহারের সঠিক এবং সুস্পষ্ট ধারণা শস্য নিবিড়তার মাধ্যমে পাওয়া যায়।

পরিকল্পনা রূপায়ণে কাজে লাগে : শস্য নিবিড়তা যেসব অঞ্চলে কম, যেসব অঞ্চলের উপযুক্ত পরিকল্পনা রূপায়ণে শস্য নিবিড়তার হিসাব সাহায্য করে।

গাণিতিক বিশ্লেষণে সাহায্য করে : শস্য নিবিড়তা কৃষির ধরন ও প্রকৃতির বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

পতিত জমির উন্নতিসাধনে সহায়ক : কোন্ অঞ্চলে শস্য নিবিড়তা কী প্রকৃতির সেকথা মাথায় রেখে ওই সমস্ত অঞ্চলে জলসেচের প্রসার, আধুনিক যন্ত্রপাতি, উন্নত বীজ ও কীটনাশকের প্রয়ােগের মাধ্যমে পতিত জমিকে আবাদি জমিতে পরিণত করা যায়।

1999 – 2000 খ্রিস্টাব্দে ভারতে মােট চাষের জমি ছিল 189.7 মিলিয়ন হেক্টর এবং প্রকৃত চাষের জমি ছিল 141.2 মিলিয়ন হেক্টর।

উচ্চ শস্য নিবিড়তা (>150%) : পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ (উত্তরাখণ্ডসহ), পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্য উচ্চ শস্য নিবিড়তার অন্তর্ভুক্ত।

মধ্যম শস্য নিবিড়তা (135%-150%) : বিহার (ঝাড়খণ্ডসহ), ওডিশা, অসম, মণিপুর এবং জম্মু ও কাশ্মীর মধ্যম শস্য নিবিড়তার অন্তর্ভুক্ত।

নিম্ন শস্য নিবিড়তা (<135%) : অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অপ্রদেশ (তেলেঙ্গানাসহ), তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, কেরল, গােয়া, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ (ছত্তিশগড়সহ) ও রাজস্থান নিম্ন শস্য নিবিড়তার অন্তর্ভুক্ত রাজ্য।